ফেনীতে ৪২ ইউপি চেয়ারম্যান আত্মগোপনে, বিপর্যয়ে নাগরিক সেবা

0

ফেনীতে ইউনিয়ন পরিষদগুলোতে কাঙ্ক্ষিত সেবা না পাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। নাগরিক সনদ, জন্মনিবন্ধন, মৃত্যু সনদসহ পরিষদের বিভিন্ন সেবা পেতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে নাগরিকদের।

জেলার ৬ উপজেলার ৪৩টি ইউনিয়ন পরিষদের ৪২টিতেই নেই জনপ্রতিনিধি। ফলে মিলছে না কাঙ্ক্ষিত সেবা, নানা ধরনের ভোগান্তি পোহাচ্ছে জনগণ। ফেনী জেলার ৬টি উপজেলার ৪৩ ইউনিয়নের একটিতে শুধুমাত্র বিএনপি সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী নির্বাচিত হয়। বাকি ৪২টিতে চেয়ারম্যান ছিলেন আওয়ামী সরকার দলীয়।

গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন হলে ৪০টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আত্মগোপনে চলে যায়। সোনাগাজী উপজেলার নবাবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জহিরুল আলম জহির শুধুমাত্র এলাকায় রয়েছেন।

অন্যদিকে, দাগণভূঁঞা সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বেলায়েত হোসেন স্বপন কারাগারে এবং রামনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের মেয়াদ শেষ হওয়ায় ওই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদও শূন্য রয়েছে। সেবার কার্যক্রম মুখ থুবড়ে পড়েছে। জন্মসনদ, মৃত্যুসনদ, পারিবারিক সনদ, নাগরিক সনদ, ওয়ারিশ সনদসহ বিভিন্ন সেবা পেতে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয় নাগরিকদের।

এ ছাড়া গত বছরের আগস্টে ফেনীর ভয়াবহ বন্যায় তলিয়ে যায় প্রায় সবকয়টি ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়। পরিষদ ভবন তালাবদ্ধ থাকায় পানিতে নষ্ট হয়ে যায় কম্পিউটার, প্রিন্টার, ফটোকপি মেশিনসহ গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন কাগজপত্র। এত আরও ভোগান্তি সৃষ্টি হচ্ছে সেবা প্রদানে।

আলী আশরাফ নামে মোটবী ইউনিয়ন পরিষদে সেবা নিতে আসা এক ব্যক্তি বলেন, ‘গত কয়েকদিন ধরে জন্ম নিবন্ধনের কাজে পরিষদে আসলেও চেয়ারম্যান-মেম্বার কাউকে পাইনি। জরুরি প্রয়োজন থাকলেও চেয়ারম্যানের স্বাক্ষরের জন্য ভোগান্তিতে পড়েছি। বিষয়গুলো বিবেচনা করে সাধারণ নাগরিকদের দুর্ভোগ লাঘবে সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে দ্রুত একটি নির্দেশনা দেওয়া প্রয়োজন।’

মোটবী ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তারা বলছেন, সেবা নিতে আসা মানুষদের একবার ইউনিয়ন পরিষদে, আরেকবার উপজেলা পরিষদে যেতে হচ্ছে। এতে মানুষের ভোগান্তি বেড়ে গেছে। তাছাড়া বন্যায় পরিষদের সব ডকুমেন্টস নষ্ট হয়ে যাওয়ায় বিঘ্ন হচ্ছে সেবাদানে।

স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক গোলাম মো. বাতেন বলেন, সরকার পলায়নের পর সারাদেশের মতো ফেনীর ৪২ জন জনপ্রতিনিধিই আত্মগোপনে চলে যায়। এ পরিস্থিতিতে আমরা উপজেলার বিভিন্ন দাপ্তরিক কর্মকর্তা দিয়ে প্রাথমিক অবস্থায় পরিষদের কার্যক্রম চলমান রেখেছি। জনপ্রতিনিধিদের মতো আশানুরূপ কাজ চাকরিজীবীরা করতে কিছুটা হিমশিম খাচ্ছে, কারণ তাদেরও দাপ্তরিক কাজ করতে হয়। জনবল বৃদ্ধির কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। শিগগিরই এই সংকট কেটে যাবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here