‘চলচ্চিত্র শিল্পে সমস্যা ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত

0

বহু বছর আগেই চলচ্চিত্রশিল্প তার ঐতিহ্য থেকে বিচ্যুত।  নানা প্রতিকূলতায় খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে এই শিল্প। সমস্যার ঘেরাটোপে এই শিল্পের স্বর্ণালী দিনগুলো স্মৃতির পাতায় অতীত হয়ে গেছে। দর্শক ও সিনেমাহল সংকটের কারণে লোকসান গুনতে গুনতে এই শিল্প বর্তমানে ধ্বংশের দ্বারপ্রান্তে উপনীত হয়েছে। চলচ্চিত্রের নানা সংকট ও এর থেকে উত্তরণের উপায় নিয়ে ‘চলচ্চিত্রশিল্পে সমস্যা ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করেছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি (বাচসাস)।

বৃহস্পতিবার শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার সেমিনার কক্ষে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে চলচ্চিত্রের নানা সমস্যা থেকে উত্তরণের উপায় নিয়ে আলোচনা করেন প্রযোজক, পরিচালক, প্রদর্শক, শিল্পী, কলাকুশলী ও চলচ্চিত্র সাংবাদিকরা। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন সংসদ সদস্য ও চিত্রনায়ক ফেরদৌস আহমেদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন ভার্সেটাইল মিডিয়ার কর্নধার প্রযোজক আরশাদ আদনান। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাচসাস সদস্য ও বাংলাদেশ সম্পাদক ফোরামের আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম রতন।

প্রযোজক আরশাদ আদনান বলেন, এই সাবজেক্ট নিয়ে আমরাও কাজ করছিলাম। ধন্যবাদ জানাই বাচসাসকে সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য। বিষয়টি নিয়ে আমরা কাজ করবো। বাচসাসকে সঙ্গে নিয়েই সমস্যাগুলো সমাধানের চেষ্টা করবো। অনেক দিন ধরেই প্রযোজক সমিতি প্রশাসকের হাতে। প্রযোজক সমিতির সমস্যা যত দ্রুত সম্ভব সমাধান করবো। প্রযোজক বাঁচলে চলচ্চিত্র বাঁচবে। আশা করছি, অচিরেই এ সংসট নিরসন হবে।

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আওলাদ হোসেন উজ্জ্বল বলেন, হল মালিকরা দীর্ঘদিন ধরে চলচ্চিত্র শিল্প বাঁচাতে ভূমিকা রাখছেন। ঈদের সিনেমা ছাড়া বছরজুড়ে হল মালিকদের লোকসান গুনতে হয়। তারপরও তারা শিল্পটির সঙ্গে জড়িয়ে আছেন। সিনেমা হলগুলো আধুনিক করার চেষ্টা চলছে। ভালো সিনেমা নির্মাণ হলে পুনরায় এ শিল্প ঘুরে দাঁড়াবে। তার প্রমাণ ‘প্রিয়তমা’।

সেন্সর বোর্ড সদস্য ও চিত্রনায়িকা রোজিনা বলেন, চলচ্চিত্র শিল্পে সমস্যা ও উত্তরণের উপায় নিয়ে বার বার বৈঠক করতে হবে। সমস্যাগুলো বের করে সমাধানের চেষ্টা করতে হবে। সেন্সরে বোর্ডে দায়িত্বে থাকার কারণে অনেক সিনেমা দেখতে হয়। এমন কিছু সিনেমা আছে যেগুলো হলের উপযোগী না। সেগুলোও হলে মুক্তি পায়। এসব সিনেমা দর্শকদের হলবিমুখ করে। চলচ্চিত্রের উন্নয়নে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।

অনুষ্ঠানের বক্তারা অনুদানের বাজেট বৃদ্ধি ও সংখ্যা বাড়ানোর বিষয়ে সরকারের প্রতি দাবি জানালেও এর ঘোর বিরোধীতা করে প্রযোজক মো. ইকবাল বলেন, চলচ্চিত্রশিল্প ধ্বংসের জন্য দায়ী অনুদান প্রথা। এটা দ্রুত বন্ধ করা উচিত। কারণ, সঠিক লোক অনুদান পায় না। তাছাড়া অনুদানের টাকা দিয়ে অনেকেই গাড়ি কিনে। অনুদানের টাকা দিয়ে সিনেমা না বানিয়ে বিয়ে করেছে এমনও প্রমাণ রয়েছে। অনুদানের টাকা কখনো যথাযথ ব্যবহার হয় না অভিযোগ করে অনুদান বন্ধ করে দেওয়ার জোর দাবি জানান এই প্রযোজক।

এতে আরো বক্তৃতা করেন বাচসাস’এর সাবেক সভাপতি রেজানুর রহমান, শিল্পী সমিতির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আলেক জান্ডার বো, দপ্তর ও প্রচার সম্পাদক জ্যাকি আলমগীর, চিত্রনায়িকা শাহনূর, চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির মহাসচিব শাহীন সুমন, চিত্র সম্পাদক আবু মুসা দেবু, ডিরেক্টরস গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক এস এম কামরুজ্জামান সাগর, চিত্রনায়িকা অঞ্জনা রহমান, মুক্তি, ডি এ তায়েব, চলচ্চিত্র পরিচালক এস এ হক অলিক,  অরুণ চৌধুরী, সৈয়দ ওয়াহিদুজ্জামান ডায়মন্ড, গাজী মাহবুব, চয়নিকা চৌধুরী ও বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির উপদেষ্টা সুদীপ্ত দাস, উপদেষ্টা সদস্য ইউনুস রুবেল প্রমুখ।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন বাচসাস’র বর্তমান কমিটির নেতারা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here