গরমে ডায়াবেটিস রোগীদের সমস্যা ও প্রতিকার

0

এবারের গ্রীষ্মকালে বাতাসের তাপমাত্রা সকল রেকর্ড ছাপিয়ে যাচ্ছে। ঢাকা থেকে শুরু করে বাংলাদেশের সকল জেলা-উপজেলার অবস্থা মোটামুটি একই রকম। রাজধানীর তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড ছুঁই ছুঁই করছে। কিন্তু তাপমাত্রা আরও বেশি অনুভূত হচ্ছে। (বাতাসের তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড অতিত্রম করলে তাকে তীব্র দাবদাহ আখ্যা দেয়া হয়)। কিন্তু বায়ুমণ্ডলের আর্দ্রতা খুবই কম। অনেকটা মরুদেশীয় আবহাওয়ার মতোই।  

আবহাওয়ার পূর্বাভাস আরও অনেক বেশি উষ্ণতা বৃদ্ধির আশংকা প্রকাশ করছে। এরূপ মারাত্মক আবহাওয়ায় সকল বয়সের মানুষ, সকল রোগের বা নীরোগ মানুষ নানাবিধ স্বাস্থ্য সমস্যায় আক্রান্ত হতে পারেন। তবে ডায়াবেটিস রোগীদের বিশেষভাবে সতর্ক হওয়ার দরকার আছে; না হলে পানি শূন্যতা থেকে শুরু করে প্রস্রাবের প্রদাহ, ত্বকের সংক্রমণ, এলারজিসহ বিভিন্ন রকম জটিলতা হতে পারে। এসব সমস্যা যে সব ডায়াবেটিস রোগীর কিডনি অবস্থা ভালো নয়/উচ্চ রক্তচাপ আছে/ হৃদরোগ আছে অথবা যাদের বেশি পরিমাণে ইন্সুলিন লাগে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের জন্য, ডাইউরেটিক্স জাতীয় উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ সেবন করতে হয়, তাদেরকে জোরালো ভাবে আক্রান্ত করতে পারে।

ডায়াবেটিস রোগীর ক্ষেত্রে গরম আবহাওয়া কি ধরনের সমস্যা সৃষ্টি করে?

* গরম আবহাওয়ায় শরীরের জলবিয়োজন একটি গুরুতর সমস্যা। এর ফলে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। ডায়াবেটিস রোগীদের উচিত এ সময়ে অধিক পরিমাণে তরলজাতীয় খাবার গ্রহণ করা এবং ঘন ঘন জলপানের প্রতি গুরুত্ব দেয়া।

* অতিরিক্ত গরমে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য আরেকটি উদ্বেগজনক দিক হল এ সময় শরীরে ব্লাড সুগার অস্বাভাবিক পরিমাণে বাড়ে-কমে এবং হাইপোগ্লাইসেমিয়া ও হাইপারগ্লাইসেমিয়ার সম্ভাবনা থাকে। 

গরম আবহাওয়ার ডায়াবেটিসের ঝুঁকিগুলো কি কি?

* যারা ব্লাডসুগার কমানোর জন্য চিকিৎসা নিচ্ছেন গরম আবহাওয়ায় তাদের হাইপোগ্লিসেমিয়া বাড়ার ঝুঁকি রয়েছে। গরম এবং আর্দ্র আবহাওয়ায় শরীরে মেটাবোলিজমের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার ফলে হাইপোগ্লিসেমিয়া বাড়ারও সম্ভাবনা থাকে।

* গরমে ঘর্মাক্ত বা ক্লান্ত হয়ে পড়া হাইপোগ্লেসিমিয়ার লক্ষণ হতে পারে। তাই এগুলো এড়িয়ে যাওয়া ঠিক হবে না। গাড়ি চালানোর সময় নিজের বাড়তি যত্ন নিন এবং প্রতিবার দীর্ঘভ্রমণের আগে ও পরে ব্লাড সুগার পরীক্ষা করুন।

* হাইপো প্রতিরোধে, বিশেষত যখন গরমের মধ্যে শারীরিক পরিশ্রম করেন, রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ ঘন ঘন পরীক্ষা করান। কার্বোহাইড্রেট থেকে দূরে থাকার জন্য গ্লুকোজ ট্যাবলেটজাতীয় ওষুধ সঙ্গে রাখুন।

* স্থান এবং তাপমাত্রা পরিবর্তনের সময় আপনার দেহে ইনসুলিনের মাত্রা দেখে নিন। যদি ব্লাড সুগার কম বা বেশি হয় ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

লেখক : সহযোগী অধ্যাপক, এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here