এক্সপ্রেস ওয়েতে বার বার দুর্ঘটনা: দ্রুতগতিকেই দায়ী করছেন স্থানীয়রা

0

পদ্মা সেতু দুই পাশের এক্সপ্রেস ওয়েতে মাঝে মাঝেই ঘটছে প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা। আর এই দুর্ঘটনার জন্য স্থানীয়রা দ্রুতগতি ও চালকের অদক্ষতা-অবহেলাকেই দায়ী করছেন। 

সংশ্লিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, ঢাকার যাত্রাবাড়ী থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত চলে গেছে হাইওয়ে এক্সপ্রেস। এই মহাসড়কে প্রতিনিয়তই ঘটছে দুর্ঘটনা। রবিবার সকাল বেলা হঠাৎ করেই দ্রুতগতির একটি যাত্রীবাহী বাস দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। নিহত হয় ১৯ জন। গত জানুয়ারি মাসে পদ্মা সেতু টোল প্লাজার কাছে একটি অ্যাম্বুলেন্স দুর্ঘটনায় নিহত হয় ৬ জন। শিবচরের চর বাঁচামারা এলাকায় দুর্ঘটনায় নিহত হয় ৩জন। ফেব্রুয়ারি মাসেও এক দুর্ঘটনায় চীনা নাগরিকসহ দুইজন নিহত হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা আবু সালেহ মুসা জানান, এই সড়ক এখন মৃত্যু ফাঁদ। কয়েক দিন পরপরই দুর্ঘটনা ঘটে। এই মহাসড়কে গাড়ি দ্রুত গতিতে চলে। অধিকাংশ গাড়ি নির্দিষ্ট গতিসীমা মানে না। একারণেই বার বার দুর্ঘটনা ঘটে। 

স্থানীয় বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম রাজা জানান, গতিসীমা নিয়ন্ত্রণে পুলিশের ভূমিকা রাখা উচিত। এছাড়াও চালকরা সড়ক পরিবহন আইন মেনে চলে না। তাই মানুষের প্রাণহানির ঘটনা ঘটছে। গাড়ির গতি থাকার কথা ঘণ্টায় ৮০ কিমি। অথচ অধিকাংশ সময় গাড়ির গতি থাকে ঘণ্টায় ১০০-১২০ কিমি।

মাদারীপুর উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট মাসুদ পারভেজ বলেন, ‘সড়ক পরিবহন আইন মোতাবেক একজন চালকের সর্বোচ্চ ৫ ঘণ্টা একাধারে গাড়ি চালানোর বিধান। এরপর অধা ঘণ্টা বিরতি দিয়ে আরও তিন ঘণ্টা চালাতে পারেন। তবে এক দিনে সর্বোচ্চ ৮ ঘণ্টা গাড়ি চালানোর বিধান রয়েছে। কিন্তু অধিকাংশ বাস কোম্পানি এই আইন মানে না। চালকরা দীর্ঘক্ষণ গাড়ি চালানোর ফলে অনেক সময় চালকরা গাড়ি চালানো অবস্থাতেই ঘুমিয়ে পড়ে। এতে করে দুর্ঘটনা ঘটে। বিভিন্ন সময় এমন খবর আমরা গণমাধ্যমে দেখি। এছাড়াও এই মহাসড়কে অতিরিক্ত গতিতেও গাড়ি চলে। এসব কারণেই মূলত দুর্ঘটনা ঘটে। তাই প্রশাসনের উচিত সড়ক পরিবহন আইন কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করা।’

মাদারীপুর পুলিশ সুপার মো. মাসুদ আলম বলেন, দ্রুত গতিতে গাড়ি চলার বিষয়টি সত্য। তবে আমরা গতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করি। সব গাড়ি সব সময় গতি নিয়ন্ত্রণ করা যায় না জনবল সংকটের কারণে। এই মহাসড়কে সর্বোচ্চ গতি থাকার কথা ঘণ্টায় ৮০ কি.মি.। আমরা শুনেছি অনেক গাড়ির গতি আরও অনেক বেশি থাকে। আমরা চেষ্টা করছি সড়ক পরিবহন আইন কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করার।

এদিকে শিবচরে ১৯জন নিহতের ঘটনায় রবিবার ৪সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সোমবার সকাল থেকেই তারা তদন্ত শুরু করেছে। স্থানীয় বাসিন্দা, বাস যাত্রীদের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তদন্ত কমিটি প্রধান অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক পল্লব কুমার হাজরা। তিনি জানান, তদন্ত শেষে দুর্ঘটনার কারণ খুঁজে বের করতে পারবো। অনেক তথ্যই পাওয়া গেছে।

 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here