ঠাকুরগাঁওয়ে আলু নিয়ে দুশ্চিন্তায় চাষিরা

0

আলুর দাম কমে যাওয়ায় দুশ্চিন্তায় ঠাকুরগাঁওয়ের আলু চাষীরা। কৃষকেরা বলছেন, মৌসুমের শুরুতেই প্রতি কেজি আলু ৭০ টাকায় বিক্রি হলেও বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ১৩ থেকে ১৪ টাকায়। এদিকে জেলা কৃষি বিভাগ বলছে, আলু রপ্তানি ও আলুর বহুমুখী ব্যবহার নিশ্চিত করা গেলে কৃষকরা লাভবান হবেন। 

ঠাকুরগাঁওয়ে কৃষকেরা এখন আলু উত্তোলনে ব্যস্ত। গতবছরে আলুর দাম ভালো পাওয়ায় এবারও লাভের আশায় আলু চাষ করেছেন ঠাকুরগাঁও জেলার কৃষকেরা। তবে, এবার আলু নিয়ে এবার দুশ্চিন্তায় তারা। মাঠ পর্যায়ে প্রতিকেজি আলুর দাম নেমেছে ২০ টাকার মধ্যে। যা আলু উৎপাদন খরচের চেয়ে অনেক কম। 

কৃষকরা বলছেন আলুর বীজ,সার,কীটনাশকের দাম বেড়ে যাওয়ায় এবার আলুর উৎপাদন খরচও বেড়েছে। তবে আলুর দাম কমে যাওয়ায় লোকসানের মুখে পড়েছেন আলু চাষীরা।

ঠাকুরগাঁও সদরের বিভিন্ন এলাকার আলুচাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, লাভের আশায় এবারও চাষিরা নানা জাতের আগাম আলুর চাষ করেছেন। প্রতিবছর সেপ্টেম্বরের শেষে আলু রোপণ করে নভেম্বরে তা বাজারে বিক্রি করা হয়। তবে এবার সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে বৃষ্টির কারণে খেতের বীজ নষ্ট হয়ে যায় কৃষকের। এ কারণে নতুন বীজ রোপণ করতে হয়েছে। এতে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার চাষের খরচও বেড়েছে। কিন্তু আগাম জাতের সেই আলু বিক্রি করে এখন লোকসানে পড়েছেন কৃষকেরা।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ঢোলারহাটের আলুচাষি অমল বলেন, এক বিঘা জমিতে আগাম জাতের আলু আবাদে খরচ হয়েছে ৬০ হাজার টাকার বেশি। আলু পাওয়া গেছে ২ হাজার ৬০০ কেজি। তাতে প্রতি কেজি আলু চাষে খরচ পড়েছে ২৩ টাকার বেশি। সেই আলু বিক্রি করতে হচ্ছে ১১ থেকে ১২ টাকায়। তাতে কেজিতে ১২ থেকে ১৩ টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে।

জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার আলুচাষি আহসান হাবিব জানান, তিন বিঘা জমিতে গ্র্যানুলা জাতের আলু আবাদে তাঁর খরচ হয়েছে ১ লাখ ৮১ হাজার টাকার বেশি। আলু পেয়েছেন ১৯৫ মণ। ১২ টাকা দরে সেই আলু বিক্রি করে পান ৯৩ হাজার ৬০০ টাকা। তাতে তাঁর লোকসান হয়েছে ৮৭ হাজার ৪০০ টাকা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত মৌসুমে এই জেলায় ২৭ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে আলুর আবাদ হয়েছিলো। চলতি বছরে আবাদ হয়েছে ৩৪ হাজার ৭শ ২৫ হেক্টর জমিতে।  

জেলঅ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ঠাকুরগাঁওয়ের উপপরিচালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, এ এলাকার কৃষক যখন একটি ফসলে লাভ পান, তখন অন্যরাও সেটাতেই ঝোঁকেন। চলতি বছরে আলুর ক্ষেত্রেও এমনটি হয়েছে। তবে উৎপাদন খরচটাও একটু বেশি পড়ছে। কিন্তু বাজারে দাম কম। এতে কৃষক ন্যায্যমূল্য পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন। তবে উৎপাদন ভালো হওয়ায় কৃষকদের লাভ কম হলেও লোকসান হবে না। সেই সাথে আলু রপ্তানি ও আলুর বহুমুখি ব্যবহার নিশ্চিত করা গেলে কৃষকরা লাভবান হবেন। 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here