রংপুরে এক মাসে ১৩ শকুন, এক ঈগল ও লক্ষ্মীপেচা উদ্ধার

0

শীতের সময় পুরো হিমালয় বরফে ঢেকে যায়। এ সময় ওই অঞ্চলে বসবাস করা প্রাণিদের খাদ্য সংকট দেখা দেয়। এরা খাদ্যের সন্ধানে এবং নিরাপদ পরিবেশের আশায় শত শত মাইল পাড়ি দিয়ে উড়ে আসে রংপুর বিভাগের বিভিন্ন জেলায়।

পর্যাপ্ত খাবার না পেয়ে একপর্যায়ে ক্লান্ত ও অসুস্থ হয়ে পড়ে। তখন এসব পাখিদের উদ্ধার করে পরিচর্যার মাধ্যমে সুস্থ করে আবার প্রকৃতিতে ছেড়ে দেওয়া হয়। এসব পাখির মধ্যে রয়েছে হিমালয় গৃধিনী শকুন, ঈগল ও লক্ষ্মীপেঁচা।

গত এক মাসে রংপুর বিভাগ থেকে ১৩টি হিমালয় গৃধিনী শকুন উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে রংপুরে ২টি, কুড়িগ্রামে ২টি, নীলফামারীতে ৪টি, গাইবান্ধায় ২টি ও লালমনিরহাট থেকে ৩টি বিশালাকৃতির এ শকুন উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া একটি ঈগল ও লক্ষ্মীপেঁচা উদ্ধার করা হয়।

সামাজিক বন বিভাগ ও ওয়াইল্ড লাইফ অ্যান্ড স্নেক রেসকিউ টিম ইন বাংলাদেশ সূত্রে জানা গেছে, ২৯ ডিসেম্বর গাইবান্ধা ফুলছড়ি উপজেলার উদাখালি ইউনিয়নের হরিপুর ও সদর উপজেলার বানিয়াজান এলাকা থেকে বিরল প্রজাতির দুটি হিমালয় গৃধিনী শকুন উদ্ধার করা হয়। একই দিনে দুপুরে সদর উপজেলার বানিয়াজান এলাকা থেকে আরেকটি হিমালয় গৃধিনী শকুন উদ্ধার করা হয়।

২৮ ডিসেম্বর কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ি উপজেলার গংগারহাট এলাকায় স্থানীয়রা একটি ক্ষেতের আইলে হিমালয় গৃধিনী শকুন পড়ে থাকতে দেখে। স্থানীয়রা শকুনটিকে দেখে উদ্ধার করে ওয়াইল্ড লাইফ অ্যান্ড স্নেক রেসকিউ টিমের সদস্যদের খবর দেয়। তারা শকুনটিকে উদ্ধার করে রংপুরে নিয়ে এসে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে দিনাজপুরের সিংগাড় ফরেস্টে পাঠিয়ে দেয়।

ওয়াইল্ড লাইফ অ্যান্ড স্নেক রেসকিউ টিম ইন বাংলাদেশের অর্থ সম্পাদক লিজেন আহমেদ প্রান্ত বলেন, প্রতি বছর হিমালয় থেকে খাবারের খোঁজে উত্তরাঞ্চলে আসে গৃধিনী শকুন। ক্ষুধার্ত এসব শকুন দীর্ঘ পথ উড়তে থাকায় তারা দুর্বল হয়ে পড়লে আকাশ থেকে মাটিতে পড়ে যায়। আমরা যে কয়েকটি গৃধিনী শকুন পেয়েছি, সবগুলো খুবই ক্লান্ত ও দুর্বল ছিল। আমরা প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে দেশের একমাত্র শকুন পরিচর্যা কেন্দ্র দিনাজপুরের সিংড়া ফরেস্টে তাদের পাঠিয়েছি।

রংপুর বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন বলেন, প্রতি বছর শীতের সময় গৃধিনী শকুন আমাদের উত্তরাঞ্চলে চলে আসে। শীত শেষ হলে তারা আবার হিমালয়ে ফিরে যায়। গত এক মাসে ১৩টি হিমালয় গৃধিনী শকুন, একটি ঈগল ও একটি লক্ষ্মীপেঁচা উদ্ধার করা হয়েছে। ঈগল পাখিটির পরিচর্যা শেষে মুক্ত আকাশে অবমুক্ত করা হয়েছে। লক্ষ্মীপেঁচার পরিচর্যা চলছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here