পশ্চিমবঙ্গে যদি বিজেপি ক্ষমতায় আসে, তবে বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিকে কারাগারে পাঠাবে। এই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ভারতের কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী।
মঙ্গলবার উত্তর ২৪ পরগনা জেলার সন্দেশখালিতে এক সভায় উপস্থিত থেকে মমতা ব্যানার্জিকে নিশানা করে এই হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, মুখ্যমন্ত্রী আপনি সন্দেশখালির ঘটনা ভুলে যেতে বলেছিলেন। কিন্তু এখানকার লোক তো ভুলবেই না, আর আমিও ভুলবো না। এ রাজ্যে বিজেপি সরকারে এলে (২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে) সন্দেশখালির ঘটনায় কমিশন বসবে। আর যে মহিলাদের আপনি জেল খাটিয়েছেন…ওই মহিলাদের মিথ্যে মামলায় জেল খাটানোর জন্য মমতা ব্যানার্জি আপনাকেও কারাগারে পাঠাবে বিজেপি।
মমতা ব্যানার্জিকে নিশানা করে তিনি বলেন, বদলা তো নেবই এবং সেটা সুদসহ নেব, আইন মেনে নেব, সংবিধানের মধ্যে থেকে নেব। (উনি) আমাকে কলকাতা থেকে নন্দীগ্রামে হারাতে গিয়েছিলেন। আমি তাকে হারিয়ে পাঠিয়ে দিয়েছি। ওনার নাম হলো কম্পার্টমেন্টাল চিফ মিনিস্টার। এবারে আপনারা তাকে সাবেক মুখ্যমন্ত্রী করবেন। হিন্দুরা এক হবেন তো?
শুভেন্দুর দাবি, মুখ্যমন্ত্রী আপনি ১ কোটি রুপি দিলেও কোনো হিন্দু পরিবার আপনাকে ভোট দেবে না।
রেশন দুর্নীতি কেলেঙ্কারির তদন্ত করতে ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে সন্দেশখালির তৎকালীন তৃণমূল ব্লক সভাপতি শেখ শাহজাহানের বাড়িতে যায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ‘এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট’ (ইডি) কর্মকর্তারা। কিন্তু শাহজাহানের সরবেরিয়ার বাড়িতে ঢোকার মুখে স্থানীয় গ্রামবাসীদের প্রতিরোধের মুখে পরে ইডির কর্মকর্তারা। ইডির কর্মকর্তাদের মারধরের পাশাপাশি তাদের জিনিসপত্র কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। আর এই আবহেই শাহজাহান ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ তোলেন সন্দেশখালির মহিলারা।
নারী নির্যাতন, জমি দখল, মাছ চাষের ভেড়ি দখলসহ শেখ শাহজাহানের বিভিন্ন অপকর্মের বিরুদ্ধে ঝাঁটা, লাঠি, বাঁশ নিয়ে আন্দোলনে নামে গ্রামের মহিলারা। কার্যত সন্দেশখালির ঘটনা নিয়ে গোটা রাজ্য উত্তাল হয়ে ওঠে। ওই ঘটনায় লোকসভা ভোটের আগে প্রচণ্ড অস্বস্তিতে পড়ে যায় ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেস। যদিও তারই মধ্যে গত এপ্রিল-মে মাসে অনুষ্ঠিত লোকসভার ভোটে বসিরহাট কেন্দ্রে জয়ী হয় তৃণমূল কংগ্রেস।
ওই ঘটনার প্রায় এক বছরের মাথায় গত সোমবার সন্দেশখালিতে সভা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। ওই সভা থেকে সন্দেশখালির প্রসঙ্গ টেনে মুখ্যমন্ত্রীকে বলতে শোনা যায় ‘…জানি এখানে রুপির অংকের খেলা হয়েছে। দেখলেন তো সবই ভাওতা। যা হয়েছে আমি তা ভুলে গেছি, মনে রাখতে চাই না। আমি চাই সন্দেশখালির মেয়েরা এক নম্বর স্থানে আসুক।’
২৪ ঘণ্টার মধ্যে মঙ্গলবার সেই সন্দেশখালিতে সভা করেন বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী। সন্দেশখালির ঘটনায় যারা আন্দোলন করেছিলেন, মমতা ব্যানার্জির পুলিশ যাদের গ্রেফতার করেছিল, তাদেরকেই মঞ্চে তুলে সংবর্ধিত করেন বিরোধী দলনেতা। এরপরই মমতার উদ্দেশ্যে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন শুভেন্দু।