সমলয় চাষে ৪ হাজার ট্রেতে ধানের চারা তৈরি

0

নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়নের কামারপুকুর ব্লকের পাখাতিপাড়া এলাকায় প্রথমবার সমলয় পদ্ধতিতে চাষাবাদ শুরু হচ্ছে। প্রস্তুতি হিসেবে জমিতে ট্রেতে তৈরি করা হচ্ছে বীজতলা। নিয়মিত সার, কীটনাশক স্প্রে চলছে। পরিচর্যার কাজও চলছে পুরোদমে। চারা বীজের বয়স ২৫ দিন হলেই মেশিনের সাহায্যে লাগানো হবে জমিতে।

এই সমলয় পদ্ধতিতে কৃষকরা প্রায় ১৫০ বিঘা জমিতে সবাই মিলে একসঙ্গে একই জাতের ধান একই সময়ে যন্ত্রের মাধ্যমে রোপণ করবেন। এ পদ্ধতিতে বীজতলা থেকে চারা তোলা, চারা রোপণ ও ধান কাটা সব প্রক্রিয়া যন্ত্রের সাহায্যে সব সময় সম্পাদন করা হবে।

সমলয়ে ধান আবাদ করতে হলে চারা তৈরি করতে হয় ট্রেতে। ট্রেতে চারা উৎপাদনে জমির অপচয় কম হয়। প্রচলিত পদ্ধতিতে বীজতলা তৈরি ও চারা রোপণ না করে প্লাস্টিকের ট্রেতে আধুনিক যন্ত্রের সাহায্যে লাগানো হয়েছে ধানের বীজ। এতে ২০ থেকে ২৫ দিনের মধ্যে চারা মাঠে লাগানোর উপযোগী হবে। বর্তমানে এই চারার বয়স চলছে ৬/৭ দিন। তীব্র শীত ও কুয়াশার কারণে ঢেকে রাখা হয়েছে বীজতলা।

কামারপুকুর ব্লকের সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান আশা বলেন, রাসায়নিক সারের ব্যবহার না করে সামান্য জৈব সারের ব্যবহারে খরচ কমে যাচ্ছে। প্লাস্টিকের ট্রেতে বীজতলা করায় ধানের চারা উত্তোলন, রোপণ, ফসল মাড়াই ও সবই একযোগে করা হবে। উচ্চ ফলনশীল হাইব্রিড জাতের ধানের বীজ ব্যবহার করায় ১৪০ থেকে ১৪৫ দিনের মধ্যে ফসল তোলা সম্ভব হবে।

ধান চাষে কৃষকদের শ্রমিক সংকট নিরসন, সময় অপচয়রোধ ও অতিরিক্ত খরচ রোধে সরকারিভাবে কৃষি প্রণোদনার আওতায় এবারে প্রথম ‌‘সমলয়’ চাষ পদ্ধতিতে বীজতলা ও ধানের চারা রোপণে ব্যবহার করা হচ্ছে আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি। ফলে কৃষিতে খুলছে এক নতুন দুয়ার।

ওই এলাকার কৃষক মানিক বলেন, আমার এক বিঘা (৬০ শতাংশ) জমিতে প্রায় চার হাজার ট্রেতে বীজতলা করা হয়েছে। এরপর স্থানীয় কৃষকের ১৫০ বিঘা জমিতে ধান রোপণ করা হবে মেশিনের সাহায্যে। এজন্য চারার ট্রেগুলো জমিতে সারিবদ্ধভাবে রাখা হয়। মাটি যেন শুকিয়ে না যায়, সেজন্য পানি স্প্রে করা হয়। শীত ও প্রচণ্ড কুয়াশায় চারার যেন ক্ষতি না হয়, সেজন্য পলিথিন দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। চারার উচ্চতা ৪ ইঞ্চি হলে বা চারার বয়স ২০ থেকে ২৫ দিন হলে, তা জমিতে রোপণ করার উপযোগী হবে।

সৈয়দপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ধীমান ভূষন বলেন, ট্রেতে চারা উৎপাদনে জমির অপচয়ও কম হয়। রাইস ট্রান্সপ্ল্যান্টার দিয়ে চারা একই গভীরতায় সমানভাবে লাগানো যায়। ফলে ফলনও বাড়ে। একসঙ্গে রোপণ করায় ধান একসঙ্গে পাকবে ও কৃষকরা একসঙ্গে ধান ঘরেও তুলতে পারবেন। এই উপজেলায় এ ধরনের সমলয় পদ্ধতি প্রথম। এতে কৃষকের প্রচুর আগ্রহ লক্ষ করা যাচ্ছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here