পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমাদ শরীফ চৌধুরী সম্প্রতি দেশটির বেলুচিস্তান প্রদেশে ট্রেন নেড়েছে ও অন্যান্য সন্ত্রাসী কার্যক্রমের জন্য ভারতকে দায়ী করেছেন। গতকাল শুক্রবার তিনি ভারতকে বেলুচিস্তানে ‘সন্ত্রাসবাদের মূল পৃষ্ঠপোষক’ বলে অভিযুক্ত করেন। সৌদি আরবের সংবাদমাধ্যম আরব নিউজের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
বেলুচিস্তানের সশস্ত্র সংগঠন বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) গত মঙ্গলবার দুপুরে প্রদেশের দুর্গম বোলান পাহাড়ি এলাকার মাশকাফে রেললাইনে বিস্ফোরণ ঘটায় এবং জাফর এক্সপ্রেস নামে একটি যাত্রীবাহী ট্রেনে হামলা চালায়। পরদিন নিরাপত্তা বাহিনী অভিযান চালিয়ে জিম্মিদের মুক্ত করে এবং ৩৩ জন আক্রমণকারীকে হত্যা করে।
এই প্রসঙ্গে গতকাল শুক্রবার পাকিস্তানের ফেডারেল রাজধানী ইসলামাবাদে বেলুচিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী সরদার সরফরাজ বুগতির সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে সামরিক মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমাদ শরীফ চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের বুঝতে হবে যে, বেলুচিস্তানে এই সন্ত্রাসী হামলা এবং এর আগের ঘটনাগুলোর মূল পৃষ্ঠপোষক হলো আমাদের পূর্ব দিকের প্রতিবেশী (ভারত)।’ তবে, নয়া দিল্লি অতীতে এ ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
ভারতীয় গণমাধ্যমের ভূমিকা নিয়ে পাকিস্তানের অভিযোগ
লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমাদ শরীফ চৌধুরী ভারতীয় গণমাধ্যমের সমালোচনা করে বলেন, তারা ‘জাফর এক্সপ্রেস হামলাকে গৌরবমণ্ডিতভাবে উপস্থাপন’ করেছে এবং জিম্মি সংকট চলাকালে বাহিনী যখন পরিস্থিতি মূল্যায়ন করছিল, তখন তারা তথ্যযুদ্ধ চালিয়েছে।
ভারতীয় গণমাধ্যমে বিএলএ-এর শেয়ার করা ছবি-ভিডিওর ব্যাপক প্রচারের বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ভারতীয় গণমাধ্যম আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর শেয়ার করা ভিডিও ব্যবহার করছিল। তারা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে তৈরি ছবি এবং পুরোনো ভিডিওও ব্যবহার করেছে হামলাটিকে আন্তর্জাতিকভাবে গৌরবমণ্ডিতভাবে প্রচারের জন্য।’
এক প্রশ্নের জবাবে সামরিক মুখপাত্র জানান, উদ্ধার অভিযানে ৩৩ জন আক্রমণকারী নিহত হয়েছে, এবং যাত্রীদের মধ্যে হামলাকারীদের গুলিতে নিহতের সংখ্যা ২১ থেকে বেড়ে ২৬ হয়েছে। তিনি বলেন, ‘নিহত ২৬ জনের মধ্যে ১৮ জন সেনাবাহিনী ও ফ্রন্টিয়ার কর্পসের সদস্য, ৩ জন রেলওয়ে কর্মী এবং বাকি ৫ জন বেসামরিক নাগরিক।’ তিনি আরও জানান, হামলার সময় ফ্রন্টিয়ার কর্পসের আরও পাঁচজন সৈন্য নিহত হয়েছে।