একেবারে সাদা স্লেটের মতো ছিলাম

0

নন্দিত অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। বাংলাদেশের অনেক জনপ্রিয় সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি। এর আগে বাংলাদেশ-ভারত যৌথ প্রযোজনার ‘স্পর্শ’ ছবিতে অভিনয় করতে এদেশে এসেছিলেন এই তারকা অভিনেত্রী। সম্প্রতি ‘সুচিত্রা সেন আন্তর্জাতিক বাংলা চলচ্চিত্র উৎসব’র এক সংবাদ সম্মেলনে যোগ দিতে ঢাকায় ফের আসেন তিনি। সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তাঁর সঙ্গে কথোপকথন-

 

বাংলাদেশ আমার কাছে এক আত্মার আত্মীয়। এটা তো আমারই দেশ। আমি তো এটাকে আলাদা করে দেখি না। সে জন্য বোধ হয় এখানকার মানুষ আমাকে এত ভালোবাসে। কারণ, আমার বাবার দেশ বিক্রমপুর, আর মায়ের দেশ মানিকগঞ্জ। ফলে আমার একটা ভিত আছে এখানে। আমি যখন একটা ছবি করতে এসেছিলাম অনেক বছর আগে, তখন মায়ের জন্মস্থানে গিয়েছিলাম। তা দেখে এসেছিলাম। আর বাংলাদেশের ছবিতে আমার ২৭ বছরের পথচলা। বহু ছবিতে অভিনয় করেছি। এতবার এসেছি, এত ভালোবাসা পেয়েছি, বোঝাতে পারব না।

নীরবের বিপরীতে ‘স্পর্শ’র শুটিংয়ে এদেশে এসেছিলেন। এবার আসার উপলক্ষ নিয়ে একটু জানতে চাই?

আসলে যতবার ঢাকায় আসি ততবার মনে হয় নিজের শহরে এসেছি। এবার এসেছি শুটিং করতে নয়, এক সংবাদ সম্মেলনে অংশ নিতে। সঙ্গে ঢাকার প্রিয় কিছু মানুষের সঙ্গে দেখা করতে। তবে ‘সুচিত্রা সেন আন্তর্জাতিক বাংলা চলচ্চিত্র উৎসব’ই মূল উপলক্ষ। ফ্যাশন ডিজাইনার ও চলচ্চিত্র প্রযোজক পিয়াল হোসাইনের আমন্ত্রণেই আসা। সুচিত্রা সেন স্মরণে ২০-২১ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রের জ্যামাইকা পারফর্মিং আর্টস সেন্টারে অনুষ্ঠিত হবে চলচ্চিত্র উৎসব।

সম্প্রতি বন্ধু ফেরদৌস রাজনীতিতে যোগ দিতে পরামর্শ দিলেও অনাগ্রহ দেখিয়েছেন, কেন?

রাজনীতি নিয়ে খুব একটা ভাবি না। কারণ এটা আমার সঙ্গে যায় না। আমি একসঙ্গে দুই কাজ করতে পারি না। রাজনীতি করতে হলে অভিনয় ছাড়তে হবে। আমি তা পারব না। অভিনয় নিয়েই থাকতে চাই।

এই যে ব্যস্ততা, কখনো ক্লান্ত লাগে না?

না। এখনো এভাবে ছুটে বেড়ালেও ক্লান্তি লাগে না। কারণ, প্রচন্ড পরিশ্রম করে আজকে এই জায়গায় এসেছি। আগের মতোই এখনো পরিশ্রম করছি। ভবিষ্যতেও তা করব। আমার জীবনে যেমন প্রাপ্তি প্রচুর, পাশাপাশি অনেক প্রতিবন্ধকতাও এসেছে। প্রচুর স্বার্থত্যাগ করতে হয়েছে। শুধু সিনেমাকে ভালোবেসেই তা করেছি। আমি মনে করি, সাফল্য আসে পরিশ্রমের মধ্য দিয়েই। সাফল্য যদি পরিশ্রমের মাধ্যমে আসে, তাহলে তার স্বাদটা কিন্তু দীর্ঘস্থায়ী হয়।

ঢাকায় এলে কার বাড়িতে থাকতে পছন্দ?

আসলে বাংলাদেশে আসতে ভালো লাগে। যেহেতু অনেকের সঙ্গেই ব্যক্তিগত এবং বন্ধুত্বর সম্পর্ক আছে তাই অনেকের বাড়িতেই যাওয়া হয়। তবে বিশেষ করে ফেরদৌস, আলমগীর এবং রুনা লায়লার বাড়িতে বেশি যাওয়া হয়।

এদেশের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির কী পরিবর্তন চোখে পড়েছে?

যখন আমি ক্যারিয়ার শুরু করি তখন অনেক বেশি কমার্শিয়াল মুভি হতো। তবে এখন অল্টারনেটিভ কনটেন্ট বা সিনেমাও হচ্ছে, যা খুব জনপ্রিয় সিনেমার জায়গায় যাচ্ছে। তা আমাদের ইন্ডাস্ট্রির জন্য ভালো দিক। তাছাড়া এখন মানুষ এত বেশি কনটেন্ট চারদিকে দেখছে, এত ধরনের ওটিটি প্ল্যাটফরম- যেখানে খুব সহজে কনটেন্ট দেখা যাচ্ছে।

অভিনয়ে আসার কোনো পরিকল্পনাই ছিল না আপনার, সত্যি?

হুমম। আমি কখনো ভাবিনি আমি অভিনেত্রী হব। চেয়েছিলাম শিক্ষক হব। যখন অভিনয় জগতে এলাম, আস্তে আস্তে নিজেই নিজেকে শেখাতে শুরু করলাম। যখন ইন্ডাস্ট্রিতে আসি, একেবারে সাদা সেøটের মতো ছিলাম। কোনো অভিজ্ঞতা ছিল না। আর সম্ভবত সেজন্যই নতুন করে অনেক কিছু লিখতে পেরেছি, শিখতে পেরেছি। সেই জায়গাটাকে আমি সবসময় সম্মান করি।

প্রত্যেক ছবি, প্রত্যেক চরিত্রই কি নতুন চ্যালেঞ্জ?

রোজ নতুন কিছু তৈরি হয়। আমি চাই আমার প্রতিটা চরিত্র আমায় চ্যালেঞ্জ করুক। যদি খুব বেশি কমফোর্ট জোনের মধ্যে কাজ করতে হয়, মনে হয় সেরাটা দিতে পারছি না। সিনেমা মানে আমার কাছে একটা ঝড়।

আপনার বিপরীতে অভিনয় করা এদেশের কোন নায়ক সবচেয়ে প্রিয়?

সবার সঙ্গে আমার ভালো সম্পর্ক। কাকে রেখে কাকে বলব! আমি যাদের সঙ্গে কাজ করেছি, তারা সবাই আমার খুব ফেবারিট।
 

বলিউডে নতুন কাজের খবর আছে?

অনেক ছবি রেডি। রিলিজ হবে।

ইন্ডাস্ট্রিতে দীর্ঘদিন টিকে থাকার রহস্য কী?

যদি লক্ষ্যে স্থির থাকি, ভালো কাজ করব। এত বছর তো ভালো কাজ ছাড়া টিকে থাকা যায় না। ইন্ডাস্ট্রি খুবই রুথলেস জায়গা। এখানে নিজের জায়গা তৈরি করা মানে নিজের যুদ্ধে জিতে জায়গা তৈরি করা।
 

শাকিব খানের সঙ্গে কাজ হবে কি?

অনেক নায়কের সঙ্গে তো কাজ হলো, এবার শাকিবের সঙ্গে কাজ করতে চাই।

 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here