যমুনার চরে পিয়াজের বাম্পার ফলনের স্বপ্ন কৃষকের

0

বগুড়ার সারিয়াকান্দি, সোনাতলা ও ধুনট উপজেলায় যমুনায় জেগে ওঠা চরে পিয়াজ চাষ করে ভালো ফলনের স্বপ্ন দেখছেন চাষিরা। উর্বর পলিমাটিযুক্ত জমিতে পিয়াজের বাম্পার ফলন হবে এমন স্বপ্ন বুনছেন চরাঞ্চলের কৃষকরা। যমুনার বিস্তীর্ণ চর এলাকায় এখন দেখা মিলছে পিয়াজের আবাদ। কৃষকরা বলছেন, আগে চরাঞ্চলে পিয়াজের আবাদ কম হতো। কিন্তু এখন বেড়ে কয়েকগুণ হয়েছে। তবে এবারে পিয়াজ চাষে খরচ হয়েছে আগের চেয়ে অনেক বেশী। 

বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে এবার বগুড়া জেলায় পিয়াজ উৎপাদনে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ হাজার ৭৭৫ হেক্টর জমিতে। আর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭৫৪ মেট্রিকটন। এ পর্যন্ত জেলায় পিয়াজ রোপন করা হয়েছে ৩ হাজার ২৩৫ হেক্টর জমিতে। চারা রোপণ চলমান রয়েছে। আবহাওয়া অনুকূল থাকলে লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করা সম্ভব হবে। এর আগে জেলায় ৮০৫ হেক্টর জমি থেকে আগাম জাতের পিয়াজ উত্তোলন হয়েছে। 

সারিয়াকান্দি উপজেলার কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আগে চরের জমি পড়ে থাকত। তেমন কোনো চাষাবাদ হতো না। এখন সেখানে বিভিন্ন ধরনের ফসল ফলছে। চলাঞ্চলে শতকরা প্রায় ২০ থেকে ২৫ ভাগ জমিতে পিয়াজের আবাদ হয়ে থাকে। জেলার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে যাচ্ছে চরাঞ্চলের পিয়াজ। প্রতি বছরই ভাঙনের কারণে তিন উপজেলার বিভিন্ন স্থানে চর জেগে উঠে। একসময় চরের জমি পড়ে থাকলেও এখন সেখানে সবজিসহ বিভিন্ন ফসল চাষাবাদ হচ্ছে। 

সারিয়াকান্দি চরঘাগুয়া এলাকার কৃষক মইফুল ইসলাম জানান, আগে সারা বছর যমুনা নদীতে পানিপ্রবাহ থাকত। এখন শীত মৌসুমে নদীতে পানি থাকে না। বিশাল এলাকায় ধু ধু চর পড়েছে। তীরবর্তী ভূমিহীন ও প্রান্তিক চাষিরা এ চরে চাষাবাদ করেন। সেখানে পিয়াজসহ নানা জাতের ফসল চাষ করেন তারা।

তিনি আরও জানান, ভরা বর্ষায় এ চরে অনেক পলি জমে। সেই পলি পিয়াজ ক্ষেতে সার হিসেবে কাজ দেয়। পিয়াজ চাষে সার বেশি লাগে না। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ভালো ফলনের আশাও করছেন তিনি। তিনি এবার তিন বিঘা জমিতে দেশী জাতের পেঁয়াজের আবাদ করেছেন। 

বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. মতলুবর রহমান জানান, চলতি মৌসুমে এবার বগুড়া জেলায় পিয়াজ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ হাজার ৭৭৫ হেক্টর জমিতে। আর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭৫৪ মেট্রিকটন। এ পর্যন্ত জেলায় পিয়াজ রোপন করা হয়েছে ৩ হাজার ২৩৫ হেক্টর জমিতে। চারা রোপণ চলমান রয়েছে। আবহাওয়া অনুকূল থাকলে লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করা সম্ভব হবে। জেলায় স্থানীয়ভাবে ৬০ থেকে ৬৫ ভাগ পিয়াজের চাহিদা পূরুণ হয়ে থাকে। বাকিটা আমদানির উপর নির্ভর করে। 

তিনি আরও জানান, বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার চালুয়াবাড়ী, হাটবাড়ী, ফাজিলপুর, তেলীগাড়ী, গওলাডাঙ্গা, মানিকদাইড়, আউচারপাড়া, কালাইহাটা, সবুজের পাড়া, চকরথিনাথ, দিঘাপাড়া, করনজাপাড়া, বনরপাড়া, কাজলা, ইউনিয়ন পুরোটায় এখন চর। জেগে ওঠা এসব চরে শীতকালীন সবজির পাশাপাশি প্রতি মৌসুমে চলছে ধান, মরিচ ও পাটের আবাদ। গত বছরের তুলনায় এ বছর পিয়াজ চাষের লক্ষ্যমাত্রা বেড়েছে। প্রত্যাশিত উৎপাদন পেলে স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের অন্যান্য এলাকাতেও এই পিয়াজ সরবরাহ করা সম্ভব হবে। 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here