আদালত প্রাঙ্গণ থেকেও গ্রেফতার, যুক্তরাষ্ট্রে বিপদে অভিবাসীরা

0

অভিবাসনবিরোধী অভিযানে জটিলতা তৈরি করছে মনে করে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন হোয়াইট হাউজের ৩টি দফতরের বিলুপ্তি ঘটাতে যাচ্ছে। ২১ মার্চ শুক্রবার হোমল্যান্ড সিকিউরিটি মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রী ট্রিসিয়া ম্যাকলোলিন জানান, এগুলো হচ্ছে ‘দ্য অফিস ফর সিভিল রাইটস অ্যান্ড সিভিল লিবার্টিজ’, ‘দ্য অফিস অব দ্য ইমিগ্রেশন ডিটেনশন ওম্বাডসম্যান’ এবং ‘দ্য অফিস অব দ্য সিটিজেনশিপ অ্যান্ড ইমিগ্রেশন সার্ভিসেস ওম্বাডসম্যান’। 

এসব দপ্তরের দায়িত্ব হচ্ছে হোয়াইট হাউজের অভ্যন্তরে থেকেই অভিবাসনের কার্যক্রমে কেউ ক্ষমতার অপব্যবহার করছে কিনা কিংবা অযথা অভিবাসীদের হয়রানি করা হচ্ছে কিনা তা খতিয়ে দেখা। 

ট্রিসিয়া ম্যাকলোলেন বলেছেন, তদারকির নামে ট্রাম্প প্রশাসনের চলমান অবৈধ অভিবাসী গ্রেফতার ও বহিষ্কারের অভিযানকে বাধাগ্রস্ত করছে বলেই দপ্তর তিনটির প্রয়োজনীয়তার ফুরিয়ে গেছে। 

হোমল্যান্ড সিকিউরিটি মন্ত্রণালয়ের দুই লাখ ৬০ হাজার কর্মচারির মধ্যে এসব দপ্তরে রয়েছেন মাত্র ৩০০ কর্মচারি। অভিবাসীদের আটকের পর ডিটেনশন সেন্টারে ন্যূনতম সুযোগ-সুবিধা দেয়া হচ্ছে কিনা, আটককৃত শিশুরা প্রকৃত সেবা পাচ্ছে কিনা, গ্রিনকার্ড এবং সিটিজেনশিপের আবেদনসমূহ যথাযথভাবে প্রসেস হচ্ছে কিনা তা খতিয়ে দেখার দায়িত্ব পালন করছিল দপ্তরসমূহ। তারা রিপোর্ট সাবমিট করতো কংগ্রেসের উভয় কক্ষের ওভারসাইট কমিটিতে। বহিষ্কারের ঝুঁকিতে থাকা অভিবাসীরা (যারা সরকারী আইনজীবী পান না) আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ পাচ্ছেন কিনা-তাও খতিয়ে দেখতেন এসব কর্মচারিরা।

হোমল্যান্ড সিকিউরিটি মন্ত্রণালয়ের আরো ২০টি সংস্থার কাজকর্মের তদারকির অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করেছে ‘দ্য অফিস ফর সিভিল রাইটস অ্যান্ড সিভিল লিবার্টিজ’। এসবের মধ্যে ছিল প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা, সাইবার হুমকি ও সন্ত্রাসবাদ-যা নাগরিকদের নিরাপত্তার জন্য চরম হুমকি স্বরূপ। এয়ারপোর্টে হুইল চেয়ারের প্যাসেঞ্জারের সাথে খারাপ আচরণের অভিযোগ নিয়েও কাজ করতো এই দপ্তর। 

জানা গেছে, কেবল গুরুতর অপরাধী অবৈধ অভিবাসীদের গ্রেফতার ও বহিষ্কারের কথা বলা হলেও ঢালাওভাবে গ্রেফতার অভিযান পরিচালনার অভিপ্রায়ে দপ্তর ৩টির বিলুপ্তির পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। ট্রাম্পের এই অভিযানে গ্রেফতার হওয়া অভিবাসীরা বিদ্যমান রীতি অনুযায়ী বহিষ্কারের আগে আইনি লড়াইয়ের সুযোগ পাচ্ছেন না। এমন বেশ কয়েকশত অভিবাসীকে ইতোমধ্যেই বহিষ্কারের বিরুদ্ধে আদালত নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল কিন্তু সেটি আমলে না নিয়ে বিশেষ প্লেনে তাদেরকে নিজ নিজ দেশে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। এ নিয়ে বিচারক উষ্মাও প্রকাশ করেছেন। 

মুখপাত্রী ম্যাকলোলিন উল্লেখ করেছেন, এসব অফিসের কর্মীরা ৬০ দিনের মধ্যে অন্য দপ্তরে একীভূত হবেন। সেটি সম্ভব না হলে তারা আপনা-আপনি বরখাস্ত বলে গণ্য হবেন। তিনি বলেন, ট্রাম্প প্রশাসন বদ্ধ পরিকর সীমান্ত সুরক্ষা ও সিটিজেনদের নিরাপত্তা নিয়ে। তাই যারা এক্ষেত্রে বাধা বলে বিবেচিত হবেন তাদেরকেই বরখাস্তের সম্মুখীন হতে হচ্ছে। গত নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের অন্যতম অঙ্গিকার ছিল অপরাধী অবৈধ অভিবাসী বহিষ্কারের, তা যথাযথভাবে সম্পাদনে চেষ্টা চলছে। 

এদিকে, শুক্রবার ফ্লোরিডা থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী পূর্ব নির্দ্ধারিত সময় অনুযায়ী এদিন কিউবার ১৮ জন অভিবাসী ইমিগ্রেশন কোর্টে হাজিরা দিতে এসে গ্রেফতার হয়েছেন। যাদের বৈধভাবে বসবাসের ন্যূনতম কোন ডক্যুমেন্ট নেই তাদেরকেই গ্রেফতার ও বহিষ্কারের অভিযান চলছে। সে কারণেই ওই ১৮ জনকে আদালতের বারান্দা থেকে গ্রেফতারের পর বহিষ্কারের প্রক্রিয়া অবলম্বন করা হয় বলে জানিয়েছেন ট্রাম্পের ইমিগ্রেশন এটর্নি মার্ক প্রদা। তিনি বলেন, এই ১৮ জনের আগে আরো কয়েকজনকে গ্রেফতারের ঘটনা ঘটেছে-যারা ইমিগ্রেশন কোর্টে হাজিরা দিতে এসেছিলেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here