বিভিন্ন দেশে সাইবার অপরাধের জালে ফেঁসে যাওয়া ৫৪০ ভারতীয় নাগরিককে উদ্ধার করা হয়েছে। তাঁদের দেশে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সোমবার উদ্ধার হওয়া ২৮৩ জনকে নিয়ে ভারত পৌঁছেছে ভারতীয় বিমানবাহিনীর একটি উড়োজাহাজ। মঙ্গলবার পৌঁছেছে আরও একটি ফ্লাইট।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বান্দি সঞ্জয়ের বরাত দিয়ে জানানো হয়েছে, উদ্ধার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে অন্তত ৪২ জন তেলেঙ্গানা ও অন্ধ্রপ্রদেশের বাসিন্দা।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, উচ্চ বেতনের চাকরির প্রলোভনে বিদেশে পাড়ি জমিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু পরে প্রতারকদের খপ্পরে পড়ে থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া, লাওস এবং মিয়ানমারে সাইবার প্রতারণার স্ক্যাম সেন্টারে বিক্রি করে দেওয়া হয়। সেসব স্ক্যাম সেন্টারে তাঁদের ওপর অবর্ণনীয় নির্যাতন চালানো হয় এবং সাইবার অপরাধে জড়াতে বাধ্য করা হয়। পরে, মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অভিযানে তাঁদের উদ্ধার করা হয়।
ভারতীয় দূতাবাস মিয়ানমার ও থাইল্যান্ড কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় তাঁদের দেশে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়। উদ্ধারকৃতদের প্রথমে থাইল্যান্ডের মায়ে সট শহরে আনা হয়, এরপর আকাশপথে দিল্লিতে পাঠানো হচ্ছে।
গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গেলের সাইবার অপরাধের হটস্পট
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গেল (থাইল্যান্ড, লাওস ও মিয়ানমার) অঞ্চল বর্তমানে সাইবার অপরাধের অন্যতম কেন্দ্রস্থল হয়ে উঠেছে।
সম্প্রতি, থাইল্যান্ডে নিখোঁজ হন চীনা অভিনেতা ওয়াং জিং। বহু খোঁজাখুঁজির পরও তাঁর সন্ধান না মেলায় তাঁর প্রেমিকা সামাজিক মাধ্যমে একটি পোস্ট দেন, যা মুহূর্তেই ভাইরাল হয়। বিষয়টি বেইজিং প্রশাসনের নজরে আসলে চীনের চাপে থাই প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা নেয়। এতে মিয়ানমারের সাইবার অপরাধ জগতের ভয়াবহ বাস্তবতা সামনে আসে।
বিদেশে চাকরির জন্য যাওয়ার আগে সেখানে অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাস, নিয়োগ এজেন্ট এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে চাকরির বৈধতা যাচাইয়ের পরামর্শ দিয়েছে ভারত সরকার।
উল্লেখ্য, গত বছরের ডিসেম্বরে হায়দরাবাদ থেকে এক নিয়োগ এজেন্টকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, যিনি ভারতীয় যুবকদের এ ধরনের প্রতারণায় ফাঁসানোর সঙ্গে জড়িত ছিলেন।
সূত্র: এনডিটিভি