বগুড়ায় ঘন কুয়াশায় নষ্ট হচ্ছে বোরো বীজতলা

0

বগুড়ায় ঘন কুয়াশা ও ঠান্ডায় নষ্ট হচ্ছে বোরো ধানের বীজতলা। গত কয়েক দিন সূর্যের আলো না থাকায় জেলার বিভিন্ন এলাকায় চারাগুলো হলুদ বর্ণ ধারণ করেছে। এতে করে বোরো মৌসুমে চারা সংকট দেখা দিতে পারে এমন আশঙ্খা করছেন স্থানীয় কৃষকরা। 

এদিকে কুয়াশার কবল থেকে বীজতলা রক্ষায় নানা পরামর্শ দিচ্ছে কৃষি বিভাগ। তাদের দাবি, পরামর্শ মানলে বীজতলা রক্ষা সহজ হবে। না হলে ধানের আবাদ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
জানা গেছে, বগুড়া জেলার ১২টি উপজেলায় বোরো মৌসুমে ধানের বীজতলা তৈরিতে ব্যস্ত কৃষকরা। বীজতলার জন্য জমি তৈরি এবং বীজ বপন করছেন তারা। অনেক এলাকায় বীজতলায় চারা বড় হতে শুরু করেছে। কৃষকরা ধানের চারা উৎপাদনে সঠিকভাবে পরিচর্যা এবং সেচ দিচ্ছেন। সাধারণত বোরো ধানের চারা রোপন শুরু হয় পৌষ মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে। আর বীজ বপনের ৩৫ থেকে ৪৫ দিনে চারা রোপণ করা যায়। কিন্তু হঠাৎ করে গত কয়েক দিন হলে বগুড়ায় শীতের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় জেলার বিভিন্ন এলাকায় ধানের চারা হলুদ বর্ণ ধারণ করেছে। শৈত্যপ্রবাহের কারণে এ সময়ে বোরোর চারা হলুদ ভাব হয়ে মারা যাওয়ার আশঙ্খা থাকে। এছাড়া শীতের প্রকোপ আর ঘন কুয়াশায় চারা পোড়া বা ঝলসানো রোগ দেখা দিতে পারে। এমন অবস্থায় স্থানীয় কৃষকরা দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। এছাড়া বোরো ধানের আবাদ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা করছেন তারা। 
কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, কুয়াশার সময় বীজতলার ওপরে স্বচ্ছ পলিথিনের ছাউনি দেওয়া কার্যকর পদ্ধতি। এতে তাপমাত্রা বাড়ে। এর সঙ্গে সন্ধ্যায় চারার গোড়া তিন থেকে পাঁচ সেন্টিমিটার পানিতে ডুবিয়ে রাখা ভালো। পানি হতে হবে গভীর নলক‚পের। এ পানি শীতের সময়েও গরম থাকে। সকালে পানি সরিয়ে ফের দিতে হবে। এতে চারা মারা যাওয়ার হার কম থাকে। চারা বাঁচাতে প্রয়োজনে বীজতলার প্রতি শতকে এমওপি ও টিএসপি সার দেওয়ারও পরামর্শ কৃষি বিভাগের। এর সঙ্গে জিপসাম সার দেওয়া ভালো। এতে চারার শীতসহিষুষ্ণতা বেড়ে যায়। আবর্জনা পোড়া সাদা শুকনা ছাই ও পচা গোবর মিশিয়ে শিশির শুকানোর পর দিলে বীজতলা ভালো থাকবে। 
গাবতলী উপজেলার জাতহলিদা গ্রামের কৃষক আজগর আলী বলেন, কুয়াশার কারণে বীজতলায় চারা বাড়ছে কম। আরও কয়েক দিন কুশায়া থাকলে বীজতলা পুরোটাই নষ্ট হয়ে যাবে। এটি আসলে প্রাকৃতিক সমস্যা। তবে কৃষি বিভাগের পারমর্শে বীজতলা রক্ষায় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। 
তিনি আরো বলেন, চারা পোড়া বা ঝলসানো রোগ দমনে ছত্রাকনাশক মিশিয়ে দুপুরের পর স্প্রে করার পরামর্শ দিচ্ছে কৃষি বিভাগ।
বগুড়া কৃষি সস্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, বোরো মৌসুমে জেলায় হাইব্রিড ও উফশী জাতের বীজ বপর করছেন কৃষরা। গত কয়েক দিনের ঘন কুয়াশায় কৃষকরা বীজতলা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। এ পরিস্থিতিতে কৃষি কর্মকর্তারা কৃষদের নানা পরামর্শ দিচ্ছেন। 

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মোঃ মতলুবর রহমান বলেন, টানা কুয়াশা থাকলে চারা বাড়ে কম। এমন সময়ে বীজতলা থেকে চারা তুলে রোপণ না করাই ভালো। তাপমাত্রা স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। বীজ বপনের ৩৫ থেকে ৪৫ দিনে চারা রোপণ করা যায়।
তিনি আরো বলেন, বোরো ধানের বীজতলা রক্ষায় কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। কয়েক দিন রোদ না থাকায় স্বাভাবিকভাবেই তাপমাত্রা কম। এর সঙ্গে কুয়াশা থাকায় বীজতলা ক্ষতির কবল থেকে রক্ষায় প্রচার-প্রচারনা চালানো হচ্ছে। 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here