ব্রিটেনে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের ধান ফলন করলেন সিলেটের আজম খান

0

ব্রিটেনে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের ধান ফলন করে তাক লাগিয়েছেন গার্ডেনার আজম খান। বিশ্ববিখ্যাত জিন বিজ্ঞানী ড. আবেদ চৌধুরীর তত্বাবধানে এই গবেষণা সফলতার মুখ দেখেছে। ড. আবেদ চৌধুরী ১০ মে ধান হাতে নিয়ে বলেছেন, এটা অভূতপূর্ব ও ঐতিহাসিক ঘটনা। এই ধান থেকে এখন লাখ লাখ টন ধান ফলানো সম্ভব হবে ব্রিটেনে। এটি ব্রিটেনের খাদ্য নিরাপত্তায় ভূমিকা রাখবে।

ব্যাকটনে ১০ মাস ধরে নিজের ব্যাক গার্ডেনে নানা উপায় ও পদ্ধতি অহলম্বন করে এই সফলতার মুখ দেখেন আজম খান। আজম খান বলেন, ২০২৩ সালের ৭ জুলাই সাংবাদিক আ স ম মাসুম ও আলাউর রহমান শাহীনের মাধ্যমে ড. আবেদ চৌধুরীর এই গবেষণায় যুক্ত হই। ড. আবেদ চৌধুরী আমাকে উনার উদ্ভাবিত বেশ কিছু ধানের বীজ দিয়ে যান। তবে গত বছর যেহেতু একেবারেই সামারের শেষ পর্যায়ে দিয়েছিলেন তাই তিনি আমাকে পরীক্ষামূলক ভাবে বীজ দেন। আমাদের উদ্দেশ্য ছিলো এই বছর এসে সামারের শুরু থেকেই বীজ বপনসহ সকল পরীক্ষা নিরীক্ষা করবো। কিন্তু গত বছরের রোপণ করা ধানের চারা থেকেই এ বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে ধান দেখা দেয়। আজম খান বলেন, এটা অবিশ্বাস্য যে, ১০ মাস ধরে ধান গাছ জীবিত থেকে সেটা থেকে ধান হওয়া। গত উইন্টারে তিনি চারাসহ টব এনে প্রথমে গ্রীন হাউজ ও পরে বাসার রান্না ঘরের জানালার কাছে রেখে দেন।

আজম খান বলেন, আবেদ স্যার ৭ জুলাই আমাকে দুই ধরনের ধান দিয়েছিলেন। কে ফোরটিন ও বিআর ফোরটি এইট ধানের বীজ দেয়ার পর আমি সেটা ভিজিয়ে রাখি। ৩/৪ দিনের মধ্যে ধানের মধ্যে অংকুর গজায়। এরপর সেটা মাটিতে রোপণ করলে সেটা থেকে ধানের চারা হয়। সেই চারা ২৭ জুলাই আমি রোপণ করি। যদিও এর ১ মাস পরই ঠাণ্ডা সিজন শুরু হয় কিন্তু আমার ধান অনেক দ্রুত বাড়তে থাকে। যেহেতু ঠাণ্ডা চলে আসে তাই আমি ধান গাছগুলো গ্রীন হাউজে রেখে দিই। কিছু রোদ উঠলে বাইরে নিই, ঠাণ্ডা পড়লে আবার গ্রীন হাউজে নেই। তবে ঠাণ্ডার কারণে ধানগাছ মরতে থাকে। প্রচণ্ড ঠাণ্ডার সময় আমি ধানগাছ নিয়ে যাই বাসার কিচেনের জানালায়। বাইরের আলো বাতাস আর কিচেনে আগুনের উষ্ণতার কারণে ধানগাছ আবারো বেড়ে উঠে। আশ্চর্যের বিষয় হলো একটি টবে রোপণ করা একটি চারা থেকে ৯০টি ধানের গোছা হয়েছে। গত ফেব্রুয়ারি থেকে ধান আসা শুরু হয়।

আজম খান বলেন, এই পুরো প্রক্রিয়াতে অস্টেলিয়াতে থাকা আবেদ স্যারের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রেখেছি। উনাকে প্রতিদিন ছবি দিয়েছি। ভিডিও কলে স্যারের পরামর্শ নিয়েছি।

ড. আবেদ চৌধুরী বলেন, ব্রিটেনে ধান হওয়া সিলেটের জন্য বিরাট গৌরবের। আমি সিলেটের হারিয়ে যাওয়া ধান ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছি। তিনি বলেন, ব্রিটেনে সিলেটের দুমাহি ধান (দুই মাসের মধ্যে ফলন হয়) হওয়ার অপূর্ব সম্ভাবনা রয়েছে। আমাদের উদ্দেশ্য ছিলো এই বছর পুরো সামার জুড়ে ধানের জন্য ব্রিটেনে পূর্ণাঙ্গ ধানের গবেষণা করবো। গত বছরে যেটা করেছি সেটা ছিলো আংশিক পরীক্ষামূলক। সেখানেই আমরা সফল হয়েছি। এই বছর লন্ডনে দুমাহি ধান ফলানো হবে। ভবিষতে লন্ডনে পঞ্চব্রীহি ধান ফসল করা সম্ভব হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here