ভাগ্যবন্দী হলেন রাহুলসহ একাধিক সেলিব্রিটি

0

ভারতের কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর ভাগ্য নির্ধারণ হলো শুক্রবার। দ্বিতীয়বারের জন্য ভারতের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হবেন কি না তা ঠিক করলেন কেরালার ওয়েনাড কেন্দ্রের ভোটাররা। যদিও রাহুলের ভাগ্য পরীক্ষা হবে আগামী ৪ জুন। কারণ ওই দিন গোটা দেশজুড়ে ভোটের গণনা। 

এদিন দ্বিতীয় দফায় দেশটির ১৩টি রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় শাসিত অঞ্চলের ৮৮টি লোকসভা কেন্দ্রে ভোট নেওয়া হয়। যার মধ্যে অন্যতম ছিল কেরালার ওয়েনাড কেন্দ্রটি। দ্বিতীয়বার সংসদ সদস্য হিসাবে জয়ের জন্য এই কেন্দ্র থেকে লড়াই করেছেন দলটির সাবেক সভাপতি। স্বাভাবিকভাবে সকলেরই নজর ছিল এই কেন্দ্রের দিকে। 

গত লোকসভা নির্বাচনে কেরলের ওয়েনাড কেন্দ্রের পাশাপাশি উত্তরপ্রদেশের আমেথি আসন থেকেও নির্বাচনে লড়েছিলেন রাহুল। কিন্তু কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানির কাছে ৫৫ হাজারের বেশি ভোটে হেরে যান তিনি। কিন্তু ওয়েনাড কেন্দ্র থেকে জিতে সাংসদ হন তিনি। কিন্তু এবার এখনো পর্যন্ত একটি মাত্র আসন থেকেই লড়াই করেছেন তিনি। তবে দলীয় সূত্রে খবর কংগ্রেসের শক্ত ঘাঁটি উত্তরপ্রদেশের আমেথি কেন্দ্র থেকেও এবার ফের লড়তে পারেন রাহুল। এই দফার  নির্বাচন শেষেই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে পারে রাহুল ও তার দল। সেক্ষেত্রে ওয়েনাড রাহুলকে শুন্য হাতে ফেরালেও আমেথিতে রাজনৈতিক ভাগ্য পরিবর্তনের সুযোগ থাকবে তার হাতে। 

এদিন দ্বিতীয় দফার ভোট শুরুর আগেই নিজের এক্স হ্যান্ডেলে রাহুল গান্ধী লেখেন ‘আজ ঐতিহাসিক দ্বিতীয় দফার নির্বাচন। এই নির্বাচন দেশের ভাগ্য নির্ধারণ করবে এবং প্রতিটি ভোট নির্ধারণ করবে যে পরবর্তী সরকার বিলিয়নিওরদের (১০০ কোটি রুপির মালিক) হবে নাকি ১৪০ কোটি ভারতীয়দের হবে। তাই প্রত্যেক নাগরিককে বলবো তারা যেন তাদের নিজেদের ভোটটা প্রদান করে। এবং সংবিধানের একজন সৈনিক হয়। এই ভোট গণতন্ত্রকে রক্ষা করবে।’ 

এছাড়াও কর্নাটকের বিজাপুরে নির্বাচনী প্রচারণায় গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে নিশানা করেন রাহুল। তিনি বলেন আজকাল বক্তব্য রাখার সময় প্রধানমন্ত্রীকে খুব নার্ভাস লাগছে। হয়তো আগামী দিনে স্টেজের উপরে তাকে চোখের পানি ফেলতেও দেখা যেতে পারে। গত ১০ বছরে তিনি অনেক গরিব মানুষের অর্থ ছিনিয়ে নিয়েছেন। দেশের ২২ জন ব্যক্তিকে এত অর্থ দিয়েছেন যেটা ৭০ কোটি মানুষের অর্থের সমান। প্রধানমন্ত্রী যে অর্থ বিলিয়নিয়রদের দিয়েছেন, আমরা তার থেকেও বেশি অর্থ গরিব মানুষদের দেব।’ 

দেশজুড়ে এই দফায় মোট ভোটারের সংখ্যা ছিল ১৫.৮৮ কোটি, এরমধ্যে ৮.০৮ কোটির বেশি পুরুষ ভোটার, নারী ভোটারের সংখ্যা ৭.৮ কোটির বেশি, তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ৫৯২৯। মোট ১২১০ জন প্রার্থীর ভাগ্য নির্ধারিত হয়। সবচেয়ে বেশি ৭৪ জন প্রার্থী ছিল বহুজন সমাজ পার্টির, বিজেপির ৬৯, কংগ্রেসের ছিল ৬৮ জন প্রার্থী। 

রাহুল গান্ধী ছাড়াও তিরুবন্তপুরম কেন্দ্রে কংগ্রেস প্রার্থী ও সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, জাতিসংঘের কূটনীতিবিদ শশী থারুরের ভাগ্য বাক্সবন্দী হয়েছে। চতুর্থবারের জন্য এই কেন্দ্র থেকে প্রতিদ্বন্দিতা করলেন থারুর। এদিন ভোট প্রদান করেই নিজের জয় সম্পর্কে প্রত্যশা ব্যক্ত করলেন থারুর। এই কেন্দ্রে বিজেপির প্রার্থী ছিলেন কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রী রাজীব চন্দ্রশেখর। তাই লড়াইটা এখানেও শেয়ানে শেয়ানে হবে। যোধপুর কেন্দ্রে ছিলেন বিজেপির প্রার্থী কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াত, কোটা কেন্দ্রে লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা প্রমুখ। 

অন্যদিকে সেলিব্রিটি প্রার্থীদের মধ্যে মথুরা কেন্দ্র থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন বিজেপির প্রার্থী অভিনেত্রী হেমা মালিনী। এ নিয়ে এই কেন্দ্র থেকে তিনবার লড়াই করছেন তিনি। মিরাট কেন্দ্র থেকে এবারই প্রথম লড়লেন অভিনেতা অরুণ গোভিল, ত্রিশুর লোকসভা কেন্দ্র থেকে বিজেপি প্রার্থী মালায়ালাম অভিনেতা সুরেশ গোপী। 

এদফায় পশ্চিমবঙ্গের যে ৩ আসনে ভোট নেওয়া হয় সেগুলি হল- বালুরঘাট, দার্জিলিং ও রায়গঞ্জ আসন। বর্তমানে তিনটি আসনই বিজেপির দখলে। বিজেপির প্রত্যাশা এবারও এই কেন্দ্রগুলি তাদের দখলেই থাকবে।

বালুরঘাটে বিজেপির প্রার্থী ছিলেন বর্তমান সাংসদ ও রাজ্যের বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, তৃণমূলের প্রার্থী রাজ্যের ক্রেতা ও সুরক্ষা মন্ত্রী বিপ্লব মিত্র। দার্জিলিং কেন্দ্রে বিজেপির প্রার্থী বর্তমান সাংসদ রাজু বিস্তা, তার প্রধান প্রতিপক্ষ ছিলেন তৃণমূলের গোপাল লামা, কংগ্রেসের প্রার্থী ছিল মুণীশ তামাং। অন্যদিকে রায়গঞ্জে বিজেপি প্রার্থী কার্তিক পাল। তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল তৃণমূল কংগ্রেসের কৃষ্ণ কল্যাণী এবং কংগ্রেসের আলী ইমরান রামজ (ভিক্টর)। 

শুক্রবার গোটা দেশজুড়ে ভোট গ্রহণ শুরু হয় সকাল ৭ টায়, তা শেষ হয় সন্ধ্যা ৬টায়। তবে পশ্চিমবঙ্গে দু-একটি বিক্ষিপ্ত ঘটনা ঘটলেও গোটা দেশজুড়ে এই নির্বাচন ছিল শান্তিপূর্ণ। 

উল্লেখ্য, মোট সাত দফায় লোকসভার নির্বাচন নেয়া হবে। সেক্ষেত্রে তৃতীয় দফায় ভোট নেওয়া হবে আগামী ৭ মে, চতুর্থ দফায় ১৩ মে, পঞ্চম দফায় ২০ মে, ষষ্ঠ দফায় ২৬ মে এবং সপ্তম শেষ দফার ভোট ১ জুন। ভোট গণনা আগামী ৪ জুন। 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here