দক্ষিণ কোরিয়ার অভিশংসিত প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওলকে নানা নাটকীয়তার পর অবশেষে গ্রেফতার করা হয়েছে। বুধবার সকালে সিউলে তার সরকারি বাসভবন থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। বিবিসি ও স্থানীয় বার্তা সংস্থাগুলোর প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
সামরিক আইন জারির ঘটনার জেরে ইউন সুক-ইওলের বিরুদ্ধে ফৌজদারি তদন্ত চলছে। দক্ষিণ কোরিয়ার ইতিহাসে এই প্রথমবার কোনো প্রেসিডেন্ট রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে গ্রেফতার হলেন। তার বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার এবং রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ আনা হয়েছে।
গ্রেফতারের আগে ইউন সুক-ইওল একটি ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘এটা সম্পূর্ণ অবৈধ তদন্ত। আমি রক্তপাত এড়াতে তদন্তকারী কর্মকর্তাদের সামনে হাজির হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তবে এর মানে এই নয় যে আমি তাদের তদন্তকে অনুমোদন দিচ্ছি।’
স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ১০টায় তদন্তকারীরা তার বিরুদ্ধে জারি করা গ্রেফতারি পরোয়ানা কার্যকর করেন। সিউলের প্রেসিডেনশিয়াল বাসভবন থেকে একটি গাড়িবহরের মাধ্যমে ইউন সুক-ইওলকে দক্ষিণ সিউলের গোওচেয়ন এলাকায় সিআইওর (দুর্নীতির তদন্ত দপ্তর) দপ্তরে নেওয়া হয়। এই পুরো যাত্রাপথ সরাসরি সম্প্রচার করে দক্ষিণ কোরিয়ার সংবাদমাধ্যমগুলো।
এর আগে ইউন সুক-ইওলকে গ্রেফতারের জন্য তার বাসভবনে একাধিকবার অভিযান চালানো হয়। গত মাসে চালানো প্রথম অভিযানে তার নিরাপত্তা বাহিনীর বাধায় তদন্তকারীরা ব্যর্থ হন। তবে এবার দ্বিতীয়বারের প্রচেষ্টায় তাকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় তদন্তকারী দল।
গত ৩ ডিসেম্বর সবাইকে হতবাক করে দিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ায় সামরিক আইন জারি করেছিলেন ইউন সুক-ইওল। কিন্তু জনগণের তীব্র প্রতিবাদ ও প্রতিরোধের মুখে মাত্র ছয় ঘণ্টার মধ্যে তিনি তা প্রত্যাহার করতে বাধ্য হন। এরপর ১৪ ডিসেম্বর দেশটির পার্লামেন্টে ইউন সুক-ইওলকে অভিশংসন করা হয় এবং প্রেসিডেন্টের পদ থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়।
তদন্তকারীদের তলবে হাজির হতে অস্বীকৃতি জানানোয় ৩১ ডিসেম্বর আদালত ইউন সুক-ইওলের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। যদিও ৬ জানুয়ারি সেই পরোয়ানার মেয়াদ শেষ হয়ে যায়, পরে আদালত এর মেয়াদ বাড়ানোর নির্দেশ দেন।
এই গ্রেফতার দক্ষিণ কোরিয়ার রাজনৈতিক অঙ্গনে একটি বড় ধরনের আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। ইউন সুক-ইওলের সমর্থক এবং বিরোধীদের মধ্যে দেশজুড়ে বিক্ষোভ এবং উত্তেজনা বিরাজ করছে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল