নৌপথে ঈদযাত্রায় কালবৈশাখী সতর্কতা, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ৫ নির্দেশনা

0

এবার ঈদুল ফিতর উপলক্ষে নৌ-পথে যাত্রী সাধারণে বাড়ি ফেরা নির্বিঘ্ন করতে কালবৈশাখী ঝড় মোকাবেলায় বিশেষ সতর্কতা জারির সিদ্ধান্ত নিয়েছে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়। একইসঙ্গে যাত্রীবাহী লঞ্চে কিশোরগ্যাং এবং সদরঘাটসহ দেশের নদীবন্দরগুলোতে জুয়াড়িদের উপদ্রব ঠেকাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তা চাওয়া হয়েছে। লঞ্চে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় ও অতিরিক্তি যাত্রী পরিবহন ঠেকাতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার বিষয়েও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, নৌ পথে ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে সম্প্রতি নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ে একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এবার ঈদুল ফিতর যেহেতু কালবৈশাখী মৌসুমে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে, সে কারণে এই ঝড় যাতে নৌপথে যাত্রীদের দুর্ভোগের কারণ হয়ে না দাঁড়ায় সে’লক্ষ্যে কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সভায় মুন্সিগঞ্জের ডিসি লঞ্চের মধ্যে কিশোরগ্যাং-এর মাধ্যমে যাত্রীদের চুরি, ডাকাতির শিকার হওয়ার বিষয়টি তুলে ধরে এ বিষয়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তা চান। 

কালবৈশাখী মোকাবেলায় গৃহীত সিদ্ধান্ত :
আবহাওয়া সংকেত অনুসরণ করে অধিকতর সতর্কতার সাথে নৌযান পরিচালনা করতে হবে; এই সতর্কতার বিষয়ে কঠোর তদারকি নিশ্চিত করতে হবে; লিফলেট ও তথ্যচিত্রের মাধ্যমে ঘূর্ণিঝড় ও আবহাওয়া সতর্ক সংকেতের (সমুদ্র ও নদী সতর্কতা সংকেতের পার্থক্য) বিষয়ে যাত্রীদের সুস্পষ্ট ধারণা প্রদান করতে হবে। সদরঘাট টার্মিনালে স্থাপিত কর্তৃপক্ষের হটলাইন নাম্বারের কলসেন্টারের মাধ্যমে ২৪ ঘণ্টা আবহাওয়া সংকেত সংগ্রহ ও প্রচারের জন্য ঢাকা নদী বন্দরের একজন কর্মকর্তা/কর্মচারিকে দায়িত্ব প্রদান করতে হবে; নৌপথে অনাকাঙ্খিত দুর্ঘটনায় প্রয়োজনীয় সহযোগিতা ও উদ্ধার কার্যক্রম গ্রহণের জন্য উদ্ধারকারী জলযান প্রস্তত রাখতে হবে। 

কিশোরগ্যাং ও জুয়াড়ি উপদ্রব ঠেকাতে থাকবে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী :
ঢাকা নদী বন্দরের সদরঘাট এলাকাসহ অন্যান্য নদী বন্দরের টার্মিনাল, ঘাট পয়েন্ট এবং লঞ্চে জুয়া খেলা বন্ধ করতে হবে;  নৌপথে ডাকাতি, চাঁদাবাজি এবং শ্রমিক ও যাত্রীদের হয়রারি ও ভীতিমূলক অবস্থা প্রতিরোধে রাতে টহল পুলিশ দায়িত্ব পালন করবে। যাত্রীদের নিরাপত্তার স্বার্থে কিশোরগ্যাং বন্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে; প্রত্যেক ঘাট এলাকায় যাত্রীদের জানমালের নিরাপত্তার জন্য স্থানীয় প্রশাসন, জেলা পুলিশ, নৌ পুলিশ ও কোস্টগার্ডের মাধ্যমে ভিজিলেন্স টিম গঠন করা হবে। লঞ্চের অনুমোদিত ভাড়ার চেয়ে বেশি ভাড়া আদায় করা যাবে না; বেশি ভাড়া আদায় করা হলে লঞ্চ মালিক বা চালকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এছাড়া ফেরীঘাট, লঞ্চঘাট এবং স্পিডবোট ঘাটে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় ও অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন বন্ধে মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হবে। 

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনা :
নৌযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকেও বেশ কিছু নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। এগুলো হলো: (১) লঞ্চ টার্মিনালে ২৪ ঘণ্টা বিদ্যুতের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে; ঈদযাত্রাকালীন নদীতে বাল্কহেডের চলাচল সীমিত বা বন্ধ রাখতে হবে; দক্ষিণাঞ্চলের যানবাহন ঢাকা হয়ে উত্তরাঞ্চলে যাওয়ার সুবিধার্থে চাঁদপুর, শরীয়তপুর ফেরীঘাটে পর্যাপ্ত ফেরীর ব্যবস্থা রাখতে হবে; (২) সকল ফেরীঘাটে ডাস্টবিন পিসচার্জ করার ব্যবস্থা রাখতে হবে; (৩) দুর্ঘটনায় ডুবে যাওয়া নৌযান, লঞ্চ, জাহাজের ছাদের সাথে ২শ’ থেকে ৩শ ফুট দৈর্ঘ্যরে রশি দিয়ে শক্ত করে কন্টেইনার বা বয়া বেধে রাখতে হবে; (৪) নৌ দুর্ঘটনা এড়াতে চাঁদপুরের মেঘনা, ডাকাতিয়া নদীর মোহনায় ঘূর্ণাবর্ত চিহ্নিত করতে হবে এবং (৫) নদী বন্দর এলাকার টার্মিনাল ঘাট পরিস্কার পরিচ্ছন্ন ও আলোকিত রাখতে হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here