বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মনোয়ার হোসেনের চড়ে কান ফেটেছে উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ মিজানুর রহমানের। বুধবার দুপুরে ফকিরহাট সদরের কাঠালতলা মোড়ে এ ঘটনা ঘটে।
সূত্র জানিয়েছে, ঘটনার পর ভুক্তভোগী শেখ মিজানকে প্রথমে ফকিরহাট হাসপাতালে নেওয়া হয়। কিন্তু সেখানে তার কান থেকে রক্তক্ষরণ বন্ধ না হওয়ায় স্বজনেরা তাকে সন্ধ্যায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।
ভুক্তভোগী আওয়ামী লীগ নেতা সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান শেখ মিজানের ছোটভাই শেখ সিরাজুল ইসলাম জানান, বুধবার দুপুরে শেখ মিজানুর রহমান তার গরুর খামারে যাওয়ার পথে কাঠালতলা মোড়ে তার মোটরসাইকেলে থাকা ফুলঝাড়ু ইউএনওর গাড়িতে লাগে। এই ঘটনায় ইউএনওর গাড়িচালক বাদশা আলম তার ভাইকে ধমক দেয়। একপর্যায়ে ইউএনও গাড়ি থেকে নেমে লোকজনের সামনে মিজানুর রহমানকে মারধর শুরু করেন। এরপর ইউএনও জোরপূর্বক মিজানুর রহমানকে গাড়িতে তুলে পাইকপাড়া আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত নিয়ে যান। তাকে গাড়িতে অবরুদ্ধ রেখে ইউএনও একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেন। এই ঘটনা এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় জনগণ জড়ো হয়ে প্রতিবাদ করতে থাকে। প্রায় এক ঘণ্টা পর মিজানুর রহমানকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
ভুক্তভোগীর ভাই সিরাজুল ইসলাম বলেন, ভাইকে ছেড়ে দেওয়ার পর আহত অবস্থায় ফকিরহাট উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করি। কিন্তু ইউএনওর চড়ে ফেটে যাওয়া কান থেকে রক্তক্ষরণ না থামায় তাকে সন্ধ্যায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ফকিরহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মনোয়ার হোসেন ঘটনা অস্বীকার করে জানান, তার গাড়ির সাথে মিজানুর রহমানের মোটরসাইকেলের ধাক্কা লাগলে তিনি তাকে তার সরকারি গাড়িতে উঠতে বলেন। এ সময় মিজানুর রহমান গাড়িতে উঠতে অস্বীকার করেন। পরে তাকে গাড়িতে তুলে নেওয়া হয়। মিজানুর রহমানের পরিচয় পাওয়ার পর দুঃখ প্রকাশ করে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান বলেন, উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যানের গায়ে হাত তোলা একজন উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তার কাছ থেকে কাম্য নয়। কেউ আইন হাতে তুলে নিতে পারেন না। কেউ অপরাধ করলে আইনের বিধি-বিধান অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হয়। প্রশাসনের কোনো কর্মকর্তা আইন হাতে তুলে নিতে পারেন না। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।