ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে ইসরায়েলের মন্ত্রিসভায় যে প্রস্তাব অনুমোদন হওয়ার কথা তা এখনো হয়নি। হামাস চুক্তিতে শেষ মুহূর্তের পরিবর্তন চাইছে অভিযোগ করে যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিসভার ভোটাভুটি স্থগিত করে দেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ভোটাভুটির কয়েক ঘণ্টা আগে নেতানিয়াহু জানান, হামাস সব শর্তে রাজি না হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে ভোটাভুটির আয়োজন করবে না ইসরায়েলের মন্ত্রিসভা।
গতকাল বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) এই প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য নির্ধারিত ছিল। নেতানিয়াহুর এমন ঘোষণার পর যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেছেন, ‘সম্পূর্ণ করা হয়নি, এমন একটি অংশ’ যুক্ত করা হয়েছে। পরিকল্পনা অনুসারে আগামী রবিবার (১৯ জানুয়ারি) থেকে যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হওয়ার ব্যাপারে তিনি আত্মবিশ্বাসী।
বুধবার সন্ধ্যায় কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান বিন জসিম আল-থানি দোহায় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তির আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন। পরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আলাদাভাবে যুদ্ধবিরতির কথা নিশ্চিত করেছেন। দেশটির নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুদ্ধবিরতি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একাধিক পোস্ট করেছেন।
ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে ১৫ মাস পর হওয়া এই যুদ্ধবিরতিতে মূল মধ্যস্থতাকারী ছিল যুক্তরাষ্ট্র, কাতার ও মিসর। ১৯ জানুয়ারি থেকে যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে। ইসরায়েলের আলোচকেরা দোহায় যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সম্মত হলেও দেশটির নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা ও সরকার অনুমোদন না করা পর্যন্ত তা কার্যকর হবে না।
ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতি চুক্তির অনুমোদন নিয়ে ভোট বিলম্বিত করার ঘোষণার পর হামাস বলেছে, তারা যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কিন্তু বিবিসির ধারণা, হামাস চুক্তিতে সামান্য কিছু যুক্ত করতে চায়। চুক্তি অনুযায়ী, ইসরায়েলের কারাগার থেকে ফিলিস্তিনি কয়েদিদের মুক্তি দেওয়ার যে তালিকা করা হয়েছে, সেখানে নিজেদের কিছু সদস্যের নামও যোগ করতে চায় হামাস।
যুদ্ধবিরতি চুক্তি ইসরায়েলের মন্ত্রিসভায় বিলম্বিত হওয়ার ঘোষণাটি এমন এক সময়ে এল, যখন গতকাল দেশটির হামলায় গাজায় ৮০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি প্রাণ হারালেন।
গতকাল সকালে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকের কয়েক ঘণ্টা আগে এক বিবৃতিতে নেতানিয়াহু অভিযোগ করেছেন, হামাস শেষ মুহূর্তে ‘কিছু ছাড় জোর করে আদায়ের চেষ্টা করছে’। তাই হামাস ‘সব শর্তে সম্মত না হওয়া’ পর্যন্ত মন্ত্রিসভার ভোটাভুটি অনুষ্ঠিত হবে না। এমন একটি ‘চ্যালেঞ্জিং’ পরিস্থিতিতে ইসরায়েলের মন্ত্রিসভার ভোটাভুটি বিলম্বিত হওয়াটা প্রত্যাশিত ছিল বলে মন্তব্য করেছেন ব্লিঙ্কেন।