নিছক চুরি ও ছিনতাইয়ের ঘটনায় চোরকে চিনে ফেলায় প্রকাশ্যে নিজ বাড়ির বেড রুমে দেলোয়ারা বেগম (৬০) নামে এক বৃদ্ধাকে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার মঞ্জুরুল ইসলাম রিজু হত্যার দায় স্বীকার করে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য জানিয়েছেন।
গ্রেফতার রিজুর দেওয়া তথ্য মতে, হত্যায় ব্যবহৃত বটি, লুণ্ঠিত স্বর্ণের কানের দুল ও নাকফুল ও নিহতের মোবাইল উদ্ধার করেছে নরসিংদী জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।
গ্রেফতার মঞ্জুরুল ইসলাম রিজু চিনিশপুর পশ্চিমপাড়া গ্রামের মাইনুদ্দিন মিয়ার ছেলে।
সংবাদ সম্মেলনে নরসিংদী পুলিশ সুপার জানান, গত ২৬ মার্চ নরসিংদীর পলাশে উপজেলার চরনগরদী গ্রামে নিজ বাড়িতে খুন হয় দেলোয়ারা বেগম (৬০)। খবর পেয়ে তৎক্ষণিক পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত শুরু করেন। এ ঘটনায় ৩১ মার্চ অজ্ঞাত আসামি করে পলাশ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। হত্যার রহস্য উদঘাটনে ডিবির অফিসার্স ইনচার্জকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
পুলিশ তথ্য-প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার করে হত্যার সাথে জড়িত সন্দেহে মঞ্জুরুল ইসলাম রিজুকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর সে হত্যার দায় স্বীকার করে এবং পুলিশের কাছে সকল তথ্য উপস্থাপন করেন।
পুলিশ সুপার আরও জানান, নিহত দোলোয়ারা বেগমের দুই ছেলে প্রবাসী। সে বাড়িতে একা বসবাস করতো। গ্রেফতার রিজুর ধারণা নিহত দেলোয়ারা বেগমের বাড়িতে অনেক টাকা-পয়সা থাকবে। এমন ধারণা থেকেই সে তার বাড়িতে যায়। পরে তার কানের দুল নিয়ে নেয়। তখন নিহত দেলোয়ারা তাকে চিনে ফেলেন। পরে রিজু তাকে গলা চেপে ধরেন। এসময় বৃদ্ধা জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। জ্ঞান ফেরার পর দেলোয়ারা তার ছেলেসহ অন্যান্যদের বলে দিতে পারে, এই ভয় থেকে তার ঘরে থাকা বটি দিয়ে দেলোয়ারাকে গলা কেটে হত্যা করে। পরে দোলোয়ারার শরীরে থাকা স্বর্ণের কানের দুল, নাকফুল ও মোবাইল ফোন নিয়ে সেখান থেকে পালিয়ে যায়।
জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খোকন চন্দ্র সরকার জানিয়েছেন, অভিযুক্ত মঞ্জুরুল ইসলাম রিজু তার আপন দাদিকে গলা কেটে হত্যা করে। সেই মামলায় সে জেলে ছিল। জেলে থাকাকালীন নিহতের ছেলে জাকিরের সাথে তার পরিচয় হয়। সেই সুবাদে তাদের বাড়ির সবকিছু রিজু জানতো। গত কয়েকদিন আগে সে জেল থেকে জামিন পায়। কিছু টাকা-পয়সা বা চুরির উদ্দেশ্যে সে তাদের বাড়িতে যায়। চুরি করার চেষ্টা করে। তখন নিহত দেলোয়ারা তাকে চিনে ফেলায় তাকে খুন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ক্রাইম অনির্বান চৌধুরী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) সামসুল আরিফিন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) কে এম শফিকুল ইমসলাম সোহাগ, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের অফিসার্স ইনর্চাজ খোকন চন্দ্র সরকারসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।