মায়ের সাথে সেলাইয়ের কাজ করেও এসএসসিতে এ প্লাস সুমাইয়ার

0

অদম্য ইচ্ছার কাছে দারিদ্র্যতা যে কখনো বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে না তা আবারো দেখিয়ে দিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার মেধাবী শিক্ষার্থী সুমাইয়া আক্তার। অভাব অনটনের সংসারে মায়ের সাথে দর্জির কাজ, কাঁথা সেলাই ও প্রাইভেট পড়ানোর ফাঁকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পেয়েছেন ‘এ প্লাস’। তার এ সফলতায় গর্বিত এলাকাবাসীও। তবে আর্থিক অনটনের কারণে সুমাইয়ার উচ্চতর শিক্ষা নিয়ে দেখা দিয়েছে সংশয়। 

সরজমিন গিয়ে জানা যায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর পৌর শহরের সুহাতা এলাকার জীবন মিয়া ও পারভিন আক্তারের বড় মেয়ে সুমাইয়া আক্তার। তিনি এ বছর উপজেলার ভোলাচং হাই স্কুল থেকে মানবিক শাখায় এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে এ প্লাস পেয়েছেন। তবে তার এ সফলতা আর দশজনের মতো মোটেই সহজ ছিলো না। অভাবের সংসারে অটোচালক বাবার আয় যথেষ্ট না হওয়ায় মা কাঁথা সেলাই করে সংসারের ঘানি টানেন। পরিবারের বড় সন্তান হওয়ায় দায়িত্ব এড়িয়ে যেতে পারেননি সুমাইয়া। তাইতো মায়ের পাশে দাঁড়াতে শুরু করেন দর্জি ও কাঁথা সেলাইয়ের কাজ। আবার টিউশনিও করতেন। এমন কঠিন পরিস্থিতির মাঝেও পড়ালেখা থেকে দূরে সরে যাননি সুমাইয়া। নিয়মিত স্কুলে আসা-যাওয়ার পাশাপাশি মায়ের সাথে প্রতিদিন কাঁথা সেলাই ও দর্জির কাজ করতেন। 

সুমাইয়া জানান, সকলের সহযোগিতায় ভালো ফলাফল নিয়ে মাধ্যমিকের গণ্ডে পার হয়েছি। আর এর পেছনে আমার চাচা স্বপন মিয়া ও আমার ৩ জন শিক্ষক যারা আমাকে বিনামূল্যে প্রাইভেট পড়িয়েছেন তাদের অবদান রয়েছে। তবে অভাবের সংসার হওয়ায় সামনের শিক্ষা জীবন কিভাবে চালিয়ে নেই তা নিয়ে চিন্তায় আছি। 

তিনি আরো বলেন, আমি একজন ভালো মানুষ হওয়ার পাশাপাশি শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন দেখি। যাতে ভবিষ্যতে আমার মত যারা আর্থিক সংকেট শিক্ষা জীবন চালিয়ে নিতে কষ্টে থাকবে তাদের পাশে দাঁড়াতে পারি।
  
এ বিষয়ে নবীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. একরামুল সিদ্দিক বলেন, সুমাইয়ার ভবিষ্যত শিক্ষা জীবন আরো মসৃন করতে উপজেলা প্রশাসন পাশে থাকবে। শিগগিরই তার পরিবারের সাথে দেখা করে সংগ্রামী এই শিক্ষার্থীর উচ্চ শিক্ষাসহ পড়ালেখা চালিয়ে নিতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব রকমের সহযোগিতার ব্যবস্থা করা হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here