যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি গাজার ১৫ লাখ ফিলিস্তিনিকে জর্ডান ও মিশরে স্থানান্তরের একটি প্রস্তাব দিয়েছেন। তবে এই প্রস্তাবকে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে। ট্রাম্পের প্রস্তাব মধ্যপ্রাচ্যে শান্তির বদলে আরও অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক মহাপরিচালক অ্যালন লিয়েল এই প্রস্তাবের কড়া সমালোচনা করে বলেছেন, ট্রাম্প বিষয়টি গভীরভাবে বোঝার আগেই মন্তব্য করেছেন। তার এ ধরনের মন্তব্য মধ্যপ্রাচ্যের মনোভাবের বিরুদ্ধে যায়। এটি শুধু ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে ইসরায়েলের সংঘাত নয়, বরং পুরো অঞ্চলের পরিস্থিতি জটিল করে তুলতে পারে।
লিয়েল আরও বলেন, আশা করি, তিনি সিআইএ এবং স্টেট ডিপার্টমেন্টের সঙ্গে আলোচনা করার পর এই ধারণা থেকে সরে আসবেন। এ ধরনের পদক্ষেপ ১৯৪৮ সালের ‘নাকবা’র স্মৃতি উসকে দিতে পারে, যা আরব বিশ্বে আরও ক্ষোভ তৈরি করবে।
ট্রাম্পের এই প্রস্তাবে ইসরায়েলের কট্টর ডানপন্থী অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোটরিচ সমর্থন জানিয়ে বলেছেন, এটি সন্ত্রাসবাদ দূর করার নতুন পথ হতে পারে। গাজাবাসীরা নতুন স্থানে নতুন জীবন শুরু করার সুযোগ পাবে।
অন্যদিকে, ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীগুলো এই প্রস্তাবকে সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছে। ইসলামিক জিহাদ এটিকে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ এবং যুদ্ধাপরাধ উৎসাহিত করার অভিযোগ তুলেছে। তারা জানিয়েছে, আমাদের জনগণকে তাদের ভূমি থেকে জোরপূর্বক সরানোর কোনো পরিকল্পনা মেনে নেওয়া হবে না।
হামাসও এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করে বলেছে, যতবার আমাদের সরানোর চেষ্টা হয়েছে, আমরা তা ব্যর্থ করেছি। এই পরিকল্পনাও জনগণ প্রতিহত করবে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের আকস্মিক হামলায় ইসরায়েলে প্রায় ১,২০০ মানুষ নিহত হন এবং ২৫০ জন জিম্মি হন। এর প্রতিশোধ নিতে ইসরায়েল গাজায় ব্যাপক সামরিক অভিযান চালায়। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দাবি অনুযায়ী, এ পর্যন্ত ৪৭,০০০-এরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।
যুদ্ধবিরতির আওতায় কিছু ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হলেও গাজায় মানবিক সংকট ক্রমেই বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে ট্রাম্পের প্রস্তাব নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল