আবগারি দুর্নীতি মামলায় দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের গ্রেফতারের প্রতিবাদে দিল্লিতে মেগা সমাবেশ করেছে বিজেপি বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’।
রবিবার দিল্লির রামলীলা ময়দানে ‘গণতন্ত্র বাঁচাও’ শীর্ষক এই সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী, দলের সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে, কংগ্রেস সাংসদ সোনিয়া গান্ধী, প্রিয়াঙ্কা গান্ধী, কেজরিওয়ালের স্ত্রী সুনীতা কেজরিওয়াল, জম্মু-কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও পিডিপি নেত্রী মেহবুবা মুফতি, মহারাষ্ট্রের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে, উত্তরপ্রদেশের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদব, এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ার, শিবসেনা সাংসদ সঞ্জয় রাউত, আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব, জম্মু-কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও ন্যাশনাল কনফারেন্স দলের সভাপতি ফারুক আব্দুল্লাহ, পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ও আপ নেতা ভগবন্ত মান, দিল্লীর আপ নেতা সৌরভ ভরদ্বাজ, ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী চম্পাই সোরেন, রাজ্যটির সাবেক মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের স্ত্রী কল্পনা সোরেন।
‘গণতন্ত্র বাঁচাও’ শীর্ষক এই সমাবেশে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিজেপিকে নিশানা করে রাহুলের দাবি ‘বিজেপি বলছে এবার, ৪০০ পার। কিন্তু ম্যাচ ফিক্সিং ছাড়া এই ৪০০ আসন পাওয়া কোনোভাবেই সম্ভব নয়। রাহুলের অভিযোগ ‘ভারতে যে নির্বাচন হতে চলেছে, নরেন্দ্র মোদি সেখানে ম্যাচ ফিক্সিং করার চেষ্টা করছেন। লোকসভার ৪০০ আসনে জেতার যে স্লোগান ওরা দিচ্ছে, তাতে ইভিএম, ম্যাচ ফিক্সিং, সোশ্যাল মিডিয়া এবং গণমাধ্যমের উপর চাপ সৃষ্টি করা বা তাদেরকে কিনে নেওয়া ছাড়া ১৮০ আসনে জেতা কষ্টকর।’
ম্যাচ ফিক্সিং এর ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে রাহুল জানান ‘এখন আইপিএল ক্রিকেট টুর্নামেন্ট চলছে। আপনারা নিশ্চয়ই তা দেখছেন। যখন অন্যায় ভাবে আম্পেয়ারের উপর চাপ সৃষ্টি করে, প্লেয়ারদের কিনে নিয়ে এবং অধিনায়ককে হুমকি দিয়ে ম্যাচ জেতার জন্য চেষ্টা করা হয়- ক্রিকেটে সেটাকেই ম্যাচ ফিক্সিং বলে। ঠিক তেমনি ভারতে আসন্ন লোকসভা নির্বাচন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ইতিমধ্যে আম্পায়ার বেছে নিয়েছেন, ম্যাচ শুরুর আগে আমাদের দুই জন প্লেয়ারকে (অরবিন্দ কেজরিওয়াল, হেমন্ত সোরেন) গ্রেপ্তার করে কারাগারের ভিতরে ঢুকিয়ে দিয়েছেন।’
রাহুলের অভিমত ‘এই নির্বাচন অন্য আর পাঁচটা সাধারণ নির্বাচনের মতো নয়। এটা দেশ এবং গণতন্ত্রকে বাঁচানোর নির্বাচন। আপনারা যদি পুরো শক্তি নিয়ে ভোট না দেন, তাহলে তাদের (বিজেপি) ম্যাচ-ফিক্সিং সফল হয়ে যাবে।’
এই সমাবেশে কেজরিওয়ালের স্ত্রী সুনীতা কেজরিওয়াল বলেন ‘আপনাদের কেজরিওয়ালকে মোদি নরেন্দ্র মোদির সরকার গ্রেফতার করেছে। তারা দাবি করছে তাকে দিতে হবে। কিন্তু আমি বলব আপনাদের কেজরিওয়াল হলো একটা সিংহ। খুব বেশিদিন তাকে কারাগারে রাখা যাবে না। তিনি কয়েক কোটি মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছেন। যে বাহাদুরি ও সাহসের সাথে তিনি দেশের জন্য লড়াই করছেন, তাতে আমার মনে হয়েছে ও একজন স্বাধীনতা সংগ্রামী ছিল, যিনি দেশের জন্য লড়াই করতে করতে শহীদ হয়েছিলেন।’
বিজেপিকে নিশানা করে অখিলেশ যাদবের প্রশ্ন ‘আপনাদের যখন এতই আত্মবিশ্বাসে যে লোকসভা নির্বাচনে ৪০০ আসনে জিতবেন, তাহলে আম আদমি পার্টির (আপ) নেতাদের এত ভয় কেন? আপনারা অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে কারাগারে পাঠিয়েছেন, হেমন্ত সোরেনও কারাগারে।’ উপস্থিত সকলের উদ্দেশ্যে অখিলেশের বার্তা ‘আপনাদের মূল্যবান ভোটেই দেশ রক্ষা পাবে, সংবিধান রক্ষা পাবে। দেশের পিছিয়ে পড়া, দলিত, সংখ্যালঘু, অনগ্রসর শ্রেণির মানুষরা বাঁচবে।’