ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার দীর্ঘ ১৫ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শেষ হতে যাচ্ছে ১৯ জানুয়ারি। এদিন স্থানীয় সময় সাড়ে ৮টা থেকে কার্যকর হবে যুদ্ধবিরতি।
এদিকে, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেই গাজা উপত্যকার পূর্ণ দায়িত্ব নেবে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ফিলিস্তিনের সরকারি জোট ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ (পিএ)।
শুক্রবার ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট এবং পিএ জোটের বৃহত্তম শরিক ফাতাহ-এর শীর্ষ নেতা মাহমুদ আব্বাসের দফতর থেকে এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “প্রেসিডেন্ট আব্বাসের নির্দেশনা অনুযায়ী গাজা উপত্যকার পূর্ণ দায়দায়িত্ব নিতে যাবতীয় প্রস্তুতি শেষ করেছে ফিলিস্তিনের সরকার। এই দায়িত্ব পালনের জন্য যেসব প্রশাসনিক ও নিরাপত্তা দল প্রয়োজন, সেসব গঠনের কাজও শেষ হয়েছে।”
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর গাজার বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের ফিরিয়ে আনা, পানি ও বিদ্যুতসহ জরুরি সব পরিষেবা ফের চালু করা, সীমান্ত ব্যবস্থাপনা এবং উপত্যকার ভবন, রাস্তাঘাট ও অবকাঠামো পুনর্গঠনের কাজে নেতৃত্ব দেবে পিএ।
গাজা উপত্যকায় এক সময় ফাতাহ ক্ষমতাসীন ছিল। ২০০৬ সালের নির্বাচনে সেখানে হামাস জয়ী হয়। তারপর ২০০৭ সাল শেষ হওয়ার আগেই ফাতাহকে উপত্যকা থেকে বিদায় করে হামাস। বস্তুত ২০০৬ সালের পর আর কোনও নির্বাচন হয়নি গাজায়।
ফলে, গত প্রায় ১৯ বছর ধরে উপত্যকা নিয়ন্ত্রণ করছে হামাস। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ভূখণ্ডে যে অতর্কিত হামলা ঘটেছিল, তার মূল পরিকল্পনাকারী এবং নেতৃত্বের ভূমিকায়ও ছিল হামাস। সেই হামলায় নিহত হয় এক হাজার ২০০ জন। পাশাপাশি ২৫০ জনকে জিম্মি হিসেবে গাজায় ধরে নিয়ে যায় হামাস ও প্যালেস্টাইনিয়ান ইসলামিক জিহাদের যোদ্ধারা।
ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী, যা পুরোপুরি শেষ হচ্ছে ১৯ জানুয়ারি। ১৫ মাসের ভয়াবহ এই অভিযানে গাজায় নিহত হয়েছে ৪৬ হাজার ৭ শতাধিক এবং আহত হয়েছে আরও এক লাখ ১৫ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি। এছাড়া উপত্যকার প্রায় ২২ লাখ জনসমষ্টির অধিকাংশই বাড়িঘর ছেড়ে উদ্বাস্তু হয়েছে। সূত্র: আল-জাজিরা, সিএনএন