কক্সবাজারে রাখাইনদের জলকেলি উৎসব শুরু

0

রাখাইন সম্প্রদায়ের বর্ষপঞ্জিকা মতে গত রবিবার রাতে শেষ হয়েছে ১৩৮৪ মগীসন। আজ সোমবার শুরু হল রাখাইন নতুন বর্ষ ১৩৮৫ মগীসন। আর এই মগীসনকে বিদায় ও বরণকে সামনে রেখে কক্সবাজারের রাখাইন সম্প্রদায়ের তিন দিনের সাংগ্রাইং পোয়ে বা ঐতিহ্যবাহী জলকেলি উৎসব শুরু হয়েছে।

সোমবার দুপুরে কক্সবাজার শহরের বৌদ্ধ মন্দির সংলগ্ন প্যান্ডেলে এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়েছে। অনুষ্ঠানে রাখাইন ব্যান্ড দলের পরিবেশনায় গান ছাড়াও ঐতিহ্যবাহী নৃত্য পরিবেশন হয়েছে।

কক্সবাজার শহরের রাখাইন পল্লীতে দেখা গেছে, ঢোল-বাজনা, গানে তরুণ-তরুণীসহ বিভিন্ন বয়সের মানুষ শোভযাত্রা সহকারে যাচ্ছে প্যান্ডেলে-প্যান্ডেলে। যেখানে আগে থেকে বসে আছে সারিবদ্ধ তরুণী। শোভাযাত্রা নিয়ে যাওয়া তরুণরা প্যান্ডেলের সামনে গিয়ে কোন একজনকে আগে পানি নিক্ষেপ করে আমন্ত্রণ জানান। ওই আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে তরুণী তরুণকে লক্ষ্য করে পানি নিক্ষেপ করেন। এরপর উভয় পক্ষের মধ্যে চলে পানি নিক্ষেপের খেলা।

রাখাইন তরুণ লা চিং অ্যাং জানান, পুরাতন বর্ষকে বিদায় ও নতুন বছরকে বরণের এই ঐতিহ্যবাহী সামাজিক উৎসব। এ উৎসব ঘিরে তিন দিন ব্যাপী জলকেলি ছাড়াও বাড়িতে বাড়িতে রান্না হচ্ছে নিজস্ব খাবার।

এটাকে প্রাণের উচ্ছ্বাসে মাতিয়ে তোলার উৎসব মন্তব্য করে প্রিয়াংকা রাখাইন জানান, একে অপরের সাথে জল নিক্ষেপ ছাড়াও নিজের মধ্যে সামাজিক বন্ধন ও ঐক্য তৈরিতে এ উৎসব ভূমিকা রাখে।

এ উৎসবের সার্বিক সহযোগিতা প্রদানকারী কক্সবাজার সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের পরিচালক মংছেন লা জানান, এবার কক্সবাজার শহরের রাখাইন পল্লীতে ১৫ টি প্যান্ডেল তৈরি হয়েছে। সার্বিক নিরাপত্তার মধ্যে তিন দিন উৎসব চলবে। এখানে কেবল রাখাইন নয়, অন্যান্য ধর্মের মানুষও আসছেন। যার কারণে সম্প্রীতির একটি বন্ধনও তৈরি হয়। একই সঙ্গে কক্সবাজার জেলার মহেশখালী, ঈদগাঁও, টেকনাফ, রামু, চকরিয়া, পেকুয়ার উখিয়ার রাখাইন পল্লী ঘিরে শতাধিক প্যান্ডেলে তিন দিনব্যাপী এ উৎসব চলবে।

রাখাইনদের তিন দিনের জলকেলি উৎসব সার্বিক সফল ও শান্তিপূর্ণভাবে শেষ করতে সকল প্রকার কাজ করছেন বলে জানিয়েছেন কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুল ইসলাম। তিনি জানান, জলকেলি উৎসবটি রাখাইনদের হলেও এটি কালক্রমে এ অঞ্চলের মানুষের ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতির অংশ হয়ে উঠেছে। এর জন্য পুলিশ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে রয়েছেন। একই সঙ্গে গোয়েন্দা নজরদারিও বাড়ানো হয়েছে। আশা করছি শান্তিপূর্ণভাবে এই উৎসবের শেষ করা সম্ভব হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here