বিশ্বে ছড়িয়ে থাকা প্রবাসীরা নিজগুণে নিজের দেশকে পরিচিতি করছেন। কাজের পাশাপাশি কেউ কেউ হচ্ছেন উদ্যোক্তা। পাচ্ছেন খ্যাতিও। দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার উদীয়মান অর্থনীতির দেশ মালয়েশিয়া। দেশটিতে প্রায় ১৫ লাখ বাংলাদেশির বসবাস। মালয়েশিয়া-বাংলাদেশ সরকারের বিরাজমান সু-সম্পর্কের মাধ্যমে প্রবাসী বাংলাদেশিরা সফলতা অর্জন করছেন কর্মক্ষেত্রে।
এমনই একজন প্রবাসী বাংলাদেশী এবং মালয়েশিয়ান এর যৌথ উদ্যোগে রাজধানী কুয়ালালামপুর শহর থেকে ৬৫ কিলোমিটার দূরে সেলাঙ্গর রাজ্যের বানতিং এলাকায় গড়ে তুলেছেন আধুনিক পদ্ধতিতে তাইয়্যিব রেঞ্চ নামে আধুনিক গরুর খামার। ২০২২ সালের শুরু থেকে বিশ্ব বিখ্যাত আমেরিকান ব্রাহমাসহ বিভিন্ন উন্নত জাতের গরুর খামার করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন বাংলাদেশী প্রবাসী এ উদ্যোক্তা।
নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সুন্দর পাম বাগানের মাঠে গড়ে তুলেছেন বিশ্ব বিখ্যাত কয়েক শতাধিক গরু নিয়ে একটি খামার। মালয়েশিয়ান ও প্রবাসী বাংলাদেশিরা খামার দেখতে প্রতিদিন ভিড় জমাচ্ছেন।
মালয়েশিয়ান কমিউনিটির রীতি অনুযায়ী এই খামারের গরু প্রদর্শন, গরু পছন্দ করে কোরবানির আগেই এসব গরু কেনার জন্য সম্প্রতি ‘কোরবান কার্নিভাল’তাইয়িব রেঞ্চ শুরু করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মালয়েশিয়ান ও বাংলাদেশী কমিউনিটির নেতৃবৃন্দ। মালয়েশিয়ায় এই ধরনের ব্যতিক্রমী অনুষ্ঠানের আয়োজনে মালয়েশিয়ান ও বাংলাদেশীরাও মুগ্ধ।
রবিবার সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় কোম্পানীর সৌজন্যে চলছে ঈদুল ফিতর ওপেন হাউজ ডে। অনুষ্ঠানে আগত সকল অতিথিদের বাংলাদেশী ও মালয়েশিয়ান খাদ্য সামগ্রী দিয়ে আপ্যয়ন করা হয়। মালয়েশিয়ায় কোরবানির গরু কেনার জন্য সাধারনত কোন গরুর হাট বাজার বসানো হয় না। স্বাভাবিকভাবে নির্দিষ্ট মসজিদ ও খামারে পশু কোরবান করা হয়। খামারের মালিক ও ক্রেতার সমঝোতার ভিত্তিতে নির্দিষ্ট দিন, তারিখ নির্ধারণ করে গরু পছন্দ ও চুক্তি স্বাক্ষরের অনুষ্ঠান করা হয়ে থাকে। এখানে আগত মালয়েশিয়ান এবং বাংলাদেশীরা স্বপরিবারে বিভিন্ন প্যাকেজে কোরবানীর জন্য গরু পছন্দ করা ও মুল্য পরিশোধ করার জন্য চুক্তিবদ্ধ হন।
এই প্রবাসীর খামারে রয়েছে সর্বনিম্ন এক লাখ টাকার দেশী গরু থেকে ১০ লাখ টাকার ১ হাজার কেজি ওজনের ব্রাহমা, ক্রস ব্রাহমা, বেলজিয়াম ব্লু, ফ্রান্সিস লেবুচিনি, ফিজিয়ান, ইন্দো – মালয়েশিয়ান প্রায় শতাধিক গরু। কোরবানির জন্য আদর্শ গরু উৎপাদনের লক্ষ্যে আধুনিক প্রযুক্তি ও অর্গানিক পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়েছে।
আগামী ৩০ মে থেকে ৮ জুন পর্যন্ত রাজ্যের শাহ আলমে এই প্রথম তাইয়্যিব রেঞ্চ এর উদ্যোগে চলবে ১০ দিনব্যাপী কার্নিভাল কোরবান মেলা। মেলায় প্রদর্শন করা হবে বিভিন্ন প্রজাতির গরু। যেখান থেকে পছন্দের গরু কেনা কোরবানী দেওয়ার ব্যবস্থাও থাকবে বলে জানিয়েছেন তাইয়্যিব রেঞ্চ এর কর্তৃপক্ষ।
এবিষয়ে প্রবাসী ব্যবসায়ী নুর মোহাম্মদ ভূইয়া বলেন, আগামী কোরবানি উপলক্ষে কোরবানিসহ বিভিন্ন প্যাকেজ এর আওতায় ১ লাখ ১০ হাজারের ২০০ কেজির গরু থেকে শুরু করে ১০ লাখ টাকার ১ হাজার কেজি ওজনের বিদেশি উন্নত জাতের গরু এখানে পাওয়া যাবে। কোরবানির জন্য মালয়েশিয়ান স্থানীয় ও প্রবাসীরা এখনই গরু কিনে রাখতে পারে এবং চুক্তি অনুযায়ী কোরবানি পর্যন্ত যার দেখভাল করবে খামার কর্তৃপক্ষ। খামারের গরু পালন ও ২৪ ঘণ্টা দেখাশুনার জন্য রয়েছে ট্রেনিংপ্রাপ্ত একদল তরুণ কর্মী। গরুর খাবারের তালিকায় রয়েছে খৈল, ভুষি, গাজর, শাকসবজি, এ্যাভোকাডোসহ বিভিন্ন ফলমূল।