ভারতে আসছে মার্কিন ধনকুবের ইলন মাস্কের দ্রুতগতির স্যাটেলাইট ইন্টারনেট। এ লক্ষ্যে ভারতের দুটি প্রধান টেলিকম কোম্পানি- ভারতী এয়ারটেল ও রিলায়েন্স জিও, মাস্কের প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্স-এর সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।
তবে এই পরিষেবা চালুর জন্য সরকারি অনুমোদন প্রাপ্তির উপর নির্ভর করছে চুক্তি দুটি।
এয়ারটেল, যা ইতোমধ্যে তার ওয়ানওয়েব প্রকল্পের মাধ্যমে স্যাটেলাইট যোগাযোগে দীর্ঘদিনের উপস্থিতি বজায় রেখেছে, এখন ইলন মাস্কের স্টারলিংকের সক্ষমতা ব্যবহার করার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
অন্যদিকে, রিলায়েন্স জিওও স্পেসএক্সের সঙ্গে একই ধরনের চুক্তি করেছে। এই চুক্তির আওতায় জিও তার রিটেইল স্টোর এবং অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে স্টারলিংক সরঞ্জাম বিক্রি করবে এবং ইনস্টলেশন সেবা প্রদান করবে।
স্পেসএক্স-এর প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা গুইন শটওয়েল বলেছেন, আমরা জিও’র ভারতের যোগাযোগ ব্যবস্থাকে এগিয়ে নেওয়ার প্রতিশ্রুতির প্রশংসা করি। আমরা জিও’র সঙ্গে কাজ করতে এবং ভারতের সরকারের অনুমোদন পাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছি, যাতে আরও বেশি মানুষ, প্রতিষ্ঠান এবং ব্যবসায়ীরা স্টারলিংকের উচ্চগতির ইন্টারনেট সেবা গ্রহণ করতে পারে।
দূরবর্তী ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে উচ্চগতির ইন্টারনেট পৌঁছে দেওয়ার জন্য স্টারলিংকের স্যাটেলাইট প্রযুক্তি ইতোমধ্যে বিশ্বব্যাপী আলোচিত। তবে ভারতে এটি চালুর বিষয়ে রাজনৈতিক ও বাণিজ্যিক বিরোধ দেখা দিয়েছে, বিশেষ করে স্যাটেলাইট স্পেকট্রাম বরাদ্দের নিয়ম নিয়ে ইলন মাস্ক ও ভারতীয় ধনকুবের মুকেশ আম্বানির মধ্যে মতবিরোধ তৈরি হয়েছে।
এয়ারটেল ও জিও-এর এই চুক্তি ভারতীয় টেলিকম বাজারে নতুন প্রতিযোগিতার সৃষ্টি করবে, বিশেষ করে স্যাটেলাইট ইন্টারনেট পরিষেবা খাতে। যদিও দুটি চুক্তিই সরকারি অনুমোদনের উপর নির্ভরশীল, তবে স্পেসএক্সকে সরকারের অনুমোদন পেলে দেশের টেলিকম খাতে বিপ্লব ঘটাতে পারে এই সহযোগিতা।
এটি এমন একটি সময় যখন জিও এবং স্পেসএক্স-এর মধ্যে স্যাটেলাইট স্পেকট্রাম বরাদ্দের বিষয়ে এক সংঘাত ছিল। জিও যেখানে নিলামের পক্ষে ছিল, সেখানে ভারতের সরকার মাস্কের পক্ষ নেয়, যা বৈশ্বিক প্রথার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
এখন, এয়ারটেল ও জিও দুই টেলিকম জায়ান্টই শুধু সাধারণ ব্রডব্যান্ড পরিষেবায় নয়, বরং স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবায়ও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে প্রস্তুত।
স্পেসএক্স-এর প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা গুইন শটওয়েল বলেছেন, আমরা এয়ারটেলের সঙ্গে কাজ করতে পেরে আনন্দিত এবং স্টারলিংকের মাধ্যমে ভারতের মানুষের জন্য ডিজিটাল সংযোগের নতুন সম্ভাবনা উন্মোচন করতে চাই।
বর্তমানে ভারতে ইলন মাস্কের বড় ব্যবসায়িক উপস্থিতি নেই। তবে তার বৈদ্যুতিক গাড়ি সংস্থা টেসলা শিগগিরই ভারতীয় বাজারে প্রবেশের পরিকল্পনা করছে। গত মাসে টেসলা ভারতের জন্য কর্মী নিয়োগ শুরু করে, যা মোদির সঙ্গে মাস্কের সাম্প্রতিক বৈঠকের পরপরই ঘটে। সূত্র: রয়টার্স, ইকোনমিক টাইমস, হিন্দুস্তান টাইমস, ইন্ডিয়া টুডে