সৌন্দর্যে মোহিত করে রাখলেও, প্রাণীর জন্য রক্তকরবী গাছ হয়ে উঠতে পারে মরণফাঁদ। গোলাপি লিপস্টিক মাখা ফুলের মতো দেখতে এই গাছের সৌন্দর্য যতই নজর কাড়ুক, এর প্রতিটি অংশ—পাতা, বাকল, ফুল, ফল—সবই বিষে ভরা।
রংপুরসহ দেশের সর্বত্র এখন রক্তকরবী ফুলে ফুলে ছেয়ে গেছে। তবে গাছটি মানবদেহের জন্য যেমন ক্ষতিকর, প্রাণীদের জন্যও তেমনি হুমকিস্বরূপ। গাছটি থেকে নির্গত সাদা রঙের ল্যাটেক্স বা দুধের মতো তরল পদার্থ গ্রহণ করলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
রক্তকরবী ও শ্বেতকরবী বাংলা সাহিত্যেও বিশেষভাবে জায়গা করে নিয়েছে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘রক্তকরবী’ নাটকের নন্দিনী যেমন পাঠকের কল্পনার রঙিন চরিত্র, বাস্তবে তেমনি এই ফুলও সৌন্দর্যে বিমোহিত করে। কিন্তু এর পেছনের বিষাক্ত সত্যটা অনেকেই জানেন না।
বাংলা একাডেমির সহপরিচালক এবং বেগম রোকেয়া স্মৃতিকেন্দ্র, পায়রাবন্দ রংপুরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কৃষিবিদ আবিদ করিম মুন্না জানান, রক্তকরবীর শুকনো পাতা বা শাখা যদি গবাদি পশুর খাদ্যে মিশে যায়, তাহলে বিষক্রিয়ার কারণে প্রাণঘাতী পরিণতি ঘটতে পারে। তিনি বলেন, ‘গাছটির প্রতিটি অংশেই বিষ রয়েছে, যা মানব ও প্রাণীদেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।’
তবে এখানেই শেষ নয়। তিনি জানান, রক্তকরবীর একটি প্রজাতি নিয়ে বর্তমানে ক্যান্সারের ওষুধ তৈরির গবেষণা চলছে। এই গবেষণার ফলাফল ইতোমধ্যে পরীক্ষামূলক ধাপে পৌঁছেছে, যা ভবিষ্যতে মানবদেহে প্রয়োগের সম্ভাবনা তৈরি করছে।
গাছটির যতই বিষাক্ত গুণ থাকুক না কেন, অক্সিজেন সরবরাহে এটি দারুণ ভূমিকা রাখে। সেইসঙ্গে এর পুষ্প ও ইনফ্লোরোসেন্স পোকামাকড় দমনেও সহায়ক। উষ্ণ আবহাওয়ায় সারা বছরজুড়েই ফুল ফোটে। তাই শোভাবর্ধক হিসেবে বাগানবাড়ির আঙিনায় এর ব্যবহার বেশ জনপ্রিয়।