রাজশাহীতে গভীর নলকূপের অপারেটর নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) বিভিন্ন অফিসের সামনে বিক্ষোভ করেছেন কৃষকরা। এছাড়া বেশ কয়েকটি উপজেলা কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়।
বুধবার (১ জানুয়ারি) বেলা ১১টা থেকে কৃষকরা বিক্ষোভ করেন। এসময় উপজেলা কার্যালয়ে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পালিয়ে যান। দুপুরের পর সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে তালা খুলে দেওয়া হয়।
গভীর নলকূপে নতুন করে অপারেটর নিয়োগ বাতিল, সেচ ঘণ্টা কমানোর প্রতিবাদে উচ্চ আদালতে মামলা করেন এক কৃষক। আদালত ৬ জানুয়ারি পর্যন্ত অপারেটর নিয়োগে স্থগিতাদেশ দেন। আদালতের নির্দেশনা না মেনে বিএমডিএ কর্তৃপক্ষ অপারেটর নিয়োগ দিচ্ছে, এমন অভিযোগে জেলাজুড়ে বিক্ষোভ করেছেন কৃষকরা।
কৃষকরা জানান, বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) গভীর নলকূপ অপারেটর নিয়োগে নতুন নীতিমালা স্থগিত করে আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। বরেন্দ্র অঞ্চলের কৃষকদের পক্ষে তানোর উপজেলার কেএম জুয়েল হাইকোর্টে রিট পিটিশন করেন। ওই রিটের বিপরীতে স্থগিতাদেশ চেয়ে আপিল করে বিএমডিএ কর্তৃপক্ষ। আদালত শুনানি শেষে কৃষককের পক্ষে দেওয়া আদেশ স্থগিত করেন। এরপর আবারও জুয়েল আপিল করলে আগামী ৬ জানুয়ারি পর্যন্ত অপারেটর নিয়োগ সংক্রান্ত সব কার্যক্রম স্থগিত করে পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির দিন ধার্য করেন। কিন্তু বিএমডিএ কর্তৃপক্ষ সেই আদেশ অমান্য করে উপজেলাগুলোতে গভীর নলকূপের নতুন অপারেটর নিয়োগ দিচ্ছেন। এর প্রতিবাদে জেলার সবগুলো বিএমডিএ অফিসের সামনে বিক্ষোভ করেছেন কৃষকরা।
কৃষক কে এম জুয়েল জানান, বিএমডিএ’র নতুন নীতিমালা অনুযায়ী, অপারেটর হতে চাইলে আগের জামানত নারী ও পুরুষ উভয়ের জন্য ছিল সাড়ে ৭ হাজার টাকা। এবার বাড়িয়ে পুরুষের জন্য ২০ হাজার টাকা ও নারীদের জন্য ১৫ হাজার টাকা করা হয়েছে। নারী-পুরুষ উভয়কে গভীর নলকূপের ঘরে রাতেও থাকা বাধ্যতামূলক, অপারেটরের শিক্ষাগত যোগ্যতা কমপক্ষে এসএসসি পাস, ফরমের দাম ১০০ টাকার পরিবর্তে করা হয়েছে এক হাজার। কমানো হয়েছে নলকূপ চালানোর সময়। নতুন এই নীতিমালা কৃষকদের জন্য হয়রানিকর, অলাভজনক ও ফসল উৎপাদন ব্যহত হবে জানিয়ে হাইকোর্টে রিট করেন তিনি।
বিএমডিএ চেয়ারম্যান ড. আসাদুজ্জমানকে ফোন করা হলেও রিসিভ করেননি। ভয়েস ম্যাসেজ পাঠানো হলেও কোনো সাড়া মেলেনি।