চুল আমাদের সৌন্দর্যের অনেক বড় একটা অংশ বহন করে। সেই চুলই যদি ক্রমাগত ঝরে গিয়ে মাথায় টাকের সৃষ্টি করে তাহলে কী আর দুঃখের সীমা থাকে! তাই চুল পড়া নিয়ে আমাদের চিন্তার অন্ত নেই। আজকের দিনে আমরা মোটামুটি সবাই এই সমস্যায় ভুগছি।
চুল পড়ার নানান কারণ থাকতে পারে- এর মধ্যে রয়েছে দুশ্চিন্তা, অপর্যাপ্ত ঘুম, অতিরিক্ত কাজের চাপ, অসুস্থতা, বংশগত সমস্যা, পরিবেশের প্রভাব ইত্যাদি। এ সকল সমস্যা থেকে পরিত্রাণের জন্য ক্যাস্টর অয়েল হতে পরে অনন্য একটি উপায়।
ক্যাস্টর অয়েলের গুণাগুণ
যদিও হেয়ার ফল (চুল পড়া) প্রতিরোধে ক্যাস্টর অয়েলের কার্যকারিতা নিয়ে অনেক বিশেষজ্ঞের মধ্যে দ্বিমত রয়েছে। তবে কেউ কেউ এর পক্ষে, আবার কেউ কেউ এর কার্যকারিতা স্বীকার করেন না। তবে, জৈবিকভাবে ক্যাস্টর অয়েলের গুরুত্বপূর্ণ গুণ রয়েছে, যা চুল পড়া প্রতিরোধে সহায়ক।
ক্যাস্টর অয়েলের উপকারিতা
এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য, যা ফ্রি র্যাডিক্যালের মাধ্যমে সৃষ্ট চুল পড়া রোধে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। স্পিট এন্ডস বন্ধ করে। মাথার ত্বকের (স্ক্যাল্পের) পিএইচ (pH) ব্যালেন্স বজায় রাখে। রক্ত সঞ্চালন আরও উন্নত করে। চুলকানি এবং সংক্রমণজনিত সমস্যাগুলোকে দূর করে। এতে অ্যান্টি-ফাঙ্গাল, অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল গুণাগুণ রয়েছে।
এটা কি চুল পড়া প্রতিরোধ করে?
ক্যাস্টর অয়েলে ওমেগা-৬ ফ্যাটি অ্যাসিড এবং প্রোটিন রয়েছে; যা চুল পড়া রোধে সহায়ক। এটি রিসিনোলিক অ্যাসিডসমৃদ্ধ (জরপরহড়ষবরপ ধপরফ); যা চুলের বৃদ্ধির জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি পুষ্টি উপাদান। কিছু বিশেষজ্ঞ মনে করেন, ক্যাস্টর অয়েল চুল ঘন দেখানোর জন্য একটি ভ্রান্ত ধারণা তৈরি করে। আসলে এটি চুলের সঙ্গে এমনভাবে লেগে থাকে, যাতে সাময়িক ঘন দেখায়। তবে এটি ঘনত্ব বৃদ্ধি করে না। এটি নিয়ে কোনো বৈজ্ঞানিক গবেষণা বা ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল সম্পন্ন হয়নি। যদিও এর কার্যকারিতা প্রমাণিত নয়, তবুও এটি ব্যবহারে ক্ষতি নেই।
‘হেয়ার ফল’ রোধে ক্যাস্টর অয়েল
ক্যাস্টর অয়েল নিয়মিত ব্যবহার করলে মাথার ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায়, অন্যান্য পণ্য শোষণের হার বাড়ায়। চুলের আর্দ্রতা বজায় রাখে। চুলের ফলিকল পরিষ্কার করে এবং ময়লা দূর করে।
ক্যাস্টর অয়েলের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
মাথার ত্বকে ফ্লেক বা সাদা খুশকি দেখা দিতে পারে। চুলকানি এবং সংবেদনশীলতা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে। খুশকির সমস্যা বাড়তে পারে। চুলের গোড়ায় তেল জমে থাকে।
ব্যবহারবিধি :
এই তেল হাতে ঘষে গরম করুন। চুলের গোড়ায় ভালোভাবে লাগান এবং ২০ মিনিট ম্যাসাজ করুন। এরপর একটি ক্লারিফাইং শ্যাম্পু ব্যবহার করে চুল ধুয়ে ফেলুন। চুল মজবুত করার জন্য এটি সপ্তাহে একবার ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়।
তথ্যসূত্র : দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।