মাত্র ৩০ মিনিটে ৭ ইরানি স্থাপনার ৮৫ লক্ষ্যবস্তু গুঁড়িয়ে দেওয়ার দাবি হোয়াইট হাউসের

0

জর্ডানে সিরিয়া সীমান্তবর্তী মার্কিন ঘাঁটিতে ড্রোন হামলার প্রতিশোধ নিতে শুরু করেছে আমেরিকা। এর অংশ হিসেবে শুক্রবার ইরাক ও সিরিয়ায় বেশ কয়েকটি ইরানি লক্ষ্যবস্তুতে বিমান হামলা চালয়েছে মার্কিন বাহিনী।

মার্কিন প্রেসিডেন্টের সদর দফতর হোয়াইট হাউস বলেছে, শুক্রবার ইরাক ও সিরিয়ায় ইরানের বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালানো হয়েছে। এর মধ্যে সিরিয়ায় চারটি ও ইরাকে তিনটি ইরানি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় ৮৫টি লক্ষ্যবস্তু ছিল। এতে সময় লেগেছে মাত্র ৩০ মিনিট। আর এই হামলা স্পষ্টতই সফল।

এই হামলা গত রবিবার সিরিয়াসীমান্তবর্তী জর্ডানে মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে ড্রোন হামলায় প্রতিক্রিয়া হিসেবে দেখা হচ্ছে। সামরিক ঘাঁটিতে ওই হামলায় তিন মার্কিন সেনা নিহত ও ৪০ জনের বেশি আহত হয়।

জর্ডানের ঘাঁটিতে ওই হামলার জন্য ইরান-সমর্থিত সশস্ত্র গ্রুপকে দায়ী করে আসছিল ওয়াশিংটন। এর জবাবে সিরিয়া ও ইরাকে অবস্থিত ইরানের বিভিন্ন স্থাপনায় ধারাবাহিকভাবে হামলা চালানোর পরিকল্পনায় অনুমোদন দেয় মার্কিন কর্তৃপক্ষ। 

এর আগে একাধিক মার্কিন কর্মকর্তা বলেছিলেন, বেশ কয়েক দিন ধরে এই হামলা চালতে থাকবে। বিষয়টি আবহাওয়া পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করবে।

এদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এক বিবৃতিতে বলেছেন, “আমাদের প্রতিক্রিয়া আজ থেকে শুরু হয়েছে। এটি (প্রতিক্রিয়া) আমাদের পছন্দের সময়ে এবং জায়গায় চলতে থাকবে।”

তিনি আরও বলেছেন, “যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্য বা বিশ্বের অন্য কোথাও সংঘাত চায় না। তবে যারা আমাদের ক্ষতি করতে চায় তাদের সবাইকে এটি জানাতে হবে: আপনি যদি একজন আমেরিকানকেও ক্ষতি করেন তবে আমরা জবাব দিব।”

গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জর্ডানের ঘটনায় উত্তেজনা চরমভাবে বৃদ্ধির পেলেও ওয়াশিংটন এবং তেহরান উভয়ই সর্বাত্মক যুদ্ধ এড়াতে চেয়েছে। আর তাই নিজেদের ওপর আরও হামলা এড়াতে পাল্টা হামলা চালানোর সময় তেহরানের সাথে সরাসরি সংঘর্ষ এড়াতে ইরানের ভূখণ্ডে আঘাত করেনি যুক্তরাষ্ট্র।

মার্কিন সামরিক বাহিনীর সেন্ট্রাল কমান্ড (সেন্টকম) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, হামলায় ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পসের কুদস ফোর্স এবং সেইসাথে তাদের ‘সংশ্লিষ্ট মিলিশিয়া গোষ্ঠীকে’ লক্ষ্য করে আমেরিকান বাহিনী ‘৮৫টিরও বেশি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা করেছে। এই হামলায় বহু যুদ্ধবিমান অংশ নিয়েছে, যার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র থেকে উড়ে আসা দূরপাল্লার বোমারু বিমানও রয়েছে’।

সেন্টকম বলেছে, “বিমান হামলায় ১২৫টিরও বেশি নির্ভুল অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে।”

ইরানি বাহিনী ও তাদের সমর্থিত মিলিশিয়াদের যারা মার্কিন বাহিনীর ওপর হামলায় সহায়তা করেছিল তাদের কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টার এবং গোয়েন্দা কেন্দ্রের পাশাপাশি রকেট, মিসাইল এবং ড্রোন স্টোরেজ অবকাঠামোতেও হামলা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সেন্টকম।

এদিকে সিরিয়ার মানবাধিকার পর্যবেক্ষণকারী ব্রিটেন-ভিত্তিক সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে, সিরিয়ার পূর্বাঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় ‘অন্তত ১৮ জন ইরানপন্থী যোদ্ধা’ নিহত হয়েছে।

পর্যবেক্ষণকারী এই সংস্থাটি জানায়, দেইর এজর শহর থেকে ৬২ মাইল (১০০ কিলোমিটার) ইরাক সীমান্তের কাছে আলবু কামালের কাছ পর্যন্ত বিস্তৃত পূর্ব সিরিয়ার বিশাল অংশে চলমান অভিযানে অস্ত্রের ডিপোসহ ইরানপন্থী গোষ্ঠীগুলোর আবাসস্থল হিসেবে ব্যবহৃত অন্তত ২৬টি গুরুত্বপূর্ণ স্থান ধ্বংস করা হয়েছে। সূত্র: ইউএসএ টুডে, ব্লুমবার্গ, সিএনএন, এনবিসি, দ্য গার্ডিয়ান

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here