ভিসা থাকা সত্ত্বেও গত শুক্রবার ট্রাম্প প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কার করেছে রোড আইল্যান্ডে অবস্থিত ব্রাউন ইউনিভার্সিটির কিডনি প্রতিস্থাপন বিষয়ের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক-শিক্ষক রাশা আলাওহেইকে (৩৪)। সহকারী ইউএস অ্যাটর্নি মাইকেল স্যাডি সোমবার বোস্টনের এক ফেডারেল আদালতকে লেবানিজ রাশাকে বহিষ্কারের কারণ হিসেবে জানিয়েছেন যে, হিজবুল্লাহ গ্রুপের নেতা হাসান নাসরুল্লাহর ছবি পাওয়া যায় তার মুঠোফোনে। হিজবুল্লাহ গ্রুপকে দুই দশক আগে যুক্তরাষ্ট্র নিষিদ্ধ করেছে ধর্মীয় জঙ্গি সংগঠন হিসেবে।
গত বৃহস্পতিবার নিজ দেশ থেকে প্রত্যাবর্তনের সময় বোস্টন বিমানবন্দরে রাশাকে জিজ্ঞাসাবাদের সময় কাস্টমস অ্যান্ড বোর্ডার প্রটেকশনের (সিবিপি) এজেন্টরা তার ফোনে হাসান নাসরুল্লাহর ভিডিও-বক্তব্য ও ছবি দেখার পরই তাকে আটক করে। আটকের এ সংবাদে তার সহকর্মীরা ফেডারেল আদালতে আবেদন জানিয়েছিলেন। সে অনুযায়ী আদালত তার বহিষ্কারাদেশ স্থগিত করে এবং কেন অবিলম্বে তাকে মুক্তি দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সিবিপি আদালত থেকে অফিশিয়ালি জানতে না পেরে শুক্রবার তাকে প্যারিসমুখী একটি ফ্লাইটে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে সোমবার অ্যাটর্নি মাইকেল স্যাডি আদালতকে জানিয়েছেন।
হিজবুল্লাহর শীর্ষনেতা নাসরুল্লাহর ছবি রাশা ডিলিট করলেও তা রয়ে যায় ফোনে। জিজ্ঞাসাবাদের সময় চিকিৎসক রাশা সিবিপি কর্মকর্তাকে জানান যে, গত মাসে নাসরুল্লাহর জানাজায় অংশ নিতে তিনি লেবাননে গিয়েছিলেন। নাসরুল্লাহকে তিনি শ্রদ্ধা করেন ধর্মীয় নেতা হিসেবে, রাজনৈতিক কারণে নয়।
জানা গেছে, বিশেষভাবে দক্ষ চিকিৎসক হিসেবে ভিসাধারী ছিলেন রাশা। এমন অবস্থায় কেন তাকে বিমানবন্দরে আটক করা হয়েছে, তা জানতে চেয়েছিলেন ফেডারেল আদালতের বিচারক লিও সরোকিন। শুধু তাই নয়, ভিসাধারীকে গ্রেফতারের আগে কেন আদালতের অনুমতি নেওয়া হয়নি, তাও জানতে চেয়েছিলেন এবং মামলাটি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত রাশাকে বহিষ্কারের পদক্ষেপ স্থগিতের আদেশ দিয়েছিলেন।
সোমবার ছিল শুনানির তারিখ। সে সময় সরকারকে আরও এক সপ্তাহের সময় দেওয়া হয়েছে রাশার ব্যাপারে বিস্তারিত জানাতে। এমন অবস্থায় বোস্টনের লগোন বিমানবন্দরের সিবিপি কর্মকর্তা জন ওয়ালেস আদালতকে অবহিত করেন যে, রাশাকে বহিষ্কারের স্থগিতাদেশের অফিশিয়াল নির্দেশ তারা পাননি শুক্রবার রাতে এয়ার ফ্যাঞ্চের ফ্লাইটটি প্যারিসের উদ্দেশে উড্ডয়নের আগ পর্যন্ত।
জানা গেছে, ২০১৮ সালে স্টুডেন্ট ভিসায় যুক্তরাষ্ট্রে এসেছিলেন রাশা। তিনি ওহাইয়ো ইউনিভার্সিটিতে নেফরোলজি ফেলোশিপ পেয়েছিলেন। এরপর তিনি একই ধরনের আরেকটি প্রোগামে ইউনিভার্সিটি অব ওয়াশিংটনেও লেখাপড়া করেছেন। এ ছাড়া বিশ্বখ্যাত ইয়েল ইউনিভার্সিটিতেও ইন্টারনাল মেডিসিনে উচ্চতর ডিগ্রি নিয়ে বিশেষ দক্ষকর্মীর ভিসায় ব্রাউন ইউনিভার্সিটিতে শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিত ছিলেন।