১৫ মাস যুদ্ধের পর ইসরায়েল ও হামাস গত বুধবার যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়। গাজার স্থানীয় সময় রবিবার সকাল সাড়ে আটটা থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হচ্ছে। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) এমনটি জানিয়ে দিয়েছে।
গতকাল শনিবার সকালে ছয় ঘণ্টা বৈঠকের পর নেতানিয়াহুর মন্ত্রিসভা চুক্তি অনুমোদন করে। কয়েক ঘণ্টার আলোচনার পর চুক্তিটি অনুমোদন করা হলেও দুইজন কট্টর ডানপন্থী মন্ত্রী এই চুক্তির বিরুদ্ধে ভোট দেন।
এর আগে দেশটির যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা চুক্তিটি অনুমোদনের সুপারিশ করে। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় জানিয়েছে যে ‘এটি যুদ্ধের লক্ষ্য অর্জনকে সমর্থন করে’। মধ্যস্থতাকারী কাতার, যুক্তরাষ্ট্র ও মিশর আগেই যুদ্ধবিরতি চুক্তির ঘোষণা দেয়। তবে দুই পক্ষকেই মানতে হবে কিছু শর্ত।
কী আছে চুক্তিতে:
যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুযায়ী হামাসের হাতে থাকা ৩৩ ইসরায়েলি জিম্মি মুক্তির বিনিময়ে শতাধিক ফিলিস্তিনি বন্দি মুক্তি পাবেন। চুক্তির প্রথম ধাপে ছয় সপ্তাহের মধ্যে এই বন্দি বিনিময় হবে।
একইসঙ্গে গাজার ঘনবসতিপূর্ণ এলাকাগুলো থেকে ইসরায়েলি সৈন্য প্রত্যাহার করা হবে এবং বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিরা তাদের বাড়িঘরে ফেরার অনুমতি পাবে। পাশাপাশি ত্রাণবাহী ট্রাকগুলোকে প্রতিদিন গাজায় প্রবেশ করতে দেওয়া হবে।
দ্বিতীয় ধাপে হামাসের হাতে থাকা বাকি জিম্মিরা মুক্তি পাবে এবং গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনা সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাহার করা হবে। এর মাধ্যমে টেকসই শান্তি পুনঃপ্রতিষ্ঠা হবে।
আর তৃতীয় ও চূড়ান্ত ধাপে গাজা পুনর্গঠন হবে- যা শেষ করতে কয়েক বছর পর্যন্ত লাগতে পারে। একইসঙ্গে নিহত ইসরায়েলি জিম্মিদের মরদেহ ফেরত দেওয়া হবে।
কাতার জানায় প্রথম ধাপে যে জিম্মিরা মুক্তি পাবেন, তার মধ্যে থাকবেন বেসামরিক নারী, নারী সেনা, শিশু, বয়স্ক, অসুস্থ ও আহত বেসামরিক নাগরিকরা।
ইসরায়েল বলছে, যুদ্ধবিরতির প্রথম দিনে তারা তিন জিম্মির মুক্তি আশা করছে। এরপর থেকে নিয়মিত বিরতিতে ছয় সপ্তাহ ধরে ছোট ছোট দলে জিম্মিরা মুক্তি পাবেন।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজার সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস ইসরায়েলে হামলা চালিয়ে প্রায় এক হাজার ২০০ লোককে হত্যা করে এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করে।
জবাবে ইসরায়েল গাজায় যুদ্ধ শুরু করে। সেই থেকে এ পর্যন্ত উপত্যকাটিতে প্রায় ৪৭ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানায় হামাস-শাসিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।