ভার্জিনিয়া স্টেট অ্যাসেম্বলির সম্মাননা পেল ‘ডব্লিউইউএসটি’

0

যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়াস্থ’ ‘ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি’ (ডব্লিউইউএসটি)-কে গতানুগতিক শিক্ষার পাশাপাশি কারিগরি শিক্ষা প্রদানের পন্থা অবলম্বন করা তথা স্টেটের শিক্ষা-সেবায় অনন্য ভূমিকা পালনের জন্যে স্টেট অ্যাসেম্বলিতে বিশেষ সম্মাননা জানানো হয়। আর এর মধ্য দিয়েই ২৬ ফেব্রুয়ারি যুক্ত হল ডব্লিউইউএসটি’র পালকে ভার্জিনিয়া স্টেট অ্যাসেম্বলির বিশেষ স্বীকৃতি ও সম্মাননা। 

উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রে এটিই প্রথম ভার্সিটি যেটির মালিক এবং চ্যান্সেলর হচ্ছেন বাংলাদেশি-আমেরিকান আইটি ও শিক্ষা উদ্যোক্তা ইঞ্জিনিয়ার আবু বকর হানিপ। 

ডব্লিউইউএসটি-তে গতানুগতিক শিক্ষার পাশাপাশি কারিগরি শিক্ষা প্রদান করা হয় সর্বোচ্চ ডিগ্রি প্রদানের সময়েই। আর এজন্য এখানকার শিক্ষার্থীরা গ্র্যাজুয়েশনের পরই উচ্চ বেতনের চাকরিতে যোগদানে সক্ষম হচ্ছেন।  অর্থাৎ তাদেরকে এন্ট্রি লেভেলে যোগদান করতে হয় না। সরাসরি সিনিয়রিটি পেয়ে যাচ্ছেন। এ বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী সংলগ্ন ভার্জিনিয়া স্টেট পার্লামেন্টের বিশেষ প্রশংসা পেল। স্টেট গভর্নর (রিপাবলিকান) গ্লেন ইয়ংকিন ভার্জিনিয়ার শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেন। নতুন নতুন প্রোগ্রামের মাধ্যমে ইন্ডাস্ট্রিতে কিভাবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ভূমিকা রাখছে তা উল্লেখ করেন তিনি।

ভার্জিনিয়ার রাজধানী রিচমন্ডে পার্লামেন্ট ভবনে ফেয়ারফ্যাক্স কাউন্টির ডিস্ট্রিক্ট সেভেনের ডেমোক্র্যাট ডেলিগেট ক্যারেন কিইস গামাররা তার উপস্থাপনায় তুলে আনেন এই বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রসঙ্গ। বলেন, চেয়ারম্যান ও চ্যান্সেলর ইঞ্জিনিয়ার আবু বকর হানিপ ও প্রেসিডেন্ট ড. হাসান কারাবার্কের নেতৃত্বে ডব্লিউইউএসটি’র অগ্রসরতার কথা। যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চ শিক্ষার বিস্তার এবং ভবিষ্যতের জন্য আশা জাগানিয়া অবদান রাখার জন্য সম্মাননার প্রস্তাব উপস্থাপন করেন ক্যারেন কিইস গামাররা। তার উপস্থাপনার পরই স্পিকার ডন স্কটের নেতৃত্বে ১শ ডেলিগেটস ও গ্যালারিতে উপস্থিত সকল অতিথি করতালির মাধ্যমে সম্মান জানান ডব্লিউইউএসটি-কে। এ সময় ভিআইপি গ্যালারিতে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর ইঞ্জিনিয়ার আবু বকর হানিপ ও প্রেসিডেন্ট ড. হাসান কারাবার্কের নেতৃত্বে ১৩ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল। তাদেরকে সকলে অভিবাদন জানান।

এ প্রতিনিধি দলে অন্যদের মধ্যে ছিলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএফও ফারহানা হানিপ, আবু বকর হানিপ ও ফারহানা হানিপের জ্যেষ্ঠ কন্যা সাইবার সিকিউরিটির শিক্ষার্থী নাফিসা নওশিন, স্কুল অব বিজনেসের পরিচালক অধ্যাপক ড. মার্ক রবিনসন, স্কুল অব বিজনেস ও জেনারেল এডুকেশন ফ্যাকাল্টি প্রফেসর সালমান এলবাদর, জেনারেল এডুকেশন অ্যান্ড সেন্টার ফর স্টুডেন্ট সাকসেস- এর অ্যাসিসট্যান্ট ডিরেক্টর ড. হুয়ান লি, বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং ডিরেক্টর হোজে উর্তেগা, স্টুডেন্ট সাকসেস ও ক্যারিয়ার সার্ভিস ম্যানেজার র‌্যাচেল রোজ, ক্যারিয়ার সার্ভিস ও আইটি ম্যানেজার অমিত গুপ্ত, স্টুডেন্ট গভর্মেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট সেলিন ইগিত এবং ইনফরমেশন টেকনোলজির মাস্টার্সের শিক্ষার্থী মো. নাঈম হাসান।

অ্যাসেম্বলি হলে এই সম্মাননা অনুষ্ঠান শেষে ভার্জিনিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল জেসন মিয়ারেসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ডব্লিউইউএসটি প্রতিনিধি দল। কমনওয়েলথ অব ভার্জিনিয়ার বারবারা জোনস বিল্ডিংয়ে এই সাক্ষাতের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হন অ্যাটর্নি জেনারেল। ডব্লিউইউএসটি’র পক্ষ থেকে রিপাবলিকান এই অ্যাটর্নি জেনারেলের হাতে স্যুভেনির তুলে দেওয়া হয়। 

এদিকে, এশিয়ান-আমেরিকানদের নিয়ে বহু বছর ধরে সফলতার সাথে ভার্জিনিয়ার রিচমন্ডে কর্মরত চারটি সংগঠনের সম্মিলিত আয়োজনে এবং এশিয়ান আমেরিকান সোসাইটি অব ভার্জিনিয়ার ব্যানারে একটি ‘মিট অ্যান্ড গ্রিট’ অনুষ্ঠান ছিল একইদিন সন্ধ্যায়। সেখানে প্রধান অতিথি ছিলেন ভার্জিনিয়ার গভর্নর (রিপাবলিকান) গ্লেন ইয়ংকিন। বেশ কয়েকজন সিনেটর ও হাউজ অব ডেলিগেটস এতে উপস্থিত ছিলেন। যেখানে আমন্ত্রণ জানানো হয় ডব্লিউইউএসটি’র প্রতিনিধি দলকে। স্টেট গভর্নরসহ নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা এ সময়েও ডব্লিউইউএসটি’র প্রশংসা করেন। এই স্টেটে শিক্ষা সেবায় অনন্য ভূমিকা রাখায় ইঞ্জিনিয়ার আবু বকর হানিপ ও প্রেসিডেন্ট ড. হাসান কারাবার্ককে সাধুবাদ জানান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সফলতা কামনা করেন গভর্নর গ্লেন ইয়ংকিন।

দিনভর এসব কর্মসূচিতে নানাভাবে প্রশংসা এবং স্বীকৃতিকে পাথেয় করে নবউদ্যমে পাঠদানে আরও বাস্তবভিত্তিক শিক্ষা-কারিক্যুলামে মনোনিবেশ করার সংকল্পে রিচমন্ড থেকে ভার্জিনিয়া ক্যাম্পাসে ফিরেছে ডব্লিউইউএসটি টিম। 

প্রসঙ্গত, ২০০৮ সালে প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়টি ২০২০ সালের অক্টোবর থেকে বাংলাদেশি-আমেরিকান আইটি ও শিক্ষা উদ্যোক্তা ইঞ্জিনিয়ার আবু বকর হানিপের ব্যবস্থাপনা ও নেতৃত্বে পরিচালিত হচ্ছে। তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়টি শিক্ষণ ও পরিচালন পদ্ধতিতে এসেছে ব্যাপক পরিবর্তন। যার মধ্য দিয়ে ঘটেছে দ্রুত প্রসার, শিক্ষার্থীদের কাছে হয়েছে জনপ্রিয়। তিন বছরের ব্যবধানে বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থী সংখ্যা ৩০০ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭০০ জনে। এখানে তথ্য-প্রযুক্তি, সাইবার সিকিউরিটি ও ব্যবসা প্রশাসনের উপর ব্যাচেলর ও মাস্টার্স কোর্সে বর্তমানে বিশ্বের ১২১ দেশের শিক্ষার্থী লেখাপড়া করছেন। সম্প্রতি ভার্জিনিয়ার আলেক্সান্দ্রিয়ায় বৃহৎ ভবনে গড়ে তোলা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টির নতুন ক্যাম্পাস।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here