কুমিল্লা হর্টিকালচার সেন্টারে জমি সংকটে ব্যাহত হচ্ছে চারা উৎপাদন। কুমিল্লা নগরীর শাসনগাছায় অবস্থিত ‘এ’ ক্যাটাগরির সেন্টারটির আয়তন ৫ একর ৪৮ শতাংশ। এখানকার চারা দিয়ে কুমিল্লা মহানগরী ও ১৭ উপজেলার চাহিদা পূরণ হচ্ছে না। কৃষি উদ্যোক্তারা এটির আয়তন বাড়িয়ে আরো উৎপাদনের তাগিদ দিয়েছেন।
সূত্রমতে, এই সেন্টারটি থেকে গত বছর ১১ লাখ ৯২ হাজার টাকার চারা বিক্রি হয়। এবার তা ৬ মাসে প্রায় ১০ লাখ টাকা হয়েছে, যা বছরে ১৫ লাখ টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে। সরবরাহ করতে পারলে আরো বেশি চারা বিক্রি হবে। বাড়বে উদ্যোক্তার ফল ফসল উৎপাদন। বাজারে খাদ্যের যোগান বাড়বে, দ্রব্যমূল্য কমবে। এছাড়া সেন্টারটির রাজস্ব আয় বাড়বে।
সেন্টারটি ঘুরে দেখা যায়, ফল, ফুল, ওষুধি ও সবজির চারার সমারোহ। ফলের মধ্যে রয়েছে আম, জাম, কাঁঠাল, লিচু, ড্রাগন, কুল ও কতবেল প্রভৃতি। গোলাপ, গন্ধরাজ, হাসনেহেনা, রজনীগন্ধা, গাঁদাসহ নানা রঙের ফুলের চারা। দারুচিনি, এলাচসহ বিভিন্ন প্রকার মসলার চারা করা হচ্ছে। কোথাও পুরুষ শ্রমিকরা ভার্মি কম্পোস্ট সার তৈরি করছেন। কোথাও বেডে বীজ বুনছেন। নারী শ্রমিকরা বেড থেকে নিয়ে প্যাকেটে রাখছেন। কেউ চারা ক্রেতার নিকট বিক্রি করছেন। মানে ভালো ও দামে সাশ্রয়ী হওয়ায় ক্রেতাদেরও ভিড় করতে দেখা যায়।
কৃষি উদ্যোক্তা মোবারক হোসেন বলেন, নগরীর মানুষ ছাদ কৃষিতে আগ্রহী হয়ে উঠেছে। বাণিজ্যিক নার্সারি থেকে সবাই চারা কেনার সামর্থ্য রাখেন না। এছাড়া মান নিয়েও বিভিন্ন নার্সারির সমস্যা রয়েছে। হর্টিকালচারের চারার মান ভালো, দামেও কম। আমরাও এখান থেকে চারা সংগ্রহ করি। তাই এখানে আয়তন বাড়িয়ে উৎপাদন বাড়ানো প্রয়োজন।
কুমিল্লা কৃষি ও কারিগরি কলেজের প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ আনিসুর রহমান বলেন, কৃষিতে কুমিল্লার ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। মানুষ দিন দিন উৎপাদনে আগ্রহী হচ্ছে। তাই ভালোমানের চারার জন্য এখনও হর্টিকালচার সেন্টারের ওপর নির্ভরশীল। হর্টিকালচার সেন্টারটি দেশের কল্যাণে আয়তন বাড়ানোর দাবি করছি।
কুমিল্লা হর্টিকালচার সেন্টারের উপ-পরিচালক মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এই সেন্টারটি দারুণ সম্ভাবনাময়। কুমিল্লার মানুষ উৎপাদনে আগ্রহী। আমরা তাদের চারার চাহিদা সব সময় পূরণ করতে পারি না। সেন্টারটির আয়তন বাড়লে আরো উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব।