বিটরুট। কুমিল্লার বিভিন্ন এলাকায় এটি জুস ফসল হিসেবে পরিচিত। বিশেষ করে রোজার ইফতারে বিটরুটের জুস জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। এদিকে ভালো দাম পাওয়ায় বিটরুট চাষে কৃষকদের মাঝে আগ্রহ বাড়ছে।
কৃষি অফিস সূত্র জানায়, বিটরুট গাঢ় গোলাপি রঙের সবজি। এ সবজির উৎপাদন সারা বছরেই হয়ে থাকে। বিভিন্ন পুষ্টি ও ঔষধিগুণ সম্পন্ন এ সবজিটিকে সুপারফুডও বলা হয়। কুমিল্লার বুড়িচং,সদর দক্ষিণ,দেবিদ্বার,বরুড়া ও মুরাদনগরসহ বিভিন্ন উপজেলায় বিটরুটের চাষ হচ্ছে।
সরেজমিন বুড়িচং উপজেলার হোসেনপুর এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, অন্য সবজির জমির পাশে মাঝে বিটরুটের চাষ করা হয়েছে। চাষ পদ্ধতি অনেকটা মুলা ও গাজরের মতো। কৃষক মাসুম বিল্লাহ জমি থেক বিটরুট তুলছেন। তিনি পাইকারি প্রতি কেজি ৬০ টাকা দরে বিক্রি করবেন। খুচরা বাজারে তা বিক্রি হবে ৮০ টাকা।
মাসুম বিল্লাহ বলেন, অনলাইনে দেখে ১০ শতক জমিতে বিটরুটের চাষ করেছি। কৃষি অফিসের পরামর্শ নেয়ায় ভালো ফসল হয়েছে। চাষে ৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে, ২০ হাজার টাকার মতো ফসল বিক্রি হয়েছে। আগামী বছর আরো বেশি জমিতে চাষ করবো।
স্থানীয় উদ্যোক্তা আবদুর রব ও নুরুল আমিন বলেন, অপরিচিত বিটরুট ফসলটির চাষ দেখে প্রথমে আমরা বিস্মিত হয়েছি। বাজারে এর ভালো চাহিদা রয়েছে। এর জুস ও সালাদ খেতে দারুণ। আমরাও আগামীতে এই ফসল চাষ করবো।
উপজেলা কৃষি অফিসার আফরিণা আক্তার বলেন, জুস ও সালাদ হিসেবে বিটরুটের বেশ চাহিদা রয়েছে। বিভিন্ন সবজির সঙ্গে রান্না করেও খাওয়া যায়। বিটরুটের জুসে তাৎক্ষণিক শক্তি পাওয়া যায়। বিটরুট কাঁচা এবং রান্না করে দুভাবেই খাওয়া যায়। উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের জন্য বিটরুট অনেক উপকারী। রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। চোখের সমস্যার ঝুঁকি কমায়। হজম ক্ষমতা উন্নত করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা প্রতিরোধ করে। মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করে। কোলন ক্যানসার প্রতিরোধেও বিটরুট কার্যকরী।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুমিল্লার উপ-পরিচালক আইউব মাহমুদ বলেন, উচ্চমূল্যের ও উচ্চমানের ফসল উৎপাদনে কৃষকরা আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। তার মধ্যে বিটরুট,সিয়াসিড,কেনুয়া উল্লেখযোগ্য। ভালো দাম পাওয়ায় কৃষকরা ব্যতিক্রমী ফসল চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন। আমরা উদ্যোক্তাদের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। এসব ফসলের বীজের কিছু সংকট রয়েছে। সেটা সহজলভ্য করারও চেষ্টা করছি।