দক্ষিণ সুদানে উদ্ধারকাজে নিয়োজিত জাতিসংঘের একটি হেলিকপ্টারে হামলা চালানো হয়েছে। এ ঘটনায় হেলিকপ্টারের এক ক্রু সদস্য নিহত ও দুইজন গুরুতর আহত হয়েছেন। জাতিসংঘের পক্ষ থেকে এ হামলাকে ‘যুদ্ধাপরাধ’ হিসেবে বিবেচনার কথা বলা হয়েছে।
শুক্রবার দক্ষিণ সুদানের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় আপার নাইল রাজ্যে সংঘর্ষের কবলে পড়া সেনাদের উদ্ধার করতে গিয়েছিল জাতিসংঘের মিশন (UNMISS)। সে সময় হেলিকপ্টারটি হামলার শিকার হয়।
জাতিসংঘের বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, এ হামলার সময় দক্ষিণ সুদানের এক জেনারেলসহ বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা নিহত হন। UNMISS প্রধান নিকোলাস হেসোম বলেন, জাতিসংঘ কর্মীদের ওপর এই হামলা ভয়াবহ ও ঘৃণ্য। আন্তর্জাতিক আইনে এটি যুদ্ধাপরাধ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।
দক্ষিণ সুদান ২০১৮ সালে দীর্ঘ পাঁচ বছরের গৃহযুদ্ধ শেষে প্রেসিডেন্ট সালভা কির ও প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট রিয়েক মাচারের মধ্যে একটি ক্ষমতা ভাগাভাগির চুক্তি করেছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে তাদের সমর্থিত বাহিনীগুলোর মধ্যে সংঘর্ষে ওই চুক্তি হুমকির মুখে পড়েছে।
সরকারের অভিযোগ, ভাইস প্রেসিডেন্ট মাচারের বাহিনী আপার নাইল রাজ্যের নাসির কাউন্টিতে অস্থিরতা ছড়াচ্ছে এবং নুয়ের সম্প্রদায়ের ‘হোয়াইট আর্মি’ নামক সশস্ত্র যুবগোষ্ঠীর সঙ্গে মিলে সংঘাতকে উসকে দিচ্ছে।
এদিকে, সরকারের তথ্য মন্ত্রী জানিয়েছেন, মঙ্গলবার বিদ্রোহীরা একটি সরকারি ঘাঁটি দখল করে নেয়। সংঘর্ষে এক জেনারেলসহ কয়েকজন সেনা বেঁচে গেলেও এখনো বিদ্রোহীদের সঙ্গে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন।
এই ঘটনার পর রাজধানী জুবায় ভাইস প্রেসিডেন্ট মাচারের ঘনিষ্ঠ কয়েকজন কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ছিলেন পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী পুয়ত কাং চোল, সেনাবাহিনীর উপপ্রধান গ্যাব্রিয়েল ডুয়োপ লাম এবং শান্তি প্রতিষ্ঠা বিষয়ক মন্ত্রী স্টিফেন পার কুয়োল। পরে শুক্রবার স্টিফেন পার কুয়োলকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
দক্ষিণ সুদানে চলমান সংঘাত নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক মহল। জাতিসংঘের দাবি, দ্রুত যুদ্ধবিরতি ঘোষণা না হলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠতে পারে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল