বিচারের জন্য হেগের পথে ফিলিপাইনের সাবেক প্রেসিডেন্ট

0

ফিলিপাইনের সাবেক প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতার্তেকে গ্রেপ্তারের পর নেদারল্যান্ডসের হেগে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এই শহরে অবস্থিত আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)-এ তাঁর বিচার হবে। এরই মাঝে তাঁকে বহনকারী বিমানটি ম্যানিলা ছেড়ে গেছে।

এর আগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত থেকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হলে আজ মঙ্গলবার (১১ মার্চ) ম্যানিলা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরেই তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আজ সকালে হংকং থেকে ম্যানিলা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পরপরই ৭৯ বছর বয়সী দুতার্তেকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়। ফিলিপাইনের বর্তমান প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ মার্কোস জুনিয়র নিশ্চিত করেছেন, গ্রেপ্তারের পর দুতার্তেকে বহনকারী বিমানটি দেশের আকাশসীমা ত্যাগ করেছে এবং হেগের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে।

এর আগে দুতার্তের কন্যা সারা দুতার্তে অভিযোগ করেন, তাঁর বাবাকে জোরপূর্বক হেগে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

২০১৬ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট ছিলেন দুতার্তে। এই সময়ে তাঁর নির্দেশে পরিচালিত কঠোর মাদকবিরোধী অভিযানে হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়। এই বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডগুলোকে মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে দেখছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত।

গ্রেপ্তারের পর দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় দুতার্তে বলেন, “আমি কী অপরাধ করেছি? আমি আমার দেশের শান্তি ও জনগণের নিরাপত্তার জন্য যা প্রয়োজন, তা করেছি।” পরে আরেকটি ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, “যদি আমি কোনো অপরাধ করে থাকি, তাহলে আমাকে ফিলিপাইনের আদালতে ফিলিপিনো বিচারকদের দ্বারা বিচার করা হোক। আমি আমার নিজ দেশে কারাবরণ করতে রাজি।”

দুতার্তের গ্রেপ্তারের পরপরই ফিলিপাইনের সুপ্রিম কোর্টে তাঁর পক্ষ থেকে একটি আবেদন দাখিল করা হয়েছে। এতে আইসিসির গ্রেপ্তারি পরোয়ানা কার্যকরের প্রক্রিয়া স্থগিত রাখার অনুরোধ জানানো হয়। দাবি করা হয়, ফিলিপাইন ২০১৯ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) থেকে বেরিয়ে যাওয়ার ফলে আদালত তাদের এখতিয়ার হারিয়েছে।

তবে আইসিসি বলছে, ২০১৯ সালের আগের অপরাধের ক্ষেত্রে তাদের এখতিয়ার এখনো বজায় রয়েছে।

দুতার্তের সমর্থকেরা তাঁর গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে বিমানবন্দরে বিক্ষোভ করেছে। তবে তাঁর গ্রেপ্তারকে “ঐতিহাসিক মুহূর্ত” হিসেবে অভিহিত করেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল কোয়ালিশন ফর হিউম্যান রাইটস ইন দ্য ফিলিপিন্স (আইসিএইচআরপি)।

সংস্থাটির চেয়ারম্যান পিটার মারফি বলেন, “ন্যায়বিচারের দীর্ঘ পথ আজ সত্যিকার অর্থে ন্যায়ের দিকে বাঁক নিয়েছে। দুতার্তেকে গ্রেপ্তার তাঁর নিষ্ঠুর শাসনামলের গণহত্যার জন্য দায়বদ্ধতার সূচনা।”

সূত্র: বিবিসি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here