থাই পেয়ারা চাষ করে ভাগ্য বদল দুই ভাইয়ের

0

থাই পেয়ারা চাষ করে ভাগ্য বদলেছেন নাটোর শহরের চকবৈদ্যনাথ মহল্লার দুইভাই রাজু ও সাজু সামাউল। তাদের পরিবারে ফিরেছে সুদিন। পাশাপাশি এ পেয়ারা বাগানে কাজ করে ভালো আছেন আরো ২০ পরিবার। জেলার অন্য কৃষকেরা এ ধরনের আরো পেয়ারা বাগান করে নিজেদের ভাগ্য বদলাবেন এমনটি প্রত্যাশা কৃষি বিভাগের।

নাটোরের সদর উপজেলার ফতেঙ্গাপাড়ায়  ১০ বিঘা কৃষি জমি লিজ নিয়ে শুরু করেন থাই পেয়ারা চাষ। পেয়ারার পাশাপাশি দেশি কলা ও চাইনিজ লেবু। চাষ শুরুর পর বছর ঘুরতে না ঘুরতেই বাগান থেকে ফলন পেতে শুরু করেন তিনি। তাদের  জমিতে দুই হাজার  ফলনশীল থাই পেয়ারা গাছ আছে। পেয়ারা বাগানে এসব ছোট ছোট গাছে থাই জাতের পেয়ারায় ভরে গেছে। পেয়ারাকে পোকা-মাকড় ও ধুলাবালি থেকে রক্ষায় ব্যবহৃত হচ্ছে ব্যাগিং পদ্ধতি।

দামও মোটামুটি ভালো। প্রতি কেজি পেয়ারা ৩০ টাকা থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত পাইকারী দামে বাগান থেকেই তারা বিক্রি করেন। পাইকাররা নিজেরাই বাগানে এসে পেয়ারা নিয়ে যান। তার এ পেয়ারা চাষের সাফল্যে ইতোমধ্যেই এলাকায় ব্যাপক সাড়া পড়েছে। তাদের দেখাদেখি  স্থানীয় অনেক বেকার তরুণ  পেয়ার চাষ শুরু করেছেন। দুই  বছরে তারা  সাড়ে ৫ লাখ টাকার পেয়ারা বিক্রি করে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হয়েছেন। তার এ সাফল্য দেখে এলাকার অনেক যুবক পেয়ারা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। বাগানের মালিক রাজু ও সাজু  বলেন, ১০  বিঘা জমিতে পেয়ারার চাষ করেছি। প্রথম দিকে ফলন একটু কম হলেও এখন প্রতি দিনই ফল বিক্রি করি। এ বাগানে নিয়মিত ২০ জন লোক কাজ করে। অনেকে আমাদের  কাছে পরামর্শ নিতে আসে। আমরা  তাদের পেয়ারা চাষ করতে বলি। এটি ফলনশীল জাতের পেয়ারা। এতে অনেক বেশী ফলন। লাভও ভালো হয়।

আকলিমা বেগম, কোহিনুর বেগম, আব্বাস আলীসহ বেশ কয়েকজন দিনমজুর বলেন, এ পেয়ারা বাগানে কাজ করে প্রতিদিন যা আয় করি তাতে আমরা পরিবার নিয়ে খেয়ে পরে ভালো আছি।

ফতেঙ্গাপাড়া এসে রাজু ও সাজু  ভাইয়ের পেয়ারা বাগান থেকে পেয়ারা কিনে নিয়ে বিভিন্ন হাট-বাজারে বিক্রি করি বলে জানালেন পেয়ারা কিনতে আসা বাবর আলী নামে এক পাইকারী ব্যবসায়ী। এছাড়া সিলেটের  নজরুল ব্যাপারী, চট্রগ্রামের  আজিজ , রাকিব  এবং ময়মনসিংহ  সদরের শ্যামল কুমার, অজিত নন্দী এ বাগান থেকে পেয়ারা নিয়ে বিক্রি করে তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে ভালো আছেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা  নীলিমা জাহান জানান, রাজ ও সাজু ফলজ কৃষি’র উজ্জল দৃষ্টান্ত। আমাদের কৃষি বিভাগ তাদের  প্রশিক্ষণসহ নানাবিধ কারিগরি সহযোগিতা দিয়ে আসছে। তার এ ফলবাগানে বেশ কিছু শ্রমিক কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছে, বেশকিছু বেকার যুবক কৃষি কাজে উৎসাহিত হচ্ছে। সবমিলিয়ে রাজু ও রাজুর  কারণে ফলজ কৃষির সম্প্রসারণ বাড়ছে। এটা এ এলাকার জন্য ইতিবাচক। 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here