এবার জাতিসংঘ নিয়ে নতুন পদক্ষেপ নিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিল (ইউএনএইচআরসি) থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহারের একটি কার্যনির্বাহী নির্দেশপত্রে স্বাক্ষর করেছেন। এই নির্দেশে জাতিসংঘের প্রতি আমেরিকার বরাদ্দ অনুদান সংক্রান্ত বিষয়টি পর্যালোচনার কথাও বলা হয়েছে।
একইসঙ্গে, ফিলিস্তিনিদের জন্য জাতিসংঘের ত্রাণসংস্থা (ইউএনআরডব্লিউএ) থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহারের নির্দেশ দেন ট্রাম্প। ইউনেস্কোর সঙ্গে আমেরিকার সম্পর্ক নিয়েও পুনর্বিবেচনার ইঙ্গিত দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
এর আগে ২০১৮ সালে তার প্রথমদফার শাসনকালে ইউএনএইচআরসি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করেছিলেন ট্রাম্প। সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ক্ষমতায় এসে ২০২১ সালে আমেরিকার সদস্যপদ পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করেন।
ট্রাম্পের এই ঘোষণার পর জাতিসংঘের সেক্রেটারি জেনারেল অ্যান্তোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র স্টেফান ডুজারিক জানান, “জাতিসংঘের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি এবং উদ্ভাবনের জন্যও নিরন্তর সংস্কারমূলক কাজ করেছেন গুতেরেস।”
তিনি আরও বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের সাহায্যের কারণে জাতিসংঘ অগণিত জীবন রক্ষা করতে সক্ষম হয়েছে। আন্তর্জাতিক নিরপত্তা রক্ষার কাজেও অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে পেরেছে। বিশ্বের এই সামগ্রিক অশান্ত পরিবেশে সেক্রেটারি জেনারেল প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তথা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক জোরালো করতে আগ্রহী।”
অন্যদিকে, আমেরিকার প্রতি জাতিসংঘের সংস্থাগুলোর বৈষম্যমূলক আচরণের অভিযোগ এনেছেন হোয়াইট হাউসের স্টাফ সেক্রেটারি উইল শার্ফ। তিনি বলেন, “সাধারণভাবে এই নির্দেশের মাধ্যমে জাতিসংঘের সঙ্গে সম্পর্ক এবং অন্যান্য দেশের তুলনায় আমেরিকার অনুদানের অংকও পুনর্বিবেচনা করা হবে।”
এই পরিস্থিতিতে ট্রাম্প জানিয়েছেন, জাতিসংঘ ‘ভীষণ সম্ভবনাময়’ হলেও তা ‘সঠিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে না’।
তিনি বলেন, “সব দেশের অর্থে জাতিসংঘ পরিচালিত হওয়া উচিত। অথচ সবসময়ের মতো আমরা অসামঞ্জস্যপূর্ণ অনুদান দিয়ে যাচ্ছি।”
ট্রাম্প এদিন সাংবাদিকদের বলেন, “জাতিসংঘকে সঠিকভাবে কাজ করতে হবে। সত্যি কথা বলতে কি সংস্থাটি সঠিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে না। নিজেদের কাজ ঠিক মতো করছে না।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের কাজের মাধ্যমে অনেক মতবিরোধের নিষ্পত্তি ঘটবে। কমপক্ষে আমরা সাহায্য পাব। আমরা কখনওই সাহায্য পাই না। এটাই তো জাতিসংঘের প্রাথমিক কাজ হওয়া উচিত।”
ট্রাম্প তার প্রেসিডেনসিয়াল প্রচারের শুরু থেকেই ইউএন-সহ বহুপাক্ষিক সংস্থাগুলোতে মার্কিন অনুদান বিষয় নিয়ে সোচ্চার হয়েছিলেন। অন্যান্য দেশগুলোর, বিশেষ করে ন্যাটো অন্তর্ভুক্ত রাষ্ট্রগুলোর অনুদান বৃদ্ধির ব্যাপারেও সোচ্চার ছিলেন তিনি। সূত্র: ডয়েচে ভেলে