অসুস্থ বন্যহাতিকে চিকিৎসা দিয়ে প্রশংসায় ভাসছে বন বিভাগ

0

শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার গারো পাহাড়ে গুরুতর আহত একটি মাদি বন্যহাতিকে চিকিৎসা দিয়ে বন বিভাগ ব্যাপক প্রশংসা অর্জন করেছে। প্রায় ১০ থেকে ১২ বছর বয়সী হাতিটির পায়ে গুরুতর ক্ষত দেখা দিলে বন বিভাগ ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ বিভাগের যৌথ উদ্যোগে ঢাকা থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এনে বৃহস্পতিবার (১ মে) চিকিৎসা প্রদান করা হয়।

নালিতাবাড়ী উপজেলার নয়াবিল ইউনিয়নের দাওধারা কাটাবাড়ি পাড়া এলাকার গারো পাহাড়ের অভ্যন্তরে এই চিকিৎসা কার্যক্রম পরিচালিত হয়। আহত হাতিটিকে অচেতন করে তার ক্ষতস্থানে ড্রেসিং ও অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগসহ প্রয়োজনীয় চিকিৎসা শেষে সন্ধ্যায় আবার বনে ছেড়ে দেওয়া হয়।

জানা যায়, হাতিটিকে প্রায় ৩-৪ মাস আগে স্থানীয় কেউ বল্লম জাতীয় অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে। ফলে ক্ষতস্থানে পচন ধরে ও গভীর ক্ষতি হয়। ভেটেরিনারি চিকিৎসকরা জানান, আঘাতের গভীরতা ছিল প্রায় ৬ ইঞ্চি এবং দেহের গুরুত্বপূর্ণ টিস্যুগুলো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সম্প্রতি হাতিটি চলাফেরাও করতে পারছিল না। তবে চিকিৎসকদের ধারণা, যথাযথ নজরদারির মধ্যে থাকলে হাতিটি দ্রুত সেরে উঠবে।

এ ঘটনার খবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে অসংখ্য নেটিজেন বন বিভাগের এ মানবিক উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করেন।

বন বিভাগ সূত্র জানায়, গারো পাহাড় এলাকায় শতাধিক বন্যহাতি কয়েকটি উপদলে বিভক্ত হয়ে ধানক্ষেত ও কাঠান জমিতে ঘোরাফেরা করে। এতে ফসল ও বাড়িঘরের ক্ষতি হওয়ায় স্থানীয়রা প্রতিরোধ গড়ে তোলে। কেউ কেউ বৈদ্যুতিক ফাঁদ কিংবা দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হাতিগুলোর ওপর আক্রমণ চালায়।

আহত হাতিটিকে প্রথম দেখতে পান দাওধারা কাটাবাড়ি এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা। পরে তারা বন বিভাগকে খবর দিলে বন কর্মকর্তা ও চিকিৎসক দলের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছান এবং চিকিৎসা কার্যক্রম চালান।

চিকিৎসা কার্যক্রমে নেতৃত্ব দেন গাজীপুর সাফারি পার্কের ভেটেরিনারি সার্জন ডা. মো. মোস্তাফিজুর রহমান। সঙ্গে ছিলেন নালিতাবাড়ী প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ভেটেরিনারি সার্জন ডা. সাকিব হোসেন সাগর, গাজীপুর সাফারি পার্কের ল্যাব টেকনিশিয়ান আতিকুল ইসলাম ভূঁইয়া, সহকারী টেকনিশিয়ান মোস্তফা কামাল এবং বন বিভাগের একাধিক কর্মকর্তা।

বন বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, আহত হাতিটির ওপর নিয়মিত পর্যবেক্ষণ চালানো হবে এবং প্রয়োজন হলে আবারও চিকিৎসা দেওয়া হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here