গাজীপুরে বেতন ভাতা বৃদ্ধি, নিয়মিতকরণ ও হয়রানিমূলক বদলি করা বন্ধসহ পাঁচ দফা দাবিতে কর্মবিরতি, বিক্ষোভ, সমাবেশ ও অবস্থান কর্মসূচি করেছে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বারি) শ্রমিকরা।
এসময় অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তারা প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করেন। আজ বুধবার বিএআরআই শ্রমিক সমিতির উদ্যোগে বারি’র সদর দপ্তরের সামনে দুপুর পর্যন্ত এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
জানা গেছে, বারি’র শ্রমিকরা তিন বছরের বেশি সময় ধরে সকল দপ্তরে কর্মরত অনিয়মিত ও অফিস মাস্টাররোলের শ্রমিকদের নিয়মিতকরণ, চাকরিতে থাকা অবস্থায় কোনো শ্রমিক মৃত্যুবরণ করলে তাদের পরিবার থেকে যোগ্যতা অনুসারে নিয়োগ, অতিরিক্ত কাজের মজুরি ও সরকারি সুযোগ সুবিধা প্রদান, কারণে অকারণে শ্রমিকদের অন্যত্র বদলি বন্ধ করাসহ ৫ দফা দাবি মেনে নেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছিল। কিন্তু কর্তৃপক্ষের সাড়া না পেয়ে শ্রমিকদের মাঝে অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ে। প্রতিদিনের মতো বুধবার সকালে বারি’র শ্রমিকরা কাজে যোগ দেন। তারা নাস্তার বিরতির পর সকাল ৯টা হতে কর্মবিরতি শুরু করেন। একপর্যায়ে তারা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে সদর দপ্তরের সামনে অবস্থান নেন।
এসময় অনুষ্ঠিত সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিএআরআই শ্রমিক সমিতির সভাপতি আবুল হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক রফিজ উদ্দিন, বিএআরআই শ্রমিক ক্লাবের সভাপতি মো. আমির হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুর আলম এবং সমিতির সহ-সম্পাদক হাসান উদ্দিন প্রমুখ। পরে মহাপরিচালক বরাবরে একটি স্মারকলিপি দেন তারা।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, দাবি মেনে না নেওয়া পর্যন্ত শ্রমিকদের আন্দোলন কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। প্রয়োজনে ভবিষ্যতে বৃহৎ আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা দেওয়া হবে।
শ্রমিক নেতৃবৃন্দ জানান, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটে (বারি) প্রায় ২ হাজার ৬শ’জন নিয়মিত, অনিয়মিত ও অফিস মাস্টাররোল এর শ্রমিক কর্মরত রয়েছেন। তাদের মধ্যে প্রায় অধিকাংশই অনিয়মিত ও অফিস মাস্টাররোলের শ্রমিক। তারা সরকারি সুবিধাদি পাচ্ছেন না। এসব অনিয়মিত ও অফিস মাস্টাররোলের শ্রমিকদের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শ্রমিক রয়েছেন যারা এক যুগেরও বেশি সময় ধরে দৈনিক হাজিরার ভিত্তিতে কাজ করছেন। কিন্তু এখনও নিয়মিতকরণ করা হয়নি। অথচ কোনো শ্রমিকের কর্মকাল ৭২০ দিন বা তার অধিক হলে তাকে নিয়মিত করার নিয়ম রয়েছে। এছাড়া, অনিয়মিত ও অফিস মাস্টাররোলের শ্রমিকরা ৮ ঘণ্টার বেশি কাজ করলেও তাদের অতিরিক্ত কাজের মজুরি দেওয়া হচ্ছে না। কারণে অকারণে শ্রমিকদের অন্যত্র বদলি করে হয়রানি করা হচ্ছে। ইতিপূর্বে শ্রমিকদের এসব ন্যায্য দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি।
তারা আরও জানান, প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশে আমরা নিয়মিত/অনিয়নিত/অফিস মাস্টাররোল শ্রমিক হিসেবে দীর্ঘদিন যাবৎ দক্ষতার সাথে কৃষি সমৃদ্ধি স্বনির্ভর দেশ গড়ার লক্ষ্যে নিরলসভাবে সুনাম ও দক্ষতার সাথে কাজ করে আসছি। গবেষণার কাজে শ্রমিকের ভূমিকা কম নয়। আমাদের এই মধ্যম আয়ের দেশে হরতাল, অবরোধসহ নানা দুর্যোগ উপেক্ষা করে স্বল্প মজুরিতে কাজ করে আমরা আমাদের পরিবার পরিজন নিয়ে দুর্বিসহ অবস্থায় জীবন-যাপন করছি। দৈনিক আট ঘণ্টা কাজ করতে গিয়ে বিজ্ঞানীদের ডাকে গবেষণার স্বার্থে উন্নত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে অক্লান্ত পরিশ্রম করে আসছি। অথচ দুঃখের বিষয় ১৭ এর নীতিমালা অনুসারে শ্রমিকদের নিয়মিত করা হচ্ছে না।