ফিলিস্তিনের যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকার বাসিন্দাদের সিরিয়ায় পাঠানোর পরিকল্পনা করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল। এছাড়াও তাদেরকে সোমালিয়া ও সুদানেও পুনর্বাসনের বিষয়ে ভাবছে দেশ দুটি।
বিভিন্ন সূত্রের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে এমনটিই দাবি করা হয়েছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একটি বিতর্কিত পরিকল্পনা বাস্তবায়নে গোপনে কাজ করছে ইসরায়েল। এই পরিকল্পনার আওতায় গাজার ২০ লাখের বেশি জনগণকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে।
ট্রাম্প গাজাকে মার্কিন প্রশাসনের আওতায় নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন, যেখানে একটি দীর্ঘমেয়াদি পুনর্গঠনের মাধ্যমে অঞ্চলটিকে একটি রিয়েল এস্টেট প্রকল্প হিসেবে গড়ে তোলার কথা বলা হয়েছে। তবে বিশ্লেষকরা একে অবাস্তব বলে মনে করছেন এবং মার্কিন মিত্র আরব দেশগুলো গাজাবাসীদের বাস্তুচ্যুতির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হোয়াইট হাউস সিরিয়ার নতুন সরকারের সঙ্গে তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে যোগাযোগ করেছে। মধ্যপ্রাচ্যের একটি সূত্র জানিয়েছে, দামেস্ককে এই পরিকল্পনার বিষয়ে অবহিত করা হয়েছে। তবে সিরিয়ার এক শীর্ষ কর্মকর্তা দাবি করেছেন, এ বিষয়ে তারা কোনও আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ পাননি।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর দফতর এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
ইসরায়েলি নেতারা সিরিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারার ওপর আস্থা রাখেন না বলে জানা গেছে। আল-শারা’র নেতৃত্বাধীন বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে দীর্ঘদিনের প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করে।
তবে আহমেদ আল-শারার সরকার সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে এবং ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সরাসরি কোনও হুমকি দেয়নি।
২০১৭ সালের জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, ইতোমধ্যেই সিরিয়ায় সাড়ে চার লাখের বেশি ফিলিস্তিনি শরণার্থী বসবাস করছে।
একজন ইসরায়েলি কর্মকর্তা টাইমস অব ইসরায়েলকে জানিয়েছেন, পুনর্বাসনের বিষয়ে মূল আলোচনা যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকেই এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে। তবে কোন কোন দেশকে এ বিষয়ে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, তা তিনি প্রকাশ করেননি।
সোমালিয়ার মার্কিন রাষ্ট্রদূত জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র বা ইসরায়েল সোমালিয়ার সরকারের সঙ্গে এ বিষয়ে যোগাযোগ করেনি। তবে অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল সোমালিল্যান্ডের সঙ্গেও আলোচনা করেছে। সোমালিল্যান্ড ইতোমধ্যে এই প্রস্তাব প্রত্যাখান করেছে। সূত্র: সিবিএস নিউজ, টাইমস অব ইসরায়েল, ওয়াইনেট নিউজ