চিকিৎসা শেষে আগামীকাল সোমবার নিজ দেশ ভুটানে ফিরে যাচ্ছেন মেডিকেল ভিসায় বাংলাদেশে আসা প্রথম রোগী কারমা দেমা।
রবিবার সন্ধ্যায় এ তথ্য জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এটা দেশের স্বাস্থ্যখাতের ইতিহাসে বড় সাফল্য। এখন নেপাল, মালদ্বীপের মতো সার্ক ভুক্ত দেশগুলোতে আমরা স্বাস্থ্যসেবা ও প্রযুক্তি ছড়িয়ে দেব আমরা।’
ভুটানের ২৩ বছর বয়সী কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী কারমা দেমা। কয়েক বছর আগে নাকের গহ্বরে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি। ভারতের টাটা মেমোরিয়াল হসপিটালে চিকিৎসায় ক্যানসারমুক্ত হলেও রেডিওথেরাপিজনিত জটিলতায় নাক নষ্ট হয়ে যায় তার। পরে সেখানে দুই দফা অপারেশন করেও নাক পুনর্গঠনে ব্যর্থ হয় চিকিৎসকেরা।
গত ৯ জানুয়ারি শেখ হাসিনা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারিতে সার্জনদের তিনটি টিম যৌথভাবে প্রায় ৯ ঘণ্টা ধরে নাক রিকনস্ট্রাকশন সার্জারি করে কারমা দেমার। পুরো সার্জারির তত্ত্বাবধানে ছিলেন বার্ন ইনস্টিটিউটের তৎকালীন প্রধান সমন্বয়ক ও বর্তমান স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন।
২০২৩ সালের ২৫ সেপ্টেম্বরে বর্তমান স্বাস্থ্যমন্ত্রী এবং শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের তৎকালীন প্রধান সমন্বয়ক অধ্যাপক ডা. সামন্ত লাল সেনের নেতৃত্বে ১৪ সদস্যের একটি বিশেষজ্ঞ প্লাস্টিক সার্জারি টিম ভুটানে গিয়েছিল। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে দুই দেশের সরকারের উদ্যোগে ভুটানের রাজধানী থিম্পুতে সাত দিনব্যাপী প্লাস্টিক সার্জারি ক্যাম্প পরিচালিত হয়। ওই ক্যাম্পে বাংলাদেশের সার্জনরা ১৬টি সফল জটিল প্লাস্টিক সার্জারি করেন। সেই ক্যাম্পেই প্লাস্টিক সার্জারির মাধ্যমে নাক ঠিক করার জন্য কারমা দেমাকে নিয়ে আসা হয়েছিল।
ভুটানে কোনো প্লাস্টিক সার্জারি ডিপার্টমেন্ট নেই। তাই সেখানে কারমার সার্জারির ব্যবস্থা ছিল না। এজন্য বাংলাদেশের প্লাস্টিক সার্জনরা তাকে বাংলাদেশে আসতে বলে। পরে দুই দেশের সরকারের সহযোগিতায় কারমা দেমা ও তার এক ভাই গত ১৪ ডিসেম্বর বাংলাদেশে চিকিৎসার জন্য এসে বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি হয়।
কারমা দেমা পরিবারের একমাত্র মেয়ে ও তার দুই ভাই। তার বাবা ভুটানের একজন সেনা সদস্য ও বড় ভাই একটি রেস্টুরেন্টে কাজ করে। তাদের জন্য কারমার চিকিৎসা ব্যয় বহন করা কঠিন ছিল। তাই তারা ভুটান সরকারের সহায়তা চেয়েছিল। পরে ভুটান ও বাংলাদেশ সরকারের সহায়তায় কারমার চিকিৎসা সম্পন্ন হয়েছে। পরিবারকে কোনো অর্থ ব্যয় করতে হয়নি।