কানাডা এখন উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। বিশেষ করে অটোয়া ও সরকারি পর্যায়ে এই উৎসব এখন দৃশ্যমান। উৎসবের অন্যতম কারণ ব্রিটিশ রাজা চার্লস ও রানি ক্যামিলার সফর। ইতিমধ্যেই তাঁরা কানাডার স্থানীয় সময় সোমবার (২৬ মে) পৌঁছেছেন।
কানাডার লিবারেল পার্টির নেতা নতুন নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নির নেতৃত্বে সকল নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা ইতিমধ্যেই শপথ নিয়েছেন। নতুন সরকারের নতুন সংসদে মঙ্গলবার (২৭ মে) সকালে কানাডার পার্লামেন্ট ‘হাউস অব কমন্সে’ ‘স্পিচ ফ্রম দ্য থ্রোন’ পাঠ করবেন রাজা চার্লস। প্রায় ৫০ বছরের মধ্যে এটিই কোনও ব্রিটিশ রাজা/রানির এ ধরনের ভাষণ। সর্বশেষ এমন ভাষণ দেওয়া হয়েছিল ১৯৭৭ সালে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের সময়।
রাজা চার্লসের ‘স্পিচ ফ্রম দ্য থ্রোন’ ভাষণে কানাডার স্বাধীনতার সুরক্ষা এবং যুক্তরাষ্ট্রের কানাডা অধিগ্রহণের দাবি প্রত্যাখ্যানের বার্তা থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে। কানাডা সরকারের পরামর্শে এটি প্রস্তুত করা হয়েছে।
যুক্তরাজ্যের সাবেক কানাডীয় হাইকমিশনার জেরেমি কিন্সম্যান বলেন, ‘এটি হবে কানাডার স্বাধীনতার পক্ষে একটি শক্তিশালী বার্তা। রাজা নিজেও এই ভাষণ দিতে গর্ব বোধ করবেন।’ ভাষণটি ফরাসি ও ইংরেজি—দুই ভাষাতেই দেওয়া হবে।
ট্রাম্পের হুমকির মুখে কানাডার পাশে রাজা চার্লস
কানাডায় ব্রিটিশ রাজা চার্লস ও রানি ক্যামিলার সফরকে দেশটির সার্বভৌমত্ব রক্ষায় যুক্তরাজ্যের সমর্থন হিসাবেই দেখা হচ্ছে।
বিভিন্ন গোষ্ঠীর সঙ্গেও সাক্ষাৎ করবেন রাজা-রানি। এর মধ্যে থাকবেন কানাডার আদিবাসী ‘ফার্স্ট নেশন’ সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরাও। দেখা করবেন কানাডার প্রথম আদিবাসী গভর্নর জেনারেল মেরি সাইমনের সঙ্গেও।
এটাই রাজা চার্লস ও রানির প্রথম কানাডা সফর, যা গত বছর চার্লসের ক্যান্সার ধরা পড়ায় স্থগিত হয়েছিল। কানাডা সফর রাজা চার্লসের জন্য কূটনৈতিক ভারসাম্য রক্ষার চ্যালেঞ্জও বটে।
তিনি যেমন যুক্তরাজ্যের রাষ্ট্রপ্রধান, তেমনি কানাডারও। যুক্তরাজ্যের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক ভাল রাখতে চার্লসকে যেমন সহায়ক ভূমিকা পালন করতে হচ্ছে, ট্রাম্পকে ব্যক্তিগতভাবে উষ্ণ চিঠি লিখে দ্বিতীয়বার রাষ্ট্রীয় সফরের আমন্ত্রণ জানাতে হয়েছে, তেমনি কানাডায় এখন তাকে ট্রাম্পবিরোধী বার্তাও দিতে হচ্ছে।
এক রাজকীয় সূত্র বলেছে, ‘রাজা দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন এবং কূটনৈতিক ভারসাম্য রক্ষায় দক্ষ। বিশ্বজুড়েই রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে তার মর্যাদা রয়েছে। বিশ্ব নেতাদের সঙ্গেও তার সম্পর্ক ভাল।’
অন্যদিকে ২০২৫ সালে কানাডা জি–৭ গোষ্ঠীর নেতৃত্ব দিচ্ছে। কানাডার আলবার্টায় শীর্ষ সম্মেলন শুরু হবে ১৫ জুন। চলবে ১৭ জুন পর্যন্ত।
কানাডা ইতিমধ্যেই এই সম্মেলনে যোগ দিতে আমন্ত্রণ জানিয়েছে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লদোমির জেলেনস্কিকে। গত সপ্তাহে হোয়াইট হাউস থেকে বলা হয়, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবেন। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও কানাডা ছাড়া এই গোষ্ঠীর বাকি সদস্য দেশ হলো ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি ও জাপান।