আখতার রাফি : ধামরাইয়ে বণিক বাড়ির অষ্টধাতুর দুর্গা প্রতিমা এবারও দর্শনার্থীদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। প্রায় ৫২০ কেজি ওজনের ও ৮ ফুট লম্বা এই প্রতিমা দেখতে ভিড় করছেন দেশের নানা প্রান্তের মানুষ। বিশেষ দিক হলো অন্যান্য প্রতিমার মতো পূজা শেষে এটিকে বিসর্জন দেওয়া হয় না। গত সাত বছর ধরে বণিক পরিবারের উত্তরসূরি সুকান্ত বণিক এই প্রতিমার পূজা করে আসছেন। জানা গেছে, বণিক পরিবারে দুর্গাপূজার প্রচলন ১০০ বছরেরও বেশি সময়ের। তবে শুরুতে বাড়ির বাইরে প্যান্ডেলে পূজা হলেও বর্তমানে তা বাড়ির ভেতরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সুকান্ত বণিক জানান, তাদের পরিবার ২০০ বছরের ঐতিহ্য নিয়ে তামা, কাঁসা ও পিতলের শিল্পের সঙ্গে জড়িত। পূর্বে মাটির প্রতিমা দিয়ে পূজা হতো, কিন্তু জনবল কমে যাওয়ায় তা আর সম্ভব হয়নি। তাই ২০১৭ সালে তিনি প্রায় এক বছরের প্রচেষ্টায় তৈরি করেন অষ্টধাতুর দুর্গা প্রতিমা। এতে তামা, কাঁসা, স্বর্ণ, রুপা, দস্তা, রাং, পারদসহ আটটি ধাতুর সংমিশ্রণ রয়েছে। প্রতিমায় দেবী দুর্গার পাশাপাশি লক্ষ্মী, সরস্বতী, গণেশ ও কার্তিকের মূর্তিও স্থাপন করা হয়েছে।
পূজার পাঁচ দিন বণিক বাড়ি ও মণ্ডপ সাধারণ দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকে। এ সময় হাজারো মানুষ প্রতিমা ও বণিক বাড়ির নান্দনিক কারুকার্য দেখতে ভিড় করেন।আশুলিয়ার সুজিত চক্রবর্তী বলেন, আমি প্রতি বছরই ধামরাইয়ের বণিক বাড়িতে আসি। প্রতিমার পাশাপাশি বাড়ির কারুকার্য, কাঁসা-পিতলের প্রতিমা ও নটরাজ মূর্তি দর্শকদের মুগ্ধ করে। মানিকগঞ্জ থেকে আগত লক্ষণ বিশ্বাস জানান, এখানকার প্রতিমা সত্যিই ব্যতিক্রম। অষ্টধাতুর তৈরি প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয় না, সবসময়ই মণ্ডপে রাখা থাকে। ধামরাইয়ের বণিক বাড়ির এই অষ্টধাতুর প্রতিমা শুধু পূজার আনুষ্ঠানিকতাকেই বিশেষ করে তোলেনি, বরং ঐতিহ্যবাহী শিল্পকে ধরে রেখেছে এখনো।