নির্বাচনী উত্তাপ নেই ভারতের মণিপুরে

0

সামনেই ভারতের ১৮ তম লোকসভা নির্বাচন। মোট সাত দফায় ৫৪৩ টি লোকসভার আসনে ভোট নেওয়া হবে। প্রথম দফার ভোট আগামী ১৯ এপ্রিল। ইতিমধ্যেই  প্রচারণায় ঝড় তুলেছে রাজনৈতিক দলগুলি, চারদিক ছেয়ে গেছে দল ও প্রার্থীদের পোস্টার-ব্যানারে, নেতাদের আনাগোনা বেড়েছে। কিন্তু গণতন্ত্রের উৎসবের এই দৃশ্য বড়ই ম্রিয়মাণ উত্তর-পূর্ব ভারতের সহিংসতা বিধ্বস্ত মণিপুরে। 

রাজ্যটির দুইটি লোকসভা আসন- ইনার মণিপুর কেন্দ্রে প্রথম দফায় ভোট নেওয়া হবে ১৯ এপ্রিল, আউটার মণিপুর কেন্দ্রে দ্বিতীয় দফায় ভোট হবে ২৬ এপ্রিল। সেক্ষেত্রে ভোট শুরু হতে মাত্র দুই সপ্তাহ বাকি। সেখানকার বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, ভোটারদের ভোটদানে উৎসাহিত করতে একমাত্র নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে কিছু কিছু পোস্টার, ব্যানার চোখে পড়ছে। তবে সেই সংখ্যাটাও খুবই কম। কিন্তু ভোট চেয়ে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলির কোন নেতা বা তারকা প্রচারকদের এখনো পর্যন্ত ভোটারদের কাছে যেতে দেখা যায়নি কিংবা কোন রাজনৈতিক সভা বা মিছিলেও অংশ নেননি। 

যদিও নির্বাচন কমিশনের বক্তব্য মণিপুরে প্রচারণামূলক কার্যক্রমের উপর কোন সরকারী বিধিনিষেধ নেই। রাজ্যের নাজুক পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরাই যেকোন অপ্রীতিকর বা উত্তেজনা এড়াতে কম প্রচারণা চালানোর প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়েছেন। 

মণিপুরের মুখ্য নির্বাচনী কর্মকর্তা, প্রদীপ ঝা বলেন, ‘প্রচারণার উপর নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে কোন বিধিনিষেধ নেই। আদর্শ আচরণবিধির (MCC) মধ্যে সবকিছুই অনুমোদিত। 

এরকম এক জটিল পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য বিজেপির থাউনাওজাম বসন্ত কুমার সিং, কংগ্রেসের আঙ্গোমচা বিমল আকোইজাম, রিপাবলিকান পার্টি অফ ইন্ডিয়ার মহেশ্বর থাউনাওজাম এবং মণিপুর পিপলস পার্টি (এমপিপি) সমর্থিত প্রার্থী রাজমুকার সোমেন্দ্রো সিংসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা অভিনব পন্থা অবলম্বন করেছে। 

চিরাচরিত প্রথার বাইরে গিয়ে ভোটারদের বাড়িতে গিয়ে বৈঠক, দলের কার্যালয়ে বৈঠক বা দলের কর্মী-সমর্থকদের ভোটারদের বাড়ি বাড়ি পাঠিয়ে প্রচারণায় জোর দিয়েছেন প্রার্থীরা। 

উল্লেখ্য, গত বছরের ৩ মে থেকে মণিপুরে যে অশান্তি শুরু হয়েছিল, তার স্থায়ী ছিল বেশ কয়েক মাস। তাতে মৃত্যু হয় প্রায় ১৭০ জনের বেশি মানুষের। বাস্তুহারা প্রায় কয়েক হাজার মানুষ।  মূলত সংরক্ষণ ইস্যুকে কেন্দ্র করেই উত্তপ্ত হয়ে উঠে মণিপুর। মণিপুরের মোট জনসংখ্যার ৫৩ শতাংশ মেইতেই সম্প্রদায়ের। তাদের বেশিরভাগই বসবাস ইম্ফল উপত্যকায়। ৪০ শতাংশ কুকি এবং নাগা সম্প্রদায়ের মানুষ। তাদের বসবাস বিভিন্ন পাহাড়ি এলাকায়। হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতেইরা ‘তপসিলি উপজাতি’ (এসটি) দাবীতে সরব হয়। তাতে সিলমোহর পড়ার পর থেকেই অশান্ত হয়ে ওঠে মণিপুর। 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here