ইসরায়েলে কোনও নির্মীয়মাণ ভবনে লোহালক্কড়ের শব্দের মাঝে হিন্দি কথোপকথন বিরল নয়। কিংবা অন্য কোনও ভারতীয় ভাষা। এক বছর আগেও চিত্রটা এমন ছিল না। যুদ্ধ পরিস্থিতি অনেক কিছু বদলে দিয়েছে ইসরায়েলে। যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি না হলে হয়ত এসব জায়গায় আরবি সংলাপই দস্তুর ছিল। থাকতেন ফিলিস্তিনি শ্রমিকেরা। কিন্তু এখন সেই জায়গায় ভারতীয় শ্রমিকদের ভিড়।
গত বছরের অক্টোবরে হামাস গোষ্ঠীর হামলার পর থেকে ছবিটা বদলে যায় ইসরায়েলে। ফিলিস্তিনি শ্রমিকদের ইসরায়েলে প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর প্রশাসন। নির্মাণক্ষেত্রে এখন শ্রমিকের সেই ঘাটতি পূরণ করছেন ভারতীয় শ্রমিকেরা। সংবাদ সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, গত এক বছরে ১৬ হাজার ভারতীয় শ্রমিক যোগ দিয়েছেন ইসরায়েলের নির্মাণকাজে।
এই ১৬ হাজার জনের মধ্যেই একজন হলেন রাজু নিশাদ। বর্তমানে মধ্য ইসরায়েলের বিয়ার ওয়াকভ শহরে কাজ করেন নির্মাণ শ্রমিক হিসাবে। বেশি টাকা উপার্জনের আশায় যুদ্ধের ভয় মুছে এখন দেশান্তরী। মাঝেমধ্যে আকাশপথে হামলার আগে সাইরেনের আওয়াজ শোনেন। তখন কোনও নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে দৌড়দৌড়ি করতে হয় তাঁকে। তবুও ভয়কে এক প্রকার জিতেই নিয়েছেন নিশাদ। এএফপিকে তিনি বলেন, ‘ভয় পাওয়ার কিছুই নেই। এক বার ওটা (সাইরেনের আওয়াজ) বন্ধ হয়ে গেলে, আমরা আবার কাজ শুরু করে দিই। আমি ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয় করতে চাই। পরিবারের জন্য কিছু করতে চাই।’
নিশাদের মতো এমন আরও অনেকেই রয়েছেন। সকলেরই প্রায় একই অবস্থা। কারণ ইসরায়েলে নির্মাণক্ষেত্রে কাজে অনেক বেশি উপার্জন করা যায়। এএফপি অনুসারে, নিজেদের দেশের তুলনায় প্রায় তিন গুণ বেশি উপার্জন করতে পারেন তারা।