বগুড়ায় সবুজ ধানে স্বপ্ন বুনছে কৃষক

0

বগুড়ার মাঠে মাঠে শোভা পাচ্ছে সবুজের সমারাহ। মাঠের পর মাঠ জুড়ে বোরো ধানের সবুজ ক্ষেত। সবুজ ধানে স্বপ্ন বুনছেন কৃষকরা। বোরো ধানের সবুজ ঢেউ কৃষকের মন ভরিয়ে দিচ্ছে। ইতিমধ্যে বগুড়া জেলার বিভিন্ন উপজেলায় রোরো ধানের চারা রোপন শেষ হয়েছে। 

কৃষকরা এখন পানি সেচ, নিবিড় পরিচর্যা ও সময়মতো সার প্রয়োগে ব্যস্ত সময় পার করছেন। তারা সোনালি ধান ফলানোর জন্য মাঠে নিরন্তর পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। তাঁদের নিবিড় পরিচর্যায় আশানুরূপভাবে বেড়ে উঠছে বোরো ধান।

প্রাকৃতিক বৈরিতার কবলে না পড়লে এবং ঠিকমতো সোনালী ধান ঘরে তুলতে পারলে লাভবান হবে বগুড়ার কৃষক। নতুন ধানে সোনালী স্বপ্ন বুনছেন জেলার কৃষকরা। গেলো বছর ধান ও চালের দাম চড়া হওয়ায় অন্য চাষ ছেড়ে বোরো চাষে ঝুঁকেছেন কৃষকরা। তবে এবার রোগবালাই কম থাকলেও সার-এ বাড়তি খরচ লাগছে কৃষকের। তবে সরকারিভাবে বাজারে প্রচুর সার থাকলেও বাজার নিয়ন্ত্রণে না থাকায় অনেকই সরকারি দামে সার পাচ্ছেন না। অধিক মুনাফার আশায় ব্যবসায়ীরা ইচ্ছেমত দামে সার বিক্রি করছেন। সেই সাথে বিদ্যুৎ ও জ্বালালি তেলের দাম বাড়ায় খরচও আগের তুলনায় বেড়ে গেছে। 
বগুড়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর জেলায় ১ লাখ ৮৭ হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হযেছে। আর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্র নির্ধারণ করা হয়েছে ৭ লাখ ৩৫ হাজার ৫৩ মেট্রিকটন। আবহাওয়া অনুক‚ল থাকলে লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করা সম্ভব হবে। গত বছরের অর্জন ১ লাখ ৮৪ হাজার ৩০০ হেক্টর। বগুড়া জেলার সারিয়াকান্দি, সোনাতলা, শিবগঞ্জ, শেরপুর, নন্দীগ্রাম, আদমদীঘি উপজেলা সবচেয়ে বেশি বোরো আবাদ হয়ে থাকে। এ বছর বোরো ধানের আবাদে লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি হবে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ও বড় ধরণের কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে ধানের উৎপাদনও অনেক ভাল হবে।
শাজাহানপুর উপজেলার নন্দগ্রাম এলাকার কৃষক আমজাদ হোসেন জানান, ১ একর ২০ শতক জমিতে উফশী ও হাইব্রিডজাতের বোরোর চাষ করেছেন। শুরু থেকে সার কীটনাশক প্রয়োগসহ সঠিক পরিচর্যা করছেন। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে না পড়লে এবার বাম্পার ফলনের আশাবাদী তিনি।
সদর উপজেলার কৃষক আব্দুল হামিদ মন্ডল জানান, আবহাওয়া অনুক‚ল থাকার পাশাপাশি সঠিক সময়ে সেচ দিতে পারলে এবার বোরো ধানের বাম্পার ফলন হবে। ধান পাকার পর তা নিরাপদে ঘরে তুলতে পারলেই লাভবান হবেন বলে আশা এ কৃষকের। তবে এ বছর শ্রমিক মজুরী থেকে শুরু করে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় গেলো বছরের তুলনায় খরচ অনেক বেশি। ধান কাটার পর যদি দাম ভালো থাকে তাহলে লাভবান হওয়া যাবে। 

বগুড়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক এনামুল হক জানান, চলতি বছর জেলায় ১ লাখ ৮৭ হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্র নির্ধারণ করা হয়েছে ৭ লাখ ৩৫ হাজার ৫৩ মেট্রিকটন। ইতিমধ্যে জেলায় বোরো ধান রোপন শেষ হয়েছে। তবে কিছু কিছু এলাকায় দেরীতে রোপণ হয়ে থাকে। এবারও বাম্পার ফলন হবে এমন লক্ষ্য নিয়ে আমরা মাঠ পর্যায়ে কাজ করছি। আবহাওয়া অনুকূল থাকলে সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ধানের বাম্পার ফলন হবে। গত বছরের মতো এবারও চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। সামনে প্রাকৃতিক বিপর্যয় না ঘটলে সোনালি ধানে হাসি ফুটবে কৃষকের মুখে। 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here